গ্লুকোমা কী? গ্লুকোমা জনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধে আমাদের করণীয়।
গ্লুকোমা চোখের একটি রোগ। এতে চোখের স্নায়ুর ধীরে ধীরে ক্ষতি হয়ে থাকে এবং ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি কমতে থাকে। এটি এমন একটি রোগ যেখানে চোখের প্রেশার বেশি থাকে এবং এই প্রেশারের সঙ্গে ধীরে ধীরে চোখের অপটিক নার্ভ আস্তে আস্তে নষ্ট হয়।
গ্লুকোমা রোগের তেমন কোনো লক্ষণ রোগী বুঝতে পারেন না এ জন্যই অনেকেই একে বেশি ভয় পায়। আক্রান্ত ব্যক্তির সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে স্থায়ী অন্ধত্ব বরণ করেন। গ্লুকোমা রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে অনেকেই অন্ধত্বের শিকার হয়। এটি সময় মতো নির্ণয় করতে পারলে প্রতিরোধ করা যায়।
আসুন জেনে নেওয়া যাক গ্লুকোমা রোগের প্রতিরোধের উপায়-
নিয়মিত চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ দ্বারা চক্ষু পরীক্ষা করা হলে এই রোগের প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করা সম্ভব। ছানি জনিত অন্ধত্ব অপারেশন করে স্বচ্ছ লেন্স লাগালে দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসে কিন্তু গ্লুকোমায় অন্ধত্ব ফিরে আসে না কারন আমাদের নার্ভটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসার গুরুত্বপর্ণ।
ছোট বাচ্চারা গ্লুকোমায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। জন্মগতভাবে গ্লুকোমা থাকতে পারে। সাধারণত গ্লুকোমা চিকিৎসা তিন ধরনের উপায়ে করা হয়। চোখের ড্রপ, লেজার ও গ্লুকোমা সার্জারি। গ্লুকোমা রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা গেলে খুব সহজেই গ্লুকোমাজনিত অন্ধত্ব রোধ করা যায়। তাই গ্লুকোমা সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিৎ।
গ্লুকোমা রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় কিন্তু নিরাময় করা যায় না। এ রোগে দৃষ্টি যতটা কমেছে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। তবে দৃষ্টি আর কমে না যায় তার জন্য আমাদের চিকিৎসা নিতে হবে।
চোখের উচ্চচাপ এই রোগের প্রধান কারণ তাই চোখের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয় ওষুধের দ্বারা। তিন মাস পর পর চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং কতগুলো পরীক্ষা করিয়ে দেখতে হবে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা।
যেমন-
- দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা
- চোখের চাপ পরীক্ষা
- দৃষ্টিব্যাপ্তি পরীক্ষা
- চোখের নার্ভ পরীক্ষা
এই রোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নিয়মিত ওষুধ সেবন করা এবং সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। অধিকাংশ রোগীর চোখে ব্যথা হয় না বা তেমন কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না তাই রোগী দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা অব্যাহত রাখেন না এর ফলে অনেক রোগী অন্ধত্ব বরণ করেন।
অনেক সময় দেখা যায় দীর্ঘদিন ঔষধ ব্যবহারের ফলে কার্যকারিতা কমে যেতে পারে বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে তাই নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। সঠিক ওষুধ ব্যবহার করে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে গ্লুকোমা রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।