পোস্টমর্টেম বা ময়না তদন্ত কি? কেন করা হয় ও কিভাবে করা হয়?
পোস্টমর্টেম বা ‘ময়না তদন্ত’ কি?
অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃতদেহ বিশ্লেষণ করে মৃত্যুর কারণ জানার যে চেষ্টা করা হয়, তাকেই পোস্টমর্টেম বা ময়নাতদন্ত বলা হয়। পোস্টমর্টেম শব্দটি অটোপসি, নিক্রোপসি ইত্যাদি দ্বারাও বোঝানো হয়ে থাকে।
পোস্টমর্টেম বা ময়নাতদন্ত কোনো মানুষের অস্বাভাবিক বা রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের পদ্ধতি। যাকে গ্রিক ভাষায় ‘অটোপসি’ও বলা হয়। ময়না শব্দটি উর্দু থেকে এসেছে। যার অর্থ ভালোভাবে খোঁজ করা।
পোস্টমর্টেম বা ময়না তদন্ত কেন করা হয়?
মৃত্যুর কারণ জানার জন্য পোস্টমর্টেম বা ময়না তদন্ত করা হয়। কোন ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে বা তার মৃত্যু নিয়ে কোন সন্দেহ তৈরি হলে, মৃত্যুর সঠিক কারণটি জানার জন্য মৃতদেহের পোস্টমর্টেম করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে মৃতদেহ বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা করা হয়, ঠিক কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।
অনেক সময় শরীরের ভেতরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হয়। যেমন ধর্ষণের অভিযোগে ডিএনএ ম্যাচ করা হতে পারে। আবার আত্মহত্যার মতো অভিযোগে ভিসেরা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বোঝা যায় যে বিষপ্রয়োগের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না।
অনেক সময় কোন ব্যক্তি অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করলে যদি ওই মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়, তাহলে তখন যে পোস্টমর্টেম করা হয়, তাকে বলা হয় ক্লিনিক্যাল পোস্টমর্টেম।
পোস্টমর্টেম বা ময়না তদন্ত কীভাবে করা হয়?
ময়নাতদন্তের কক্ষ বা মর্গে তদন্তকারী চিকিৎসক প্রথমে মৃতদেহের বাহ্যিক অবস্থার বিশ্লেষণ করেন। মৃতদেহে কোনো আঘাত বা ক্ষত আছে কি না, ত্বক ও জিহ্বার রং ইত্যাদি দেখে মৃত্যুর কারণ খোঁজার চেষ্টা করেন।
তারপর মৃতদেহের ব্যবচ্ছেদ করে মস্তিষ্ক, ফুসফুস, লিভারসহ শরীরের ভেতরে যাচাই করে দেখা হয়। এতে দেহের অভ্যন্তরে কোনো আঘাত থাকলে বা বিষক্রিয়া থাকলে, চিকিৎসকরা সেটি বুঝতে পারেন। কোথাও আঘাতের চিহ্ন থাকলে সেটি কীভাবে হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বোঝা যায়।
এই কাজটি সম্পন্ন করতে মৃতদেহের নানা অংশ কেটে দেখতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। এর জন্য দেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবেও পাঠানো হয়।