অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে গ্যাস, বদহজমের সমস্যায় পড়েছেন? ভাবনা না করে সমাধান জেনে নিন।

বছর ঘুরে পূজা পার্বণ, ঈদ, বড়দিন-এর মতো বড় উৎসব তো আছেই। সেই সাথে বছরের এই সময়টায় অসংখ্য বিয়ের নিমন্ত্রণ, অমুক অনুষ্ঠান তমুক জায়গায় পিকনিক, ঘুরে বেড়ানো বা নানা উৎসব লেগেই থাকে।

এসব অনুষ্ঠানে কিংবা ভ্রমণে একটু বেশি খেয়ে ফেললে সেটি নিয়ে তৈরি হয় অস্বস্তি। একে তো ঘন ঘন খাওয়া হচ্ছে, তার ওপর বাড়তি খাওয়া শরীরের জন্য তৈরি করছে নানা সমস্যা।

এসব অনুষ্ঠান বা বাড়তি খাওয়া এড়িয়ে যাওয়ারও  উপায় নেই।  অনেক সময় বেশি খাওয়া হয়ে গেলে বিব্রতকর গ্যাস থেকে শুরু করে অস্বস্তিকর বুক জ্বালাপোড়া, পাতলা পায়খানা প্রত্যেকেরই সময়ে সময়ে হজম সমস্যা হয়।

সুসংবাদটি হল আপনার অনেক সমস্যার জন্য কিছু সহজ সমাধান রয়েছে। কী কারণে আপনার অস্বস্তি হয়, কীভাবে হজমজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও পরিচালনা করা যায়, আপনার ডাক্তারকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত এবং কখন ডাক্তারকে দেখানো উচিত সে সম্পর্কে জানুন।

কী কারণে গ্যাস হয়?

যখন আমরা জল পান করি বা খাবার খাই এর সাথে বায়ু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এতে যে গ্যাস তৈরি হয় সেটা নিয়ে আপনি ভাববেন না। খাবার খাওয়ার পরে সেই খাবারটা breakdown বা ভাঙ্গনের সময় গ্যাস সৃষ্টি হয়। কোনো খাবারে বেশি আর কোনো খাবারে কম গ্যাস সৃষ্টি করে। এজন্য গ্যাসকে বলা হয় খাদ্য ভাঙ্গন বা বিচ্ছেদের একটি উপজাতও।

অনেকেরই নির্দিষ্ট কিছু খাবারের প্রতিও বেশি সংবেদনশীল বা এলার্জি ভাব থাকে। শরীর তীব্র অসহিষ্ণু ভাব প্রকাশ করে।

কিছু ওষুধ সেবন করলেও গ্যাস হতে পারে।

manyfoods

কোন খাবারে গ্যাস সৃষ্টি হয়?

আপনি সম্ভবত খেয়াল করেছেন যে নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়ার পরে আপনি গ্যাসি বোধ করছেন। এসব অপরাধীদের মধ্যে রয়েছে:

  • আপেল
  • অ্যাসপারাগাস
  • শিম
  • ব্রোকলি
  • ব্রাসেলস স্প্রাউট
  • বাঁধাকপি
  • ফুলকপি
  • দুধ ও দুগ্ধজাত
  • মাশরুম
  • পেঁয়াজ
  • পীচ
  • নাশপাতি
  • prunes
  • গম

তাই শরীরের অবস্থা বুঝে পরিমাণমতো খাবেন। কারো ফুলকপি বা পাতাকপি খেয়ে গ্যাস হচ্ছে। সকালের প্রধান খাবারে এটা রাখবেন না। দুপুরে আমিষ বা অন্য খাবারের সাথে খান। গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন।

বমি হওয়ার কারণ কী?

যখন আপনার পেট এবং অন্ত্রগুলিতে গ্যাস তৈরি হয়, তখন আপনার পেট ফুলে যেতে পারে – আপনার পেটে ফোলাভাব এবং পূর্ণতা বোধ হবে। ক্ষুধা লাগবে না। পরে দেখা যাবে বমি হয়ে খাবার বেরিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমনঃ

  • জ্বালাময়ী অন্ত্র সিন্ড্রোম (আইবিএস)। এই হজম অবস্থার কারণে পেটে ব্যথা, ক্র্যাম্পিং এবং ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
  • সিলিয়াক ডিজিজ ( আঠালো খাবারে অসহিষ্ণুতা)
  • মহিলাদের পিরিয়ডকে ঘিরে হরমোনীয় পরিবর্তনগুলি ঘটলে
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে
  • ফোলা ফোলা সাধারণত অস্বস্তিকর হলেও এটি কখনও কখনও আপনার পেট বা পাশে ব্যথা হতে পারে।

কীভাবে আমি গ্যাস এবং ফোলাভাব কমাতে পারি?

firstfoods

ডায়েট এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনগুলি একটি বড় পার্থক্য আনতে পারে:

  • চর্বিযুক্ত খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন
  • ফিজি পানীয় এড়িয়ে চলুন
  • খাবার আস্তে আস্তে চিবিয়ে ভালো করে খান
  • ধুমপান ত্যাগ করুন।
  • বেশি করে অনুশীলন বা ব্যায়াম করুন
  • গ্যাসজনিত খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন।
  • ফ্রুটোজ এবং সর্বিটল এর মতো গ্যাস সৃষ্টিকারী সুইটেনারগুলি এড়িয়ে চলুন। এগুলি প্রায়শই ক্যান্ডি, চিউইং গাম, এনার্জি বার এবং লো কার্ব খাবারে পাওয়া যায়।
  • সূর্যাস্তের পর ভারী খাবার(অতিরিক্ত ফাইবার, তেল, চর্বি) খাবেন না। ফল অর্থাৎ টক জাতীয় ফল সবসময়ের জন্য ভালো। খেতে পারেন টকদই।
রেফারেন্স: