কম্পিউটার এর ইতিহাস।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটারের ভুমিকা রয়েছে অপরিসীম। আজকাল জীবনের প্রতেকটা ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। ‘কম্পিউট’ শব্দ থেকে কম্পিউটার এর উৎপত্তি। কম্পিউটারের এর অর্থ হল গননা করার বা গননাকারি যন্ত্র। কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক যন্ত্র।

আগের কম্পিউটার দিয়ে শুধু হিসাব-নিকাষের কাজ করা হত। কিন্তু বর্তমানে অত্যাধুনিক কম্পিউটার দিয়ে জটিল হিসাব-নিকাষের কাজ ছাড়াও অনেক ধরনের কাজ করা যায়। কম্পিউটার সেকেন্ডের মধ্যে কোটি কোটি হিসাব-নিকাষ করতে পারে। কম্পিউটার ন্যানো সেকেন্ডে কাজ করে। ন্যানে সেকেন্ড হচ্ছে এক সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের এক ভাগ।

কম্পিউটারের নির্দিষ্ট কোন আবিষ্কারক নেই। সুপ্রাচীন কাল থেকে এর বিকাশ হয়ে এসেছে। চার হাজার বছর পূর্বের চীনাদের তৈরী ‘অ্যাবাকাস’ নামক যন্ত্রটিই হচ্ছে প্রথম গননাকারী যন্ত্র। ‘অ্যাবাকাস’ যন্ত্রকে কম্পিউটারের র্পূব পুরুষ বলা হয়। বৃটিশ গনিতবিদ চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের রুপকার বলা হয়।

১৮৩৩ সালে ‘অ্যানালিটিকেল’ নামক একটি যন্ত্র তৈরী পরিকল্পনা করেন। কিন্তু বিভিন্ন কারনে তার এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। তার এই পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করেই আজকের আধুনিক কম্পিউটার আষ্বিকিত হয়েছে। তিনি বিশ্লেষণাত্মক ইঞ্জিন ডিজাইন করেন এবং এটি ছিল আজকের কম্পিউটারের মৌলিক কাঠামো ভিত্তিক নকশা।

সাধারণভাবে বলতে গেলে, কম্পিউটারকে তিনটি প্রজন্মের মধ্যে ভাগ করা যায়। প্রতিটি প্রজন্মের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থায়ী।

প্রথম প্রজন্ম:

১৯৩৭ থেকে ১৯৪৬ সাল হচ্ছে প্রথম প্রজন্ম। ১৯৩৭ সালে প্রথম ইলেকট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটারটি ডঃ জন ভি আাতানাফ এবং ক্লিফোর্ড বেরি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এটি এটানসঅফ-বেরি কম্পিউটার (এবিসি) নামে পরিচিত। ১৯৪৩ সালে ‘কলসাস’ নামক একটি ইলেকট্রনিক কম্পিউটার সামরিক বাহিনীর জন্য নির্মিত হয়েছিল।

১৯৪৬ সালে আরো উন্নয়ন ঘটিয়ে সাধারণ ডিজিটাল কম্পিউটার, ইলেক্ট্রনিক নুমিক্যাল ইন্টিগ্রেটার এবং কম্পিউটার (ENIAC) নির্মিত হয়েছিল। বলা হয় যে এই কম্পিউটারের ওজন ৩০ টন ছিল এবং ১৮০০০ ভ্যাকুয়াম টিউব ছিল। এই প্রজন্মের কম্পিউটার শুধুমাত্র একক কাজ করতে পারতো এবং এর কোন অপারেটিং সিস্টেম ছিল না।

দ্বিতীয় প্রজন্ম:

১৯৪৭ থেকে ১৯৬২ সাল হচ্ছে দ্বিতীয় প্রজন্ম। কম্পিউটারের এই প্রজন্মে ভ্যাকুয়াম টিউবগুলির পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয় যা কম্পিউটারকে আরো নির্ভরযোগ্য করে তোলে। ১৯৫১ সালে বাণিজ্যিক ভাবে ইউনিভার্সাল অটোমেটিক কম্পিউটার (UNIVAC 1) নামক কম্পিউটার বাজারে আনা হয়েছিল।

১৯৫৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন (আইবিএম) ৬৫০ এবং ৭০০ সিরিজ কম্পিউটার বাজারে আনে। কম্পিউটারের এই প্রজন্মের সময় কম্পিউটারের ১০০ টি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষার বিকাশ হয়েছিল, কম্পিউটারে মেমরি এবং অপারেটিং সিস্টেম ছিল। স্টোরেজ মিডিয়া যেমন টেপ এবং ডিস্ক ব্যবহার করা হতো এবং আউটপুট জন্য প্রিন্টার ছিল।

তৃতীয় প্রজন্ম:

১৯৬৩ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সময়কে তৃতীয় প্রজন্ম বলা হয়। ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের আবিষ্কর্তা আমাদের তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি নিয়ে আসে। এই আবিষ্কারের ফলে কম্পিউটারগুলি ছোট, শক্তিশালী আরো নির্ভরযোগ্য এবং একই সময়ে অনেকগুলি প্রোগ্রাম চালাতে সক্ষম হয়।

১৯৮০ সালে মাইক্রোসফ্ট ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম (এমএস-ডস) জন্মগ্রহণ করে এবং ১৯৮১ সালে আইবিএম হোম ও অফিসের ব্যবহারের জন্য ব্যক্তিগত কম্পিউটার (পিসি) চালু করেন। তার তিন বছর পর অ্যাপল আইকন চালিত ইন্টারফেস সহ ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার দিয়েছে এবং ৯০ এর দশকে মাইক্রোসফ্ট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম দিয়েছে।

  • কম্পিউটারের উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নতির ফলে আমরা দেখেছি যে জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা খুব দরকারী টুল যা সময় বাড়িয়ে নতুন উন্নয়নের অভিজ্ঞতা অব্যাহত রাখবে।