সফল ক্যারিয়ারের জন্য কোন অভ্যাসগুলি গুরুত্বপূর্ণ?
জীবন চলার পথে ক্যারিয়ার গড়ার উপদেশ আমরা কমবেশি অনেক উৎস থেকেই পায়। আমরা অনেকেই ক্যারিয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট নই আবার অনেকে মানিয়ে নিয়ে সন্তুষ্ট এছাড়া অনেকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট।
খুব কম মানুষই আছে যারা ক্যারিয়ার নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট। সফল ক্যারিয়ার এমনি এমনি হয় না, ক্যারিয়ার সফলের জন্য পরিশ্রম করতে হয়।
পড়ালেখায় ভালো করা এবং ক্যারিয়ারে ভালো করা এই দুইটার সাথে সামান্য মিল থাকলেও দুইটা ভিন্ন জিনিস।
সফল ক্যারিয়ার এর জন্য সঠিক কর্ম দক্ষতার পাশাপাশি আরো অনেক গুণাবলীর অধিকারী হতে হয়। সফল ক্যারিয়ার এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হল:
মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং শিখুন:
সহকর্মী বা বসের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং যা করতে হবে সেটা সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হন। পুরোপুরি বুঝতে না পারলে প্রশ্ন করুন।
সহকর্মী বা বসের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলে কাজ সম্পর্কিত ধারনা পরিষ্কার হবে।
কাজটি কিভাবে করতে হবে তা জানা না থাকলে সহকর্মীর সাথে আলোচনা করুন এবং তাদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করুন।
কাজের প্রতি আন্তরিক থাকলে দেখবেন সেটা কোনো না কোনোভাবে সুন্দরভাবে করতে পারছেন। না বুঝে ভুল কাজ করার থেকে অন্যের সাহায্য নিয়ে ভালোভাবে বুঝে সুন্দরভাবে কাজ করা অনেক ভালো।
নতুন কিছু শেখার আগ্রহ থাকতে হবে:
জীবনের সবকিছুই প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। আমাদের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রেও তাই।
আমরা যদি ব্যাংকের চাকরি চিন্তা করি তাহলে আমরা দেখব প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ব্যাংকিং মডেল আসছে এবং ব্যাংকের এমপ্লয়ীদের এগুলোর সাথে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।
আমরা যদি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর কথা চিন্তা করি তাহলে আমরা দেখব নির্দিষ্ট সময় পরপর নতুন নতুন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আসছে এবং ইঞ্জিনিয়ারদের তা শিখতে হচ্ছে।
কেউ যদি মনে করে যে সে তার বর্তমান কাজে খুবই দক্ষ এবং বর্তমান চাকরিতে খুব ভালো আছে তার পরেও নতুন কিছু শেখার জন্য চেষ্টা করা উচিত।
ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার জন্য নতুন কিছু শেখার বিকল্প নেই।
ভালোবেসে কাজ করুন:
একটি কাজ অনেক ভাবে করা যায়। সবথেকে ভালো হলো কাজটি কে ভালবেসে সুন্দর করে করা। অপরদিকে বাধ্য হয়ে কারো চাপিয়ে দেওয়া দায়িত্ব সম্পন্ন করতে যেনতেনভাবে কাজটি করা।
আমাদের সবারই উচিত ভালোবেসে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে কাজ করা এতে কাজের কোয়ালিটি যেমন ভালো হয় তেমনি কাজের মধ্যে ক্লান্তি বোধ কম থাকে।
নিজের ভাল লাগার কাজ খুঁজে বের করুন:
আপনি কী ধরনের কাজ পছন্দ করেন? প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন?
না কি অন্য চাকরিজীবীদের দায়-দায়িত্ব নিতে পছন্দ করেন? আপনি নিজেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চান? না কি একজন অভিনেতা, ডিজাইনার বা দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হতে চান? নাকি ম্যানেজার হতে চান?
ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তার আগে ভালোভাবে নিশ্চিত হয়ে নিন যে এটাই আপনার স্বপ্নের কাজ।
আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়ার আগে আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিন।
সময়কে কৃপণের মত ব্যবহার করুন:
সময়ের ব্যবহার সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকুন। সময় যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এটা আমরা তখনই অনুভব করি যখন সময় অতিবাহিত হয়ে যায়।
প্রত্যেকটা মানুষেরই উচিত সময়ের সঠিক ব্যবহার করা। সময়ের কাজ সময়ে করতে পারলে যে কোনো ব্যক্তিই তার ক্যারিয়ারকে সফল স্থানে নিয়ে যেতে পারবে।
সময় অপচয় করলে ক্যারিয়ার উত্তর নিশ্চিত প্রভাব পড়ে।
কোন কাজ পরে করব বলে রেখে দিলে সেটা সঠিক সময়ে তো হয় না এবং হলেও সে কাজের কোয়ালিটি ভালো হয় না।
সহযোগিতার মনোভাব রাখুন:
পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর ক্যারিয়ারের অনেক কিছু নির্ভর করে। সহকর্মীদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন এবং তাদের সহযোগিতা করুন এটা ক্যারিয়ারের জন্য ভালো একটা গুন।
অনেকেই হয়তো জানি না শতকরা ৫০%-এরও বেশি চাকরি হয় জানাশোনা ও সম্পর্কের মাধ্যমে।
সম্পর্কের জাল যদি বিস্তৃত হয়, তবে সেখান থেকে আপনি নতুন নতুন ব্যবসায়িক ধারণা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ধারণা পাবেন যা আপনার ক্যারিয়ারের নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে।
বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব রাখুন:
ভালো ক্যারিয়ারের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি নরম যদিও বন্ধুত্বপূর্ণ হল সহজেই সহকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে আপনার প্রয়োজনে অনেক কি পাশে পাবেন।
ভয়ঙ্কর টাইপের বিগ বস অ্যাটিটিউড ক্যারিয়ারে সুফল বয়ে আনে না। জোরপূর্বক মানুষকে দিয়ে কিছু করিয়ে বেশিদূর যাওয়া যায় না।
ধৈর্যশীল হোন:
ক্যারিয়ারে আপনি যদি কঠোর পরিশ্রমী হোন আজ হোক, কাল হোক সফল আপনি হবেন। এজন্য ক্যারিয়ারের শুরুতে কাজ নিয়ে তাড়াহুড়া না করে ঠিক ভাবে বুঝে শিখে কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ করুন।
বড় কিছু রাতারাতি হয় না তাই ধৈর্য নিয়ে পরিশ্রম করে যান সফলতা আসবেই।