ফুসফুস ক্যান্সারের কারণ ও লক্ষণ।
ফুসফুস ক্যান্সার (lung cancer) বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ফুসফুসে ক্যান্সার একটি মারাত্মক ব্যাধি। এটি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা বেশ কঠিন। কারণ অন্যান্য ক্যান্সার শনাক্তকরণে যে স্ক্রিনিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তা ফুসফুসে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ততটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে না।
ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান কারণ কি?
ধূমপানের ফলে বেশিরভাগ ফুসফুস ক্যান্সারের কারণ হয়ে থাকে। প্রতিদিন যারা দুই থেকে তিন প্যাকেট সিগারেট সেবন করেন এবং ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে সেবন করেন, এদের মধ্যে ৯০ ভাগ লোকের ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
ধূমপান ফুসফুসের কোষগুলির ক্ষতি করে ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি করে। আপনি যখন সিগারেটের ধোঁয়ায় শ্বাস নেন, যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ (carcinogens) দ্বারা পূর্ণ, ফুসফুসের টিস্যুতে পরিবর্তন তখনই শুরু হয়।
ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি
আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক, ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি-
ক্রমাগত কাশি:
ক্রমাগত কাশি ফুসফুস ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষণ। যদি কারো ক্রমাগত ২-৩ সপ্তাহ কাশি চলতে থাকে, তাহলে বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কাশির সাথে রক্ত, এমনকি অল্প পরিমাণে নিঃশ্বাসের দুর্বলতা ফুসফুস ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণ।
সর্দি বা শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণের সাথে জড়িত কাশি এক সপ্তাহ বা তার মধ্যে চলে যাবে। অবিরাম কাশি ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
শরীরে ব্যথা:
ফুসফুস ক্যান্সার বুকে, কাঁধে বা পিঠে ব্যথা তৈরি করতে পারে। যদি আপনার বুকে কোন ধরণের ব্যাথা লক্ষ্য করেন তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। হাড়ে ছড়িয়ে পড়া ফুসফুসের ক্যান্সার আপনার পিঠে বা আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা তৈরি করতে পারে। মাথাব্যথা এমন একটি লক্ষণ হতে পারে যে ফুসফুসের ক্যান্সার মস্তিস্কে মেটাস্টেসাইজড ছড়িয়ে পড়েছে।
বুকে ব্যথা:
দীর্ঘনিঃশ্বাস নেওয়ার সময়, কফ ফেলার সময় এবং হাসার সময়ও যদি বুকে ব্যথা অনুভূত হয়, তাহলে তা ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
নিঃশ্বাসে স্বল্পতা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিবর্তন:
অল্পতেই শ্বাস ফুরিয়ে যাওয়া ও নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়াটা ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ। নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় যদি শিস বাজানোর মতো শব্দ হয়, তাহলে আশঙ্কা রয়েছে যে ফুসফুস ক্যান্সার বাসা বাঁধছে। এরকম হতে থাকলে বিষয়টি মোটেও হালকা ভাবে নেবেন না।
হটাৎ ওজন হ্রাস:
হটাৎ করে ১০ কেজি বা তারও বেশি ওজন হ্রাস ফুসফুসের ক্যান্সার বা অন্য ধরণের ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। ওজন হ্রাসের ফলে ক্যান্সারের কোষগুলি শক্তি ব্যবহার করে।
দুর্বলতা:
কোনওভাবেই শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না? এমনটাও হতে পারে আপনার এই দুর্বলতা ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ। এক্ষেত্রে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন এবং দুর্বলতার সঠিক কারণটি খুঁজে বের করুন।
মাথাব্যথা:
মাথাব্যথাও ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ। আপনি যদি প্রতিদিন মাথাব্যথায় কষ্ট করেন, তাহলে আশঙ্কা রয়েছে ফুসফুস ক্যান্সার শরীরে বাসা বাধছে। এক্ষেত্রে ব্যথার ওষুধের বদলে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাই উত্তম।