ভাত খেয়ে কি ওজন নিয়ন্ত্রণ হয়।

আমরা অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। কিন্তু আমরা মনে করি ভাত না খেলেই আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ভাত খাওয়া বন্দ করতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু খাওয়ার পরিমান কমাতে হবে।

অতিরিক্ত ওজন কমানোর দিকে নজর দিতেই আমরা সবার আগে খাবার তালিকা থেকে ভাত বাদ দিয়ে থাকি। নিজের ইচ্ছামতো ডায়েট তৈরি করতে গিয়ে এমনটা করি। ভাতকে ফ্রি ফুড বলা হয়। কারণ এতে সোডিয়াম, কোলেস্টেরল, গ্লুটেন ইত্যাদি ক্ষতিকর উপাদান নেই। চর্বি খুব কম থাকে।

এখন দেখা যাচ্ছে, অনেকে ওজন কমানোর জন্য ভাত, দুধ, ডিম ইত্যাদি খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন বিশেষ করে অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা এটি বেশি করছেন। ভাতের পরিবর্তে জাংক বা ফাস্ট ফুডের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে অনেকে যা ভাতের তুলনায় আরও বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার যা চর্বি বাড়াতে পারে।

আমরা মনে করি ভাত খেলে চর্বি জমতে পারে এই ধারণা ঠিক নয়। আমরা যদি ভাত নিয়ম মেনে খাই, তাহলে শরীরে মেদ জমে না। ভাতের গ্লাইকোজেন গলে না সহজে বলেই ভাত এড়িয়ে যান অনেকে। নিয়ম মেনে ভাত খেলে সে ভয়ও দূর হয়। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হবে। সাদা চালের থেকে লাল চালে ফাইবার বেশি থাকে এবং ক্যালরি কম থাকে।

তাই চেষ্টা করুন লাল চালের ভাত খাওয়ার। এবং খাবারের অর্ধেকটা জুড়ে শাকসবজি আর সালাদ রাখতে হবে। যেসব চালে অ্যামাইলোজ বেশি থাকে (যেমন বাসমতী) তা ঝরঝরে হয়ে থাকে ও তাতে শর্করা কম থাকে এবং তাড়াতাড়ি বাড়ে। যে চালের ভাত আঠালো হয় তাতে অ্যামাইলোজ কম আর অ্যামাইলোপ্যাকটিন বেশি থাকে। তাতে শর্করা বাড়ে দ্রুত।

দেখা যায় ১ কাপ ভাতে ১৫০ ক্যালরি শক্তি থাকে। আর ১ কাপ পোলাও হতে ৩০০ ক্যালরি শক্তি থাকে এবং ১ কাপ বিরিয়ানি থেকে ৫০০ ক্যালরি শক্তি থাকে। ভাত খাওয়ার পরপরই ঘুমানো ঠিক নয়। খাওয়ার পর ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট একটু হাঁটাহাঁটি করুন যাতে বিপাক সঠিক ভাবে হতে পারে।

উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন ফাস্ট ফুড, চকলেট, আইসক্রিম, পরোটা, ব্রেড, ফ্রাইড রাইস, পোলাও, বিরিয়ানি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমান  ক্যালরি থাকে এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ওজন বাড়ার মূল কারন পরিমাণে বেশি খাবার খাওয়া, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং ক্যালরি খরচ না করা। ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারন হলো শারীরিক পরিশ্রম না করা। যদি ১০০ ক্যালরি বেশি খাবার খাওয়া হয় তাহলে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা উচিৎ।

তাহলে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমার ঝুঁকি কমে যাবে। না হলে বছরে চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। প্রতিদিন এমন কিছু নিয়ম মেনে চললে ভাত খেয়েও আমরা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো।