সংক্রামক রোগ কাকে বলে? সংক্রামক রোগের প্রকারভেদ সমূহ।
সংক্রামক রোগ কাকে বলে?
যেসব রোগ একজন থেকে আর একজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে তাকে সংক্রামক রোগ বলে। এই ছড়িয়ে পড়া শুধু মানুষ থেকে মানুষ নয়, পশু পাখি থেকে মানুষে, পশু পাখি থেকে পশু পাখির মাঝে, কিংবা মানুষ থেকে পশু পাখির মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অন্যভাবে বললে বলা যায়, বিভিন্ন জীবাণু যেমন– ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ইত্যাদি শরীরে প্রবেশের ফলে সৃষ্ট রোগই হলো সংক্রামক রোগ। এ সকল রোগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।
হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে আর একজন সংক্রমিত হয়। এছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস যেমনঃ গ্লাস, প্লেট, চেয়ার, টেবিল, জামাকাপড়, টয়লেট ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমেও যে কেউ জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
সংক্রামক রোগের প্রকারভেদ সমূহ:
১. ছোঁয়াছে রোগ
২. পানিবাহিত রোগ
৩. বায়ুবাহিত রোগ
৪. প্রাণী ও পোকামাকড় বাহিত সংক্রামক রোগ
ছোঁয়াছে রোগ:
রোগাক্রান্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শে যে সকল রোগ সংক্রমন হয় তাই ছোঁয়াছে রোগ। যেমনঃ ফ্লু, ইবোল, হাম ইত্যাদি। এইডস একটি ভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ, যা এইচআইভি ভাইরাসের মাধ্যমে ছরায়। যদিও আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করলে বা তার ব্যবহৃত কোনো জিনিস ব্যবহার করলে কেউ এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হবে না।
পানিবাহিত রোগ:
অপরিশুদ্ধ পানি পান করার মাধ্যমে অথবা সেই পানি রন্ধন ইত্যাদি কার্যে ব্যবহার করার ফলে যে ধরনের ব্যাধি সংক্রামিত হয়ে থাকে তাকেই বলা হয় পানিবাহিত রোগ বা জলবাহিত রোগ। অনেক ধরনের পানিবাহিত রোগ রয়েছে। যেমনঃ ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ও টাইফয়েড ইত্যাদি।
বায়ুবাহিত রোগ:
হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় বায়ুতে জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে যে রোগ ছড়ায় তাকে বায়ুবাহিত রোগ বলে। যেমনঃ যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিস, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস, মাম্পস, রুবেলা, বসন্ত, হাম, করোনা ভাইরাস রোগ ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ।
প্রাণী ও পোকামাকড় বাহিত সংক্রামক রোগ:
বিভিন্ন প্রাণী এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে কিছু জীবাণুবাহিত রোগ ছড়ায়, সে সকল রোগকে প্রাণী ও পোকামাকড় বাহিত সংক্রামক রোগ বলে। যেমনঃ কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। মশার কামড়ের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া, পীতজ্বর এবং ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়।
- রােগাক্রান্ত হলে বেশি বেশি বিশ্রাম নিতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। এগুলাে রোগীকে সেরে উঠতে সাহায্য করে।