মেয়েদের এখনও যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

পুরুষশাসিত আমাদের এই সমাজে আমরা যতই মেয়েদের সমান অধিকারের কথা বলি না কেন, সমাজে এখনো মেয়েদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমরা মেয়েদের সমান অধিকার সমর্থন করলেও মেয়েদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বদলায়নি।

মেয়েদের প্রতি আমাদের ব্যবহার ও দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালে মেয়েরা যে সমস্যার সম্মুখীন হয় তা প্রতিকার করা সম্ভব নয়। চলুন মেয়েদের সমস্যা গুলি তুলে ধরা যাক:

সন্ধ্যার পরে একা একা বাইরে থাকা নিরাপদ নয়:

আমাদের এই আধুনিক সমাজে এখনো সন্ধ্যার পরে মেয়েদের একা একা বাইরে থাকা অনেকেই নিরাপদ মনে করেন না। রাত একটু বেশি হলে তো কথাই নেই পুরা পরিবারের টেনশনের একমাত্র কারণ হয় এটি। আমরা আমাদের সমাজকে এমন একটা স্থানে নিয়ে গিয়েছি যেখানে দিনের বেলাতেও স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে একা ছাড়তে সাহস হয় না।

মেয়েদের দিকে খারাপ দৃষ্টি বা শরীর ঘেঁষা:

রাস্তায় চলতে গিয়ে মেয়েদের দিকে খারাপ দৃষ্টি বা পাবলিক পরিবহনে মেয়েদের শরীর ঘেঁষা আমাদের সমাজে অহরহ ঘটছে। এই সমস্যা গুলোর সম্মুখীন প্রায় সব মেয়েদেরই হতে হয়। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালে এই সমস্যার সমাধান করা এত সহজ হবে না। সভ্য সমাজ গড়তে হলে আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন খুবই জরুরী।

অনেক চাকরিতে মেয়েদের শোপিস হিসাবে নিয়োগ:

আমাদের এই আধুনিক সমাজে অনেক চাকরিতে মেয়েদেরকে শোপিস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এটার পিছনে যে ব্যবসায়ীক দৃষ্টিকোণ কাজ করে তা হল “মেয়েদের দিয়ে সহজে গ্রাহককে কনভিন্স করানো সম্ভব যা ব্যবসা প্রসার করতে সাহায্য করে”। এই দৃষ্টিভঙ্গিও একটা সভ্য সমাজে না থাকায় ভালো।

মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে পরিবারের উদাসীনতা:

এখনও আমাদের সমাজে অনেক পরিবার আছে যারা মনে করে মেয়ে তো বিয়ে দিলে চলে যাবে এত শিক্ষার কি দরকার। একই পরিবারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে থাকলে দেখা যায় পরিবারটি ছেলের শিক্ষার ব্যাপারে অনেক বেশি যত্নবান।

সবকিছুতে মেয়েদের দোষ:

আধুনিক সমাজের মানুষগুলো কেন জানি একপেশে। তারা সব দোষ দেখেন মেয়েদের। কোন একটি মেয়ে যদি যৌন হয়রানির শিকার হয় তাহলে এই সমাজের অনেকেই তার পোশাকের দিকে আঙ্গুল তুলে। দ্বিতীয় যে কথাটি বলে “ওখানে কেন সে গেছে” ইত্যাদি। সব অপরাধ যেন হয়রানির শিকার মেয়েটির।

বিয়ে কেন করছ না বা হচ্ছে না:

মেয়ে মানেই যেন তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে হবে। বিয়ে করতে একটু দেরি করলে বা বিয়ে হতে একটু দেরি হলে আমাদের সমাজে জ্ঞান দেওয়ার মানুষের অভাব নাই। মেয়েদের বিয়ে হতে একটু দেরি হলে তাদেরকে যে কত কটু কথা শুনতে হয় এবং দুঃখ পেতে হয় তা তুলে ধরা কষ্টকর।