রক্ত কাকে বলে? রক্তের উপাদান কয়টি ও কি কি?

রক্ত কাকে বলে?


রক্ত (Blood) হলো উচ্চশ্রেণীর প্রাণিদেহের এক প্রকার কোষবহুল, বহু জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত সামান্য লবণাক্ত, আঠালো, ক্ষারধর্মী ও লালবর্ণের ঘন তরল পদার্থ যা হৃৎপিন্ড, ধমনী, শিরা ও কৈশিক জালিকার মধ্য দিয়ে নিয়মিত প্রবাহিত হয়। রক্ত প্রধানত দেহে অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ পরিবাহিত করে।

Human_blood

রক্তের তরলের ৫৫% রক্তরস এবং বেশির ভাগই পানি (৯২%) এবং এতে আরও আছে আয়ন, হরমোন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং রক্ত কণিকা।

মানবদেহে মোট ওজনের শতকরা ৭ ভাগ রক্ত থাকে (গড়ে মানবদেহে ৫-৬ লিটার রক্ত থাকে)।

রক্তের উপাদান কয়টি ও কি কি?


রক্তের উপাদান দুইটি। যথা:

১. রক্তরস (Plasma)
২. রক্ত কণিকা (Blood Cells)

রক্তরস (Plasma):



plasma

রক্তরস হলো রক্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রক্তের তরল, হালকা হলুদাভাব অংশকে রক্তরস (plasma) বলে। রক্তকণিকা ব্যতীত রক্তের বাকি অংশই রক্তরস। মানব দেহের শতকরা প্রায় ৫৫ ভাগই হল রক্তরস।

রক্ত কণিকা (Blood Cells):



Blood Cells

রক্ত কণিকা ও রক্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রক্তরস বা প্লাজমাতে নিমজ্জিত ভাসমান বিশেষ কণিকাগুলোকে রক্ত কণিকা বলে।

এই কণিকা গুলো রক্ত রসের সাথেই দেহের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। মানব দেহের শতকরা প্রায় ৪৫ ভাগই হল রক্ত কণিকা।

রক্ত কণিকা (Blood Cells) আবার ৩ ধরণের হয়ে থাকে। যথাঃ


১. এরিথ্রোসাইট (Erythrocyte) বা লোহিত রক্তকণিকা
২. লিউকোসাইট (Leukocyte) বা শ্বেত রক্তকণিকা
৩. থ্রম্বোসাইট (Thrombocyte) বা অণুচক্রিকা

এরিথ্রোসাইট (Erythrocyte) বা লোহিত রক্তকণিকা:



Erythrocyte

যে রক্তকনিকা অক্সিজেন পরিবহন করে তাকে লোহিত রক্ত কনিকা বলে। অথবা, যকৃৎ ও লোহিত অস্থিমজ্জা থেকে উৎপন্ন, নিউক্লিয়াসবিহীন, উভঅবতল, হিমোগ্লোবিন নামক রঞ্জক পদার্থের ধারক, অক্সিজেন পরিবাহী রক্তকণিকাকে লোহিত রক্তকণিকা বলা হয়।

লিউকোসাইট (Leukocyte) বা শ্বেত রক্তকণিকা:



Leukocyte

লিউকোসাইট বা শ্বেত রক্তকণিকা মানবদেহে রক্তের একটি উপাদান। রক্তে বর্ণহীন, নিউক্লিয়াসযুক্ত এবং তুলনামূলকভাবে স্বল্পসংখ্যক ও বৃহদাকার যে কোষ দেখা যায় এবং যারা দেহকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে তাকে লিউকোসাইট বা শ্বেত রক্তকণিকা বলে।

থ্রম্বোসাইট (Thrombocyte) বা অণুচক্রিকা:



Thrombocyte

অণুচক্রিকা রক্তকণিকার অন্যতম প্রধান উপাদান। এটি আকারে ছোট, গোলাকার, ডিম্বাকার ও বর্ণহীন হয়ে থাকে। এরা গুচ্ছকারে থাকে।

প্রতি কিউবিক মিলিমিটারে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার অণুচক্রিকা থাকে। অস্থিমজ্জার মধ্যে অণুচক্রিকা উৎপন্ন হয়। এদের গড় আয়ু ৫-১০ দিন।