অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করার উপায়।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমরা খাওয়াদাওয়ায় অতিরিক্ত মনোযোগী। অতিরিক্ত খেয়ে ফেলি কিন্তু এটা আমরা কখনই অনুভব করি না। বেশি খাচ্ছি আবার শারীরিক পরিশ্রমও কম করছি।
ফলে এই অভ্যাসের কারণে বেড়ে যেতে পারে শরীরের ওজন, দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। অলস সময় বা পরিস্থিতির কারণে এমন হলে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে খাদ্যাভ্যাস। তাই কী করে এ সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো-
প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার খান:
প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, ফল, শাকসবজি, মুরগির মাংস, মাছ ইত্যাদি খাবার যুক্ত করুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। এসব খাবার দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করবে শক্তিশালী। ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে অল্পতেই পেট ভরে যায়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
কোমল পানীয় পান কমান:
চিনিযুক্ত কোমল পানীয়র প্রতি ভালোবাসা কার না আছে। খাওয়ার সময় কোমল পানীয় গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিতে হবে। কোমল পানীয়র জায়গায় গ্রহণ করুন নরমাল পানি। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, স্বাভাবিক বয়সের দুজন ব্যক্তি, একজন খাওয়ার সময় কোমল পানীয় গ্রহণ করছেন এবং আরেকজন পানি পান করছেন। কোমল পানীয় পান করা ব্যক্তিটি পানি পান করা ব্যক্তির চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ খাবার বেশি গ্রহণ করছেন। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত এই কোমল পানীয় দীর্ঘমেয়াদে আপনার শরীরের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
সামঞ্জস্যপূর্ণ ডায়েট:
অতিরিক্ত খাওয়া এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ হলো সামঞ্জস্যপূর্ণ ডায়েট। নিয়মিত ও পরিমিত আহারই হলো ব্যালেন্স ডায়েটের মূল কথা। সুতরাং সব খাবার বাদ না দিয়ে বরং প্রয়োজনীয় খাবারগুলো চাহিদার অতিরিক্ত না খেলেই হলো।
চামচ ব্যবহার করতে পারেন:
চামচ দিয়ে খাওয়ার একটি বড় সুবিধা হল কম খাওয়া। তাই যদি মনে করেন আপনি বেশি খাচ্ছেন তাহলে আজ থেকে হাত দিয়ে খাওয়া ছেড়ে চামচ দিয়ে খাওয়া শুরু করুন।
নিজের সঙ্গে কথা বলুন:
প্রতিদিন নিয়মের চেয়ে বেশি এবং অতিরিক্ত খাচ্ছেন আর ওজন বেড়েই চলছে। সাধারণত মানসিক অবস্থাভেদে আমাদের খাওয়ার পরিমাণ কমে–বাড়ে। আর তাই প্রথমে নিজের সঙ্গে কথা বলুন, মনের অবস্থা যাচাই করুন। স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে স্বাভাবিক খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করুন।
খেতে হবে সময়মতো:
সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার গ্রহণের নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিতে হবে। সকালের নাস্তা দুপুরের আগে ঠিক তেমনি দুপুরের খাবার বিকেলের আগে এবং রাতের খাবার গভীর রাতে চলে না যায়। শরীর সময়মতো খাবার না পেলে খাবার সামনে এলে মানসিকভাবেও আমরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে বেশি খেয়ে ফেলি।
খাওয়ায় হতে হবে মনোযোগী:
বর্তমানে আমরা এমন অভ্যাসে দাঁড়িয়েছি যে কম্পিউটার-ল্যাপটপ, মোবাইল বা টিভি ছাড়া আমরা খেতে পারি না। এই অভ্যাসটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অতিরিক্ত খাওয়ার সমস্যার অন্যতম কারণ এটি। খাওয়ায় মন না দিয়ে বেশি সময় ব্যয় করে যখন খাবেন, তখন বেশি খাওয়া হয়ে যায়।