করমচা খাবারে রুচি বাড়ায়, চোখের জন্য ভালো ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী।
একটি ফলের অর্ধেকটা লাল আর অর্ধেকটা সবুজ। যারা চেনেন তারা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন আমি কিসের কথা বলছি। হ্যাঁ করমচা। করমচা গাছে পেকে বৃষ্টিতে ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে আছে। শুধু পেড়ে খাওয়ার অপেক্ষা। হুম করমচা বর্ষাকালের ফল।
ছড়ার সেই লাইনটা মনে পড়ে যাচ্ছে – আয় বৃষ্টি ঝেপে, ধান দেবো মেপে, লেবুর পাতায় করমচা যা বৃষ্টি ঝরে যা। করমচা টক স্বাদের ছোট আকৃতির একটি ফল। ইংরেজিতে একে Bengal currant বা Christ’s thorn karonda, natal plum বলা হয়। করমচার বৈজ্ঞানিক নাম: Carissa carandas.
করমচাতে কোনো ফ্যাট বা কোলেস্টেরল নেই। তাই ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য এ ফলটি খুব উপকারী। করমচা ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
করমচা খাওয়ার উপকারিতা
করমচা অবহেলিত হওয়ায় দিনে দিনে এই ফলটি আমাদের সকলের কাছে অপরিচিত হয়ে যাচ্ছে। অবহেলিত হলেও এর পুষ্টিগুণ কিন্তু মোটেও অবহেলা করার মতো না। নিচে আর উপকারিতা আলোচনা করা হলো –
হজম উন্নতি করে:
করমচাতে দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। দ্রবণীয় ফাইবার হজম সিস্টেমের কার্যকারিতা উন্নত করে অন্ত্রের গতিবিধি ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
জ্বরের জন্য ভালো:
এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “সি” থাকায় বহু দিন ধরে জ্বরের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভিটামিন “সি” অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে তাই করমচা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে জ্বর কমাতে সহায়তা করে।
খাবারে রুচি বাড়ায়:
খাবারের অরুচির সমস্যা থাকলে বর্ষাকালীন এই ফলটি খেতে পারেন। ভিটামিন “সি”-তে ভরপুর করমচা খাবারে রুচি বাড়ায়। পাশাপাশি স্কাভি, দাঁত ও মাঢ়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
চোখের জন্য ভালো:
ভিটামিন “সি” এর পাশাপাশি করমচাতে ভিটামিন “এ” আছে যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এছাড়া এতে থাকা বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দৃষ্টিশক্তিকে ভালো রাখতে অবদান রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে:
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই ভিটামিন “সি”- এর জুড়ি মেলা ভার। রোগ প্রতিরোধী ব্যাবস্থা শক্তিশালী হলে সহজে রোগবালাই শরীরের ধারে ঘেঁষতে পারে না। তাই বর্ষার সময়ে এই টক ফলটি কেউ মিস করবেন না।
সতর্কতা
আপনি যদি জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হন বা অন্য কোনো কারণে রেগুলার কোনো মেডিকেল কোর্স-এর মধ্য দিয়ে যান তাহলে করমচা খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
উৎস: netmeds, wikipedia