সাইকেল চালানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা।
আনন্দের জন্যই হোক কিংবা কাজের তাগিদে, সাইকেল চালানো শরীরের জন্য বেশ উপকারী। সাইকেল চালানো আপনাকে শুধুমাত্র বাহ্যিক ভাবেই ফিট রাখবেনা, আভ্যন্তরীণ ভাবেও আপনাকে সুস্থ রাখবে।
সুস্থ থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করে থাকি আমরা। তবে ভালো ব্যায়াম হচ্ছে সাইক্লিং। সাইক্লিংয়ে শারীরিক পরিশ্রম হয়।
ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়।
সাইকেল চালানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা:
নিচে সাইকেল চালানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনা করা হলো –
সুস্থতা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ:
শরীর অথবা মন যাই বলুন না কেন, ফিট থাকা বা ফিট হওয়ার জন্য সাইকেল চালানো নিঃসন্দেহে ভালো ব্যায়াম।
নিয়মিত সাইকেল চালালে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে৷ ডায়াবেটিস, কোলেস্টরেলের মাত্রা কমে গিয়ে বিপাক প্রক্রিয়া সচল থাকে৷
তাছাড়া পা এবং নিতম্বের পেশি শক্ত হয়। সাইক্লিংয়ের পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যকর পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস ওজন কমাতে সহযোগিতা করবে।
ব্রিটিশ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৩০ মিনিট সাইক্লিংয়ের ফলে একজন ব্যক্তির বছরে প্রায় পাঁচ কিলোগ্রাম চর্বি পুড়ে যায়।
রোগ এবং সাইক্লিং :
সাইকেল চালালে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় ও ডায়াবেটিস কমায়। নিয়মিত সাইক্লিংয়ের ফলে ফুসফুসসহ পুরো শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়।
ফলে, বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগ, যেমন, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি কমে যায়। এ ছাড়া সাইক্লিং হৃৎপেশিকে শক্তিশালী করে এবং রক্তের চর্বির মাত্রা হ্রাস করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গাড়িতে চড়া লোকজনের চেয়ে যারা নিয়মিত সাইক্লিং করে কর্মক্ষেত্রে যায় অথবা দৈনন্দিন দুই থেকে তিনবার সাইক্লিং করে, তাদের ফুসফুস দীর্ঘদিন পর্যন্ত সচল ও কার্যক্ষম থাকে।
মানসিক চাপ কমায় :
সাইকেল চালানোর ফলে মুক্ত বাতাস শুধু শরীরই ভালো রাখে না এর ফলে কমে মানসিক চাপ, খালি হয় মস্তিষ্ক ৷
মানসিক অসুস্থতা, যেমন: বিষণ্নতা, চাপ ও উদ্বেগ নিয়মিত সাইকেল চালানোর মাধ্যমে হ্রাস করা যেতে পারে।
সাইক্লিংয়ের আনন্দ ও মজা যেকাউকে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ থেকে বের হয়ে আসতে সাহায্য করে।
হাড়ের আঘাত, আর্থ্রাইটিস এবং সাইক্লিং :
হাড়ের আঘাত, আর্থ্রাইটিস এর জন্য সাইক্লিং করা খুব উপকারী। সাইক্লিং শারীরিক অঙ্গবিন্যাস, কার্যক্ষমতা ও ভারসাম্য উন্নয়ন করে এবং হাড়ের ফাটল ও ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
যদি কারও অস্টিওআর্থ্রাইটিস থাকে তবে দৈনন্দিন অনুশীলনের জন্য সাইক্লিং একটি আদর্শ মাধ্যম হতে পারে। কারণ, এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ–প্রত্যঙ্গে খুব কম চাপ পড়ে।
ক্যান্সার এবং সাইক্লিং:
গবেষকেরা ক্যানসারের কারণ হিসেবে নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন করার অনীহার কথা বলেছেন।
বিশেষ করে শারীরিক অনুশীলনের অভাবে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি রয়েছে বলে জানা গেছে বিভিন্ন গবেষণায়। দেখা গেছে, সাইক্লিংয়ের কারণে অন্ত্রের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
ডায়াবেটিস এবং সাইক্লিং :
বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে তা হয়ে থাকে বলে মনে করা হয়।
প্রতিদিন ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে সাইক্লিং করা লোকেরা ৪০ শতাংশের বেশি ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।