ইন্টারভিউ বা ভাইভাতে যে প্রশ্নগুলো বেশি করা হয়।
ইন্টারভিউ বা ভাইভা হলো একজন চাকরি প্রার্থীর জীবনের সফলতার জন্য অপরিহার্য একটি অধ্যায়। তাই ভাইভা চলাকালীন প্রার্থীকে অবশ্যই কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, যাতে ভাইভাটি সবদিক থেকে সফল হয়।
কিছু কমন প্রশ্ন রয়েছে যেগুলো প্রায় সব ভাইভাতেই করা হয়ে থাকে। তাই এর জন্য প্রস্তুতি নিন আগে থেকে। তাহলে আপনি ভাইভায় ভালো করতে পারবেন।
ভাইভা হলো সবচেয়ে ভাল জায়গা নিজের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞাকে অন্যের সামনে তুলে ধরার জন্য। কিন্তু আমাদের মধ্যে ৮০ শতাংশের অধিক চাকুরী প্রত্যাশীরা নিজেদেরকে সেই স্থানে নিয়ে যেতে পারে না, যেখানে তার যাওয়ার কথা ছিল ।
জেনে নিন ইন্টারভিউ বা ভাইভাতে আপনার কি কি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে :
নিজের সম্পর্কে বলুন :
ভাইভায় প্রায়ই এ প্রশ্নটি করা হয়ে থাকে। প্রশ্নকর্তারা এ প্রশ্নটি করতে ভালোবাসেন, তারা মনে করেন এ প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর মনের ভয় দূর হবে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর বিপরীত চিত্র দেখা যায়। বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই এ প্রশ্নটির উত্তর গুছিয়ে বলতে পারেন না।
নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে অনেকে লাইফস্টোরি বলে থাকেন। কিন্তু প্রশ্নকর্তারা এক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর ৪-৫টি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়, যেমন- নির্দিষ্ট দক্ষতা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যৎ ভাবনা সম্পর্কে জানতে চান।
আপনি কেন এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান? :
চাকরির ইন্টারভিউতে এ প্রশ্নটিও অধিকাংশ সময়ই জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অনেকেই ভুল উত্তর দিয়ে থাকেন। অনেকেই বলে থাকেন চাকরিটা আমার খুবই দরকার।
এটা হয়তো সত্যি হতে পারে কিন্তু প্রশ্নকর্তারা মূলত এ প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চান – আপনাকে কাজটি দেয়া হলে আপনি তা কতটা দায়িত্বের সঙ্গে পালন করতে পারবেন। তাই কাজটি সম্পর্কে যে আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং সুযোগ পেলে আপনি তা যথাযথভাবে করবেন ভাইভায় সেগুলো উপস্থাপন করতে হবে।
আপনি এই চাকরিটি কেন করতে চান? :
এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই খুব গুরুত্বের সাথে দিতে হবে এবং চমৎকার একটি উত্তর ভেবে রাখতে হবে। এখানেও আপনার কয়েকটা পয়েন্ট সনাক্ত করে রাখা উচিৎ কেন আপনি এই চাকরির জন্য যোগ্য।
যেমন যদি আপনি কাষ্টমার কেয়ার অফিসার পদে আবেদন করে থাকেন তবে আপনার বলা উচিৎ আমি সব সময়ই মানুষের সাথে কথাবার্তা বলতে ও মানুষকে সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে পছন্দ করি। আমার যোগাযোগের দক্ষতা চমৎকার।
আপনাকে আমাদের কেন নিয়োগ দেয়া উচিৎ? :
এই প্রশ্নটি শুনতে খুবই ভয়ংকর শোনায় কিন্তু যদি আপনাকে এই প্রশ্নটি করা হয় আপনি অবশ্যই ভাগ্যবান। কোন কোম্পানির কাছে নিজেকে ও নিজের দক্ষতাকে বিক্রি করার এমন চমৎকার সুযোগ সবাই পায় না। এখানে আপনাকে নিজের সম্পর্কে ৩ টি পয়েন্ট ফুটিয়ে তুলতে হবে।
প্রথমত আপনি শুধু কাজই করবেন না উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করবেন; দ্বিতীয়ত আপনি যে কোন ধরণের টিম ও পরিবেশে কাজ করতে সর্বদা প্রস্তুত; এবং তৃতীয়ত অন্য যে কারো থেকে আপনি এই কাজের জন্য অনেক বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন।
জটিল পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করেন? :
এই প্রশ্নের উত্তরে বোঝাতে চেষ্টা করুন যে যতটাই চাপ থাকুক না কেন আপনি কাজ শেষ না করে থামার পাত্র নন। তারপর চাপপূর্ণ পরিস্থিতিতে কিভাবে আপনি কাজ গুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নেন এবং গুরুত্বের ভিত্তিতে সময়সীমা মাথায় রেখে একে একে কাজ গুলো শেষ করেন।
আগামী ৫-১০ বছরে নিজেকে কোথায় দেখতে চান ?
এ প্রশ্নের মাধ্যমে প্রশ্নকর্তা আপনার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে কিনা বা কেমন সে সম্পর্কে জানতে চান। এ প্রশ্নের নির্ভুল উত্তর নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা ও কাজের ভূমিকার ওপর।
এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপনাকে আগামী ৫ বছরের জন্য একটি যুক্তিসঙ্গত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় কোন তাড়াহুড়া করা যাবে না।
আপনি আপনার নতুন চাকরি থেকে কি কি আশা করছেন? :
এই প্রশ্নের উত্তরে সৃজনশীলতা দেখানোর তেমন প্রয়োজন নেই। আবেদন করার আগে নিশ্চয়ই আপনি সার্কুলারটি ভাল করে পড়েছেন। এই চাকরি আপনাকে যেসব জিনিস অফার করছে সেসব জিনিসই নিজের মত করে বর্ণনা করুন।