সিংহ যেভাবে হলো বনের রাজা।

এক জঙ্গলে বাস করত একটি সিংহ ও একটি বাঘ। দুজনেই মনে প্রানে চাইতো ঐ বনের রাজা হতে। একদিন সিংহ এক গ্রামের ভেতর দিয়ে হাটছিল, হঠাৎ তার মাথায় একটি প্ল্যান এলো।

আর কিছু না ভেবে সিংহ বাঘের কাছে গেল। এবং বাঘকে বলল, আমি গ্রামের মধ্য দিয়ে হাটতে হাটতে দেখলাম, এক কৃষক অনেক ভেড়া কেটেছে এবং সব মাংস ঘরের মেঝেতে রেখে দিয়েছে।

এই কথা শুনে বাঘের জিব দিয়ে লালা পড়তে শুরু করল। তখন লোভী বাঘ সিংহকে বলল, আমি সেই মাংস খেতে চললাম। তুই আমার সাথে চল, সেই বাড়িটা দেখিয়ে দিবি। সিংহ এবং বাঘ গ্রামের দিকে হাটা শুরু করল।

হাটতে হাটতে সিংহ ভাবতে লাগলো, আজ যে ভাবেই হোক এই বাঘটাকে কৃষকের হাতে মার খাওয়াবেই। ভাবতে ভাবতে তারা সেই কৃষকের বাড়ির সামনে এসে পৌছে গেল। তখন ঘরের জানালা খোলা পেয়ে তারা ভেতরে প্রবেশ করে।

মাংস দেখে বাঘ রাক্ষসের মত খেতে শুরু করল, সিংহও খেতে শুরু করল। বাঘ এদিক ওদিক না তাকিয়ে খেয়েই চলেছে। কিন্তু চালাক সিংহ একটু পর পর জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে বাইরে যাচ্ছে আবার ভেতরে আসছে। কারণ সে পরীক্ষা করছে মাংস খেয়ে তার পেট ফুলে যাচ্ছে কিনা।

যাতে করে কৃষক টের পেয়ে গেলে সহজেই জানালা দিয়ে পালাতে পারে। এরপর সিংহ বাঘকে বলল, চল, পালিয়ে যাই আর মাংস খেতে হবে না।

কৃষক দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।

বাঘ বলল, আমি তোর মত ভিতু না। আমি এই সব মাংস খেয়ে তারপরই যাব।

এদিকে মাংস খেতে খেতে বাঘের পেট ফুলে ঢোল হয়ে গেলো। হঠাৎ,থালা বাসনের একটা আওয়াজ হলো, এই শুনে বাড়ির কৃষক লাঠি হাতে দৌড়ে এলো। কেরে আমার ঘরে?

কৃষক কে দেখেই সিংহ এক লাফে জানালা দিয়ে পালিয়ে বনে চলে গেলো। এদিকে বাঘও জানালা দিয়ে পালানোর জন্য দৌড় দিলো। কিন্তু, বাঘের পেট অনেক ফুলে যাওয়ার কারণে, জানালায় বাঘের পেট আটকে গেল।

তখন কৃষক দৌড়ে এসে তার লাঠি দিয়ে বাঘকে পেটাতে শুরু করল, বেচারা বাঘ বেড় হওয়ার জন্য ছটফট করতে শুরু করল। কিন্তু তার পেট অনেক ফুলে যাওয়ার কারণে বাইরে বের হতে বাঘটি ব্যর্থ হলো এবং কৃষকের লাঠির আঘাতে বাঘটি ছটফট করতে করতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল।

এদিকে বাঘের মৃত্যুতে বনের রাজা হিসেবে সিংহ সিংহাসনে বসলো। এভাবেই সিংহ হয়ে গেল বনের রাজা।