রক্ত দেওয়ার আগে রক্তদাতার করণীয় কি?

রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। পরিবারের সদস্য বা বন্ধু-বান্ধব কারো রক্তের প্রয়োজন হলে আমরা অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই। তবে মনে রাখবেন শুধু রক্ত দিলেই চলবে না। রক্ত দেয়ার আগে ও পরে রক্তদাতাকে বেশ কিছু ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

একজন রোগীর সুস্থতার জন্য মানসম্পন্ন রক্তসঞ্চালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রক্ত কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা যায়না।

রক্তের প্রয়োজন হলে রক্তদাতার কাছ থেকেই তা সংগ্রহ করতে হয়। এক ব্যাগ রক্ত থেকে বের করে আনা যায় কয়েকটি উপাদান। আর তাই বলা হয়, এক ব্যাগ রক্ত বাঁচাতে পারে তিনটি জীবন।

রক্ত দেওয়ার আগে করণীয়

চলুন জেনে নেওয়া যাক, রক্ত দেওয়ার আগে রক্তদাতার করণীয় কি :

পুষ্টিকর বা তরল জাতীয় খাবার খান :

রক্তদানের দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিৎ যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। যেহেতু শরীরের থেকে বেশ বড় মাত্রার তরল বেরিয়ে যাবে তাই রক্তদাতাকে তরল জাতীয় খাবার যেমন: পানি, শরবত,ফলের রস ইত্যাদি পানীয় পান করতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে, যাতে রক্তচাপ কমে না যায়।

খালি পেটে বা ভরা পেটে রক্ত দেওয়া যাবে না :

একদম খালি পেটে কিংবা একেবারে ভরা পেটে রক্ত দেওয়া উচিৎ নয়। হালকা খাবার গ্রহণের আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে রক্ত দিতে হবে। রক্ত দেওয়ার আগে প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে। রক্ত দেওয়ার পর পরই কোন খাবার খাওয়া উচিৎ না। এক ঘন্টা পর খাবার খেতে হবে।

রক্ত দেওয়ার আগের দিন অধিক পরিমানে ঘুমাতে হবে এবং ওষুধ খাওয়া যাবে না :

ভালো ঘুম শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখে। রক্ত দানের আগে রাতে অন্য দিনের তুলনায় বেশি পরিমাণে ঘুমাতে হবে। অন্যদিনের তুলনায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে। রক্ত দেওয়ার আগের দিন বেশি পরিমানে ঘুম পড়লে রক্ত দেওয়ার দিন রক্ত দেওয়ার সময় ও রক্ত দেওয়ার পরে শরীর ভালো লাগবে। ক্লান্তি কম লাগবে।

যেদিন রক্ত দিবেন সেদিন ধূমপান করা যাবে না :

ধূমপান মানেই বিষপান। ধূমপায়ী রক্তদাতার রক্ত নিলে রোগীর কোনো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে ধূমপায়ী রক্তদাতা যেদিন রক্ত দেবেন, সেদিন তাঁর নিজের নিরাপত্তার জন্য ধূমপান থেকে বিরত থাকা উচিৎ। কারণ রক্ত দেওয়ার পর ধূমপান করলে ধূমপায়ী রক্তদাতার শরীর খারাপ বা দুর্বল লাগতে পারে।

রক্ত দেওয়ার আগে রক্তের গ্রুপ মেলানো :

রক্তের গ্রুপ না মিললে কখনও রক্ত দেওয়া উচিৎ না। এতে করে মৃত্যু হতে পারে রুগীর। রক্তসঞ্চালনের আগে রোগী ও রক্তদাতার রক্তের গ্রুপ মেলানোর পাশাপাশি ক্রস ম্যাচিং ও স্ক্রিনিং পরীক্ষা খুবই জরুরি। এ পরীক্ষায় জানা যায়, রক্তদাতার রক্তে কোনো রক্তবাহিত রোগ আছে কি না।

রক্ত দেওয়ার আগে রক্তদাতার বয়স ও ওজন দেখতে হবে :

রক্তদান করার জন্য রক্তদাতার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে। ওজন ৪৫ কেজির নিচে হলে ওই ব্যক্তি রক্তদান করতে পারবেন না। এছাড়াও যে কোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস কিংবা ছত্রাকজনীত রোগে আক্রান্ত থাকলেও ওই ব্যক্তি রক্তদান করতে পারবেন না।

রক্তদানকে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা উচিৎ প্রতিটি সুস্থ্য মানুষের।