মাটি কাকে বলে? মাটি কত প্রকার ও কি কি?
মাটি কাকে বলে?
মাটি বা মৃত্তিকা হলো পৃথিবীর উপরিভাগের নরম ও দানাদার আবরণ। পাথর গুঁড়ো হতে সৃষ্ট খনিজ পদার্থ এবং জৈব যৌগ মিশ্রিত হয়ে মাটি গঠিত হয়। মাটি হলো পৃথিবীর ভূত্বকের উপরের আলগা স্তর, যার মাধ্যমে উদ্ভিদ শিকড় বিস্তার লাভ করে দারিয়ে থাকে এবং বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করে।
অন্যভাবে বললে বলা যায়, ভূত্বকের উপরিভাগের ক্ষয়ে যাওয়া শিলাচূর্ণের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের জৈব ও অজৈব বস্তুর সংমিশ্রণে গঠিত যে নরম ও অসমসত্ত্ব আবরণ স্তরে গাছপালা জন্মায়, তাকেই মাটি বলে।
মাটি কত প্রকার ও কি কি?
মাটি প্রধানত চার প্রকার। যথাঃ
১. বেলে মাটি
২. দোআঁশ মাটি
৩. এঁটেল মাটি
৪. পলি মাটি
বেলে মাটি:
যে মাটিতে পলি ও কাদার অপেক্ষা বালুর পরিমাণ বেশি থাকে তাকে বেলে মাটি বলে। অর্থ্যাৎ, যে মাটিতে শতকরা ৮০ ভাগ বালুকণা থাকে সেই মাটি বেলে মাটি বলে। এ ধরনের মাটির পানি ধারণক্ষমতা কম কিন্তু শোষণক্ষমতা বেশি হয়ে থাকে। এই ধরণের মাটিতে কোন জৈব পদার্থের উপস্থিতি নেই।
দোআঁশ মাটি:
যে মাটি বেলে, এঁটেল ও পলি মাটির সমন্বয়ে গঠিত তাকে দোআঁশ মাটি বলে। এ ধরনের মাটিতে মাটির কণাগুলোর প্রতিটিই প্রায় সমপরিমাণে থাকে। এ মাটির পানি ধারণ ও শোষণক্ষমতা উভয়ই বেশি হয়ে থাকে।
দোআঁশ মাটি চেনার উপায় হচ্ছে কিছু মাটি নিয়ে সামান্য পানি দিয়ে গোলাকার বল তৈরি করলে কিছুক্ষন পর যদি ভেঙ্গে যায় তবে সেটা দোআশ মাটি।
এঁটেল মাটি:
যে মাটিতে বালু অপেক্ষা পলি ও কাদার পরিমাণ বেশি থাকে এবং দানাগুলি খুব ছোট আকারের হয়ে থাকে তাকে এঁটেল মাটি বলে। অর্থ্যাৎ, শতকরা ৪০-৫০ ভাগ কর্দম কণাবিশিষ্ট মাটিকে এঁটেল মাটি বলে।
এ ধরনের মাটির পানি ধারণক্ষমতা বেশি কিন্তু শোষণক্ষমতা কম। এ মাটি ভেজা অবস্থায় আঠালো হয়ে থাকে কিন্তু শুকনা অবস্থায় খুবই শক্ত হয়ে যায়।
পলি মাটি:
যে মাটি অধিক পরিমাণ পলি কণা ধারণ করে তাকে পলি মাটি বলে। এই মাটিতে পটাশ, ফসফেরিক অ্যাসিড, চুন ইত্যাদি থাকে। পলিমাটি উর্বর হওয়ার জন্য এই মাটিতে প্রায় সব রকমের ফসল চাষ হয়। এ মাটির কণাগুলো দানাদার এবং এতে উদ্ভিদের জন্য পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে।