রক্ত দেওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা।
রক্ত হলো শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। স্বেচ্ছায় নিজের রক্ত অন্য কারো প্রয়োজনে দান করাই হলো রক্তদান। প্রতি তিন মাস পর পর প্রত্যেক সুস্থ্য ও প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারী নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে রক্তদান করতে পারবেন।
রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাছাড়া রক্তদানকারীর মাধ্যমে রক্ত দান করার সিদ্ধান্তে একটি জীবন বা একাধিক জীবন রক্ষা করতে পারে। তবে, এটি রক্ত গ্রহণকারীর জন্য শুধুমাত্র উপকারী নয়, রক্তদাতার স্বাস্থ্যের অনেক উপকার করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, রক্ত দেওয়াই রক্তদাতার কি কি স্বাস্থ্য উপকার হয় :
হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায় :
নিয়মিত রক্তদানে হৃদযন্ত্রের সামগ্রিক উন্নতি ঘটে। রক্তে যদি আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে কোলেস্টেরলের অক্সিডেশনের পরিমাণ বেড়ে যায় ও ধমনী ক্ষতিগ্রস্থ হয়, যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত রক্তদানের ফলে দেহে আয়রনের পরিমাণ কমে গিয়ে হৃদ রোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয় কার্যকর ভাবে।
যারা নিয়মিত রক্তদান করে তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে ৮৮ ভাগ কমে যায় এবং স্ট্রোক সহ অন্যান্য হৃদ রোগের ঝুঁকি কমে যায় ৩৩ ভাগ।
ক্যান্সার ঝুঁকি কমে :
নিয়মিত রক্তদাতার মরণব্যাধি ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। যারা বছরে দুই বার রক্ত দেয়, অন্যদের তুলনায় তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় নিয়মিত রক্তদাতাদের অনেক কম থাকে।
রক্তে আয়রনের ভারসাম্য বজায় রাখে :
নিয়মিত রক্তদান করলে শরীরে রক্তের প্রবাহ সঠিক হয় ফলে শরীরে আয়রনের ভারসাম্য বজায় থাকে। কেননা রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য প্রস্তূত হয়।
রক্তদানের ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকা জন্ম হয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে :
রক্ত দান আরেকটি সুবিধা হলো, রক্ত দিলে যে ক্যালোরি খরচ হয় তা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।। এর কারণ ৪০০-৪৫০ মিলিগ্রাম রক্ত দেওয়ার সময় গড় প্রাপ্তবয়স্কদের ৬৫০ ক্যালোরি পর্যন্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে স্থূল দেহী মানুষদের ক্ষেত্রে রক্তদান অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
হিমোক্রোমাটোসিসের প্রতিরোধ করে :
হিমোক্রোমাটোসিস প্রতিরোধ করতে পারেন রক্তদানের মাধ্যমে। শরীরে অতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতিতে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগে লৌহ বা আয়রন(Iron) বিভিন্ন অঙ্গে জমা হতে থাকে, এমনকি হার্টেও। নিয়মিত রক্তদানের ফলে শরীরে আয়রনের অতিরিক্ত মাত্রা হ্রাস পায়, যা হিমোক্রোমাটোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপকারী হতে পারে।