ডায়েট স্বাস্থ্যকর করার উপায়।
সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের ডায়েট স্বাস্থ্যকর করে তোলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফল এবং শাকসবজি সমৃদ্ধ একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট আমাদের অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে।
স্বাস্থ্যকর ডায়েট দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায় এবং আপনার শরীরকে সুস্থ্য রাখে। তবে ডায়েটে প্রথম অবস্থায় বড় পরিবর্তন করা আপনার জন্য অসুবিধা হতে পারে।
বড় পরিবর্তন করার পরিবর্তে আপনি কয়েকটি ছোট ছোট পরিবর্তন দিয়ে শুরু করুন। এই পরিবর্তন আপনার খাদ্যকে কিছুটা স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারে।
ডায়েট স্বাস্থ্যকর করার উপায়
নিচে ডায়েট স্বাস্থ্যকর করার কিছু উপায় আলোচনা করা হল:-
ধীরে ধীরে খাওয়া:
আপনি যে গতিতে খাবার খান তা প্রভাবিত করে আপনি কতটা খাচ্ছেন এবং কতটা ওজন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায় যে, যারা দ্রুত খাবার খায় তাদের বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হরমোন আপনার মস্তিষ্কে সংকেত দেয় যে আপনি ক্ষুধার্ত কিনা।
এই সংকেত পেতে মস্তিষ্কের প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। এই কারণেই ধীরে ধীরে খেলে মস্তিষ্ককে সংকেত দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারে।
ধীরে ধীরে খাওয়া আপনার খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ হ্রাস করতে পারে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
গোটা শস্যের আটার রুটি খান:
পরিশোধিত শস্যের রুটির পরিবর্তে গোটা শস্যের রুটি বেছে নিতে পারেন যা আপনার খাদ্যকে কিছুটা স্বাস্থ্যকর করতে পারে। পরিশোধিত শস্য স্বাস্থ্য সমস্যা কারণ হতে পারে।
গোটা শস্যের আটার রুটি বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সুবিধার দিতে পারে। যেমন:- টাইপ 2 ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে ইত্যাদি।
সকালের নাস্তায় ডিম খান:
ডিম অবিশ্বাস্যভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, বিশেষ করে যদি সকালে খান। এতে উচ্চ মানের প্রোটিন এবং অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে।
সকালে ডিম খেলে ভরে থাকার অনুভূতি বাড়ে। যা আপনার ওজন কমানোর জন্য বেশ সহায়ক হতে পারে।
প্রোটিন গ্রহণ বৃদ্ধি করুন:
প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। প্রোটিনকে পুষ্টির রাজা বলা হয়।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, উচ্চ-প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষুধার হরমোনের মাত্রা কমে যায়।
পেশীর ভর ধরে রাখতে সাহায্য করে প্রোটিন এবং আমাদের প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালোরি ক্ষয় হয় তার পরিমাণ ও কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রোটিনের ভালো উৎসের মধ্যে রয়েছে:
- দুগ্ধজাত পণ্য।
- বাদাম।
- বাদামের মাখন।
- ডিম।
- মটরশুটি।
- চর্বিহীন মাংস।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, পানী ওজন হ্রাস এবং ওজন রক্ষণাবেক্ষণ করে।
খাবার আগে পানি পান করলে ক্ষুধা এবং খাদ্য গ্রহণ করার পরিমান কমে।
ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন “ডি” গ্রহণ করুন:
সারা বিশ্বে প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষের ভিটামিন “ডি” এর অভাব রয়েছে। ভিটামিন “ডি” হল চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন যা হাড়ের স্বাস্থ্য এবং ইমিউন সিস্টেমের সঠিক কার্যকারিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন “ডি” খুব কম খাবারেই পাওয়া যায়, কিন্তু চর্বিযুক্ত সামুদ্রিক মাছে সাধারণত বেশি থাকে।
ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন:- প্রদাহ কমানো, হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখা এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি।
সবুজ শাক সবজি খান:
সবুজ শাক আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সবুজ শাক সবজি ক্যালোরি গ্রহণ কমাতে পারে এবং স্বাস্থ্যেকর জীবনযাপনে সাহায্য করে।
এছাড়া শাক সবজি ওজন কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ-কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়ার আগে শাকসবজি খাওয়া রক্তের শর্করার মাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
কফি পান করুন:
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়গুলির মধ্যে কফি একটি যা আমাদের জন্য খুব স্বাস্থ্যকর। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি প্রধান উৎস এবং এতে আমাদের অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে।
যেমন টাইপ 2 ডায়াবেটিস এবং লিভারের রোগের ঝুকি কমায়। ব্লাক কফি পান করার চেষ্টা করুন।