মশার উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়।

একটু শান্তি করে বসে টিভি দেখছেন বা বসে আছে কিংবা মশারি ছাড়া একটু শুয়ে আছেন মশা এসে পাগল করে দেবে। বিকাল বা সন্ধ্যার টাইমে তো কথাই নেই। মশার হাত থেকে বাঁচার জন্য জ্বালালেন মশার কয়েল। কিন্তু মশার কয়েলের এত বেশি তীব্র গন্ধ যে অনেক সময় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

আকারে অতি ক্ষুদ্র হলেও এর যন্ত্রণায় রাতের ঘুম হারাম অনেকেরই। বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি মশা বহন করে নানা ধরনে সংক্রামক রোগজীবাণু। যা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

মশার কামড়ে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদি নানা ধরনের রোগ হয়। এই মশার হাত থেকে বাঁচতে আপনি যদি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেন বা ঘরোয়া উপায়ে মশা দূর করতে পারেন তা হলে ভালো হয়। এতে কোন গন্ধ থাকবে না।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, মশা তাড়ানোর সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় কোণগুলো-

লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার:

লেবু কেটে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা গেথে দেবেন শুধুমাত্র লবঙ্গের মাথার দিকের অংশটা বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোণায় রেখে দিন। এতে করে মশা ঘরেই ঢুকবে না।

রসুনের স্প্রে করুন:

মশা তাড়াতে রসুনের স্প্রে খুবই কার্যকারী। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি বোতলে ভরে শরীরে স্প্রে করুন।

নিমের তেলের ব্যবহার:
নিমের তেলে মশা তাড়ানোর বিশেষ একটি গুণ রয়েছে। নিমের তেল ও নারকেল তেল এক সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। দেখবেন মশা আপনার ধারে কাছে ভিড়বে না।

পুদিনার ব্যবহার:

পুদিনা পাতার রয়েছে মশা দূরে রাখার ক্ষমতা। শুধু মশাই নয় পুদিনার গন্ধ অনেক ধরণের পোকামাকড়কে ঘর থেকে দূরে রাখে। পুদিনা পাতা ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানির ভাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। দেখবেন ঘরের সব মশা পালিয়েছে। চাইলে পুদিনার তেলও গায়ে মাখতে পারেন।

লেমন গ্রাস লাগান:

থাই লেমন গ্রাসে মশাদের যম। মশারা এর কাছেও ঘেঁষে না। আর লেমন গ্রাস দেখতেও কিন্তু মন্দ নয়।

ধুনোর সঙ্গে নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো:

প্রতিদিন নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়ো ধুনোর সঙ্গে ব্যবহার করলে মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

নিমপাতা পোড়ান:

কয়লা বা কাঠ-কয়লার আগুনে নিমপাতা পোড়ালে যে ধোঁয়া হবে তা মশা তাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর।

ফ্যান চালু রাখুন:

মশারা খুবই হালকা। অন্যদিকে একটি ফ্যানের স্পীড ঘন্টায় প্রায় দুই মাইল। মশাদের উড়বার গতিবেগের চাইতে ফ্যানের ঘুরবার গতি অনেক বেশি হওয়াতে সহজেই মশাদের ব্লেডের কাছে টেনে নেয়।

কর্পূরের ব্যবহার:

মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আপনি যেকোনো ফার্মেসিতে গিয়ে কর্পূর কিনে নিতে পারেন। পরিমান মতো কর্পূর একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। এই পানি ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করলে ঘরে পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।

সুগন্ধি ব্যবহার করুন:

মশারা সুগন্ধি থেকে দূরে থাকে। সুতরাং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শরীরে আতর, সুগন্ধি, কিংবা লোসন মেখে শুতে পারেন। নিশ্চিত করে বলা যায় এতে মশা সাধারণ থেকে অনেক কম দেখা যাবে।

জমানো জল থেকে দূরে থাকুন:

খেয়াল রাখুন যেন কোথাও জল জমে না থাকে। ঘরের আনাচে-কানাচে কিংবা উঠোনে জল জমে থাকলে সেখানে মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। তাই যেখানেই জল জমুক না কেন, তা সরিয়ে ফেলুন। মশার বংশবিস্তার রোধ করুন।

নারিকেলের আঁশ পোড়ান:

নারিকেলের আঁশের সাথে ধুপ দিয়ে ধরিয়ে দিন। এতে মশা দূর হয়। নারিকেলের আঁশ শুকিয়ে টুকরা করুন। একটি কাঠের পাত্রে রেখে জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠি ধরুন। ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই মশা দূর হবে।