বজ্রপাত বা বাজ পড়া থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়।

প্রচন্ড গরমে এক পসলা বৃষ্টি শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়ে যায়। তবে এই বৃষ্টির সাথে যদি হয় বজ্রপাত তাহলে সেটা বিপর্যয়ের কারণ হয়ে ওঠে।

প্রতিবছর গ্রীষ্মের শুরুতে কালবৈশাখী এবং আশ্বিন-কার্তিকে ঝড়-বৃষ্টি হয়। আর কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি মানেই বজ্রপাত।

প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ মারা যায় বজ্রপাতে। এক হিসাবে জানা গেছে যে, বাংলাদেশে বছরে প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় একজন (০.৯) মারা যায়।

বছরে গড়ে ১৫০ বেশি প্রাণহানি ঘটে বজ্রপাতে।

উন্নত বিশ্বে বজ্রপাত একটি সাধারণ বিষয় হলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে, বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি।

পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশেই বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। খোলা জায়গা, জনবহুল বসতি যেকোনো স্থানে হতে পারে এটি।

বজ্র পাতের সময় যেসব সাবধানতা জরুরী

কবে কোথায় বজ্রপাত হবে এটা বলা অসম্ভব। কিন্তু আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখলে বা বজ্রপাত হচ্ছে এমন সময় কয়েকটি সাধাণতার মধ্যেদিয়ে বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচতে পারি। নিচে কয়েকটি জরুরী সাধাণতা দেওয়া হল –

গাছের নিচে, খাম্বার নিচে বা খোলা মাঠে দাঁড়ানো যাবে না।
হাতে কোনো ধাতব বস্তূ (যেমনঃ তার, চাবি, কাস্তে, কোঁদাল, সিঁড়ির রেলিং, রিমোট ইত্যাদি) থাকলে সেটা থেকে দূরে থাকতে হবে।
টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাষ পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।

মাটি বা ছনের ঘরকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করতে হলে ঘরের উপর দিয়ে একটি রড টেনে তার সঙ্গে দুই দিকে দু’টি রড খুটি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

এতে বজ্রপাত ঘরকে আক্রান্ত না করে রডের ভেতর দিয়ে মাটিতে চলে যাবে।

বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন।

যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তবে গাড়ি কোনো পাকা ছাউনির নীচে নিয়ে যান।

বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক।

যদি একান্ত বেরোতেই হয় তবে পা ঢাকা জুতো পড়ে বের হোন। রাবারের গাম্বুট এ ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করবে।

দুহাত দিয়ে কান চেপে বসে পড়তে হবে।
জানালা থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।
বজ্রপাতের সময় নদী বা জলাশয় থেকে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে এবং জলাশয় বা জলাবদ্ধ স্থান থেকে দূরে সরে যেতে হবে।

নৌকায় অবস্থান করলে দ্রুত ছইয়ের নিচে অবস্থান নিতে হবে।

যেকোনো বিপদ পড়ে হুড়া হুড়ি, দৌড়া দৌড়ি না করে মাথা ঠান্ডা রাখা। এবং আপনি যে স্থানে আছেন সেই স্থানের সব থেকে নিরাপদ জায়গাটি বেছে নেওয়া।

কবে কোথায় বজ্র পাত হবে এটা বলা অসম্ভব। কিন্তু আমরা যদি একটু সতর্ক হয় তাহলে বজ্র পাতের হাত থেকে বাঁচতে পারি।