চন্দন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, ব্রণ ও ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করে।
হাজার হাজার বছর ধরে রূপচর্চায় চন্দন কাঠ ব্যবহার হয়ে আসছে। চন্দনের উপকারিতা ও গুনাগুণের কোন অংশে কমতি নেই। চন্দন একটি সুগন্ধি গাছের নাম।চন্দনের সংস্কৃত নাম হলো অনিন্দিতা।
প্রাচীন ভারতে চন্দনকে পুণ্য অর্জনের উপায় হিসেবে সম্মান করা হতো। এটি সবচাইতে বেশি পাওয়া যায় ভারতে এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশেও এই সুগন্ধি গাছ পাওয়া যায়।
চন্দনের আছে হাজারো গুনাগুন। রূপচর্চার জন্য চন্দনের খ্যাতি যুগ যুগ ধরে। প্রাচীন কালে রূপ চর্চার অন্যতম একটি উপাদান ছিলো চন্দন। বিভিন্ন রকম কসমেটিক্স ও সুগন্ধীতে চন্দন ব্যবহৃত হয়। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় চন্দন বেশ উপকারী।
এতে আছে অ্যান্টিব্যকটেরিয়াল উপাদান যা ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও চন্দন বহুল ব্যবহৃত হয়।
আসুন জেনে নেওয়া যাক, রূপচর্চায় চন্দনের উপকারিতা সম্পর্কে-
ব্রণ দূর করে:
নিয়মিত চন্দনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ব্রণের উপদ্রব কমে যায়। এক্ষেত্রে চন্দন কাঠ গুঁড়ো করে পানি দিয়ে অথবা চন্দন কাঠ ঘষে চন্দনের একটি পেস্ট বানাতে হয়। আজকাল বাজারেও চন্দন কাঠের গুঁড়ো কিনতে পাওয়া যায়।
দুই চা চামচ চন্দনের গুঁড়ো ও গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাক মুখে লাগিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। এবার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। স্বাভাবিক ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক খুবই উপকারী।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়:
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চন্দনের জুড়ি নেই। মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ বাটা ও চন্দনের গুঁড়ো একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রঙ উজ্জ্বল হবে।
রোদেপোড়া দাগ দূর করে:
রোদেপোড়া দাগ দূর করতে চন্দন বেশ উপকারী। শসার রস, চন্দনের গুঁড়ো, দই ও গোলাপ জল একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে রোদেপোড়া ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক রোদেপোড়া দাগ কমাবে এবং রোদেপোড়ার কারণে ত্বকের জ্বালা কমাবে।
বলিরেখা দূর করে:
বয়স পঁচিশের পরেই মুখে বলিরেখা পরা শুরু হয়। নিয়মিত চন্দন ব্যবহারে ত্বকে বলিরেখা কম পড়ে এবং ত্বক দীর্ঘ দিন সজীব থাকে। সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন চন্দন গুঁড়ো, গোলাপ জল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিজেই তফাৎটা অনুভব করতে পারবেন।
ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করে:
চন্দনের ফেসপ্যাক তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকরী। সেক্ষেত্রে, চন্দন গুঁড়োর সাথে টমেটোর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন করার পরে আপনার ত্বকের তৈলাক্ততা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের শুষ্কতা দূর করে:
চন্দন ত্বককে হালকা টানটান করে দেয়। তাই শুষ্ক ত্বকের জন্য চন্দনের সঙ্গে মধু ও দুধ ব্যবহার করা ভালো। দুধে আছে ল্যাকটোজেন ও মধুতে অ্যান্টিবায়োটিক। চন্দনের সঙ্গে এই দুটি উপাদান মিশিয়ে মুখ, হাত ও পায়ের ত্বকে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
আকর্ষণীয় নজরকাড়া ত্বকের জন্য নিয়মিত চন্দন ব্যবহারের জুড়ি নেই। তবে চন্দন কেনার আগে নিশ্চিত হয়ে কিনুন সেটা ভেজাল মুক্ত কিনা। আসল চন্দন কাঠের হালকা মিষ্টি ঘ্রাণ রয়েছে।