সাঁতার কাটার উপকারিতা।
সাঁতার অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। মজা করার পাশাপাশি সাঁতার কাটা ফিট ও সুস্থ্য থাকার এক দুর্দান্ত উপায়।
বিশেষজ্ঞরা প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যয়াম করার পরামর্শ দেন। প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যয়াম আমরা সাঁতার কাটার মাধ্যমে করতে পারি।
আমাদের শরীর এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের জন্য সাঁতার খুবই কার্যকরী। এছাড়া প্রতিদিন এক ঘন্টা সাঁতার হাড় এবং জয়েন্টগুলির ব্যথা ও ক্যালোরি বার্ন করতে সহায়তা করে।
তাই সুস্থ্য থাকতে চাইলে প্রতিদিন আমাদের ব্যায়াম বা সাঁতার কাটা প্রয়োজন। এমনকি শুধু পানিতে ভেসে থাকাও শরীরের জন্য ভালো।
সাঁতারের উপকারিতা
নিচে সাঁতার কাটার উপকারিতা সম্পর্কে দেওয়া হলো –
পুরো শরীরের কাজ করে:
সাঁতারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল পুরো শরীর, মাথা থেকে পা পর্যন্ত ব্যয়াম হয়ে যায়। সাঁতার দেহের উপর চাপ না দিয়ে আপনার হার্টের হার বাড়ায়, শক্তি তৈরি করে, ধৈর্য বাড়ায়। সাঁতার কাটার ব্যায়াম করা আপনার শরীরকে আরও কঠোর পরিশ্রম করে তোলে।
দেহের জন্য ভালো:
সাঁতার হার্ট এবং ফুসফুসকে শক্তিশালী করে মৃত্যুর ঝুঁকিও হ্রাস করতে পারে। বসে থাকা ব্যক্তিদের সাথে সাঁতারুদের তুলনা করে দেখা গেছে বসে থাকা ব্যক্তিদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।
অন্য কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, সাঁতার রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে। এছাড়া কোমড় ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা- এসব ক্ষেত্রেও সাঁতার কাজ করে।
হাঁপানি রোগীদের জন্য ভাল:
হাঁপানি রোগীদের জন্য সাঁতার কাটা দুর্দান্ত ক্রিয়াকলাপ হিসাবে পরিচিত।
কেবল তা-ই নয়, খেলাধুলার সাথে সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামগুলি যেমন আপনার শ্বাসকে ধরে রাখে তেমন ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
তবে হাঁপানি রোগীদের সাঁতার কাটার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ক্যালোরি বার্ন হয়:
ক্যালোরি বার্ন করতে সাঁতার একটি কার্যকর উপায়। একটি ১৬০ পাউন্ড ব্যক্তি এক ঘন্টা সাঁতার কাটার মাধ্যমে ৪২৩ ক্যালোরি বার্ন করতে পারে।
তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিন ৩০ মিনিট ধরে সাঁতার কাটার। পাশাপাশি সাঁতার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়।
ঘুম উন্নতি করে:
অনিদ্রাজনিত প্রাপ্ত বয়স্কদের একটি অধ্যয়নে অংশগ্রহনকারীরা, নিয়মিত ব্যয়াম করার ফলে তাদের জীবন যাত্রার মান এবং ঘুম উভয়ই উন্নত হয়েছিল।
আর এই ব্যয়াম হিসাবে আপনারা সাঁতার কাটা বেছে নিতে পারেন। সাঁতারের মাধ্যমে আমাদের সারা শরীরের ব্যয়াম হয়।
প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট সাঁতার বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুমের মান উন্নতি করতে সাহায্য করবে।
মানসিক চাপ কমায়:
সাঁতার কাটা মজার বিষয়। বিশেষ করে যদি সাঁতার কাটার সময় সঙ্গী থাকে। মনে হয় সাঁতার কাটাতে কাটতে মনের সব দুঃখ কষ্ট ধুয়ে বেরিয়ে যায়।
১০১ জনের মধ্যে ৪৪ জন মানসিক চাপ অনুভব করেছেন। দেখা গেছে সাঁতার কাটার পর তাদের মানসিক অনুভূত কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।
গর্ভাবস্থায় ভালো:
প্রাণীদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, একজন মা ইঁদুরের সাঁতার কাটার ফলে তার গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটতে দেখা গেছে।
এমনকি শিশুদের হাইপোক্সিয়া-ইস্কেমিয়া নামক নিউরোলজিকাল ইস্যু থেকে বাচ্চাদের রক্ষা করতে পারে তবে আরও গবেষণা করা দরকার।
গর্ভবতী মহিলাদের যারা গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে মধ্য গর্ভাবস্থা পর্যন্ত সাঁতার কাটেন তাদের প্রসবকালীন শ্রম এবং জন্মগত ত্রুটিগুলির ঝুঁকি কম থাকে।
তবে অবশ্যই সাবধানে পুকুর পাড়ে যেতে হবে বা সাঁতার কাটতে হবে। এই সময় সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি।
বাচ্চাদের জন্যও দুর্দান্ত:
বাচ্চাদের যত তাড়াতাড়ি সাঁতার শিখবেন ততই ভালো। বাচ্চাদের প্রতিদিন ন্যূনতম ৬০ মিনিট সাঁতার কাটা দরকার।
সাঁতার একটি মজাদার বিষয় যা কাজ করার মতো মনে হয় না। সাঁতার কাটার ফলে বাচ্চাদের হাত পা নড়াচড়া হয় এতে করে ওদের হাত পা শক্ত হবে।
সতর্কতা
- হাঁপানির কিংবা সাইনাসের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর সাঁতার কাটবেন।
- গর্ভবতী নারীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন অবশ্যই।