নিউক্লিওপ্লাজম ও সাইটোপ্লাজম কাকে বলে? এদের মধ্যে পার্থক্য কি?
নিউক্লিওপ্লাজম কাকে বলে?
নিউক্লিয়ার ঝিল্লির ভিতরে জেলির মতাে বস্তু বা রস থাকে, একে কেন্দ্রিকারস বা নিউক্লিওপ্লাজম বলে। এই বস্তু বা রসকে আবার ক্যারিওলিম্ফও বলা হয়। নিউক্লিওপ্লাজম মূলত প্রােটিন দিয়ে তৈরি। নিউক্লিওপ্লাজমে নিউক্লিক এসিড, উৎসেচক ও কতিপয় খনিজ লবণ থাকে। এছাড়াও এতে রয়েছে RNA (Ribonucleic Acid)।
অন্যভাবে বললে বলা যায়, নিউক্লিয়ার মেমব্রেন এবং নিউক্লিওলাসের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত অর্ধ-তরল, স্বচ্ছ ও দানাদার তরল পদার্থ থাকে। একে নিউক্লিওপ্লাজম বা ক্যারিওলিম্ফ (Karyolymph) বলা হয়।
সাইটোপ্লাজম কাকে বলে?
সাইটোপ্লাজম হচ্ছে কোষের ভেতরে বেশির ভাগ অংশ জুড়ে অবস্থিত স্বচ্ছ, সমসত্ব, জেলি-সদৃশ পদার্থ। সাইটোপ্লাজমের অভ্যন্তরে অবস্থিত কোষের বিভিন্ন জৈবনিক ক্রিয়াকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট সজীব বস্তুসমূহকে একত্রে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু বলা হয়। সাইটোপ্লাজমের ৮০ শতাংশই পানি এবং সাধারণত বর্ণহীন।
অন্যভাবে বললে বলা যায়, প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াসকে বাদ দিলে যে অর্ধতরল অংশটি থাকে, তাকে সাইটোপ্লাজম বলে। এর প্রধান কাজ কোষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঙ্গাণুগুলোকে ধারণ করা।
নিউক্লিওপ্লাজম ও সাইটোপ্লাজম এর মধ্যে পার্থক্য:
নিউক্লিওপ্লাজম (Nucleoplasm) | সাইটোপ্লাজম (Cytoplasm) |
১. নিউক্লিয়ার ঝিল্লির ভিতরে জেলির মতাে বস্তু বা রস থাকে, একে কেন্দ্রিকারস বা নিউক্লিওপ্লাজম বলে। | ১. প্রোটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াসকে বাদ দিলে যে অর্ধতরল অংশটি থাকে, তাকে সাইটোপ্লাজম বলে। |
২. নিউক্লিওপ্লাজম নিউক্লিয়াসের ভিতরে পাওয়া যায়। | ২. সাইটোপ্লাজম কোষের ভিতরে পাওয়া যায়, নিউক্লিয়াসের বাইরে। |
৩. নিউক্লিওপ্লাজম পারমাণবিক ঝিল্লি দ্বারা আবদ্ধ। | ৩. সাইটোপ্লাজম কোষের ঝিল্লি দ্বারা আবদ্ধ। |
৪. নিউক্লিওপ্লাজম শুধুমাত্র ইউক্যারিওটিক কোষে পাওয়া যায়। | ৪. সাইটোপ্লাজম পরিচিত সব কোষে পাওয়া যায়। |
৫. নিউক্লিওপ্লাজম নিউক্লিয়াসের রস যা নিউক্লিওলাস ধারণ করে | ৫. সাইটোপ্লাজম কোষের একটি তরল ভর যা কোষের অর্গানেল দ্বারা গঠিত। |
৬. নিউক্লিওপ্লাজম রাইবোসোম গঠনের স্থান। | ৬. সাইটোপ্লাজম রাইবোসোমের কার্যকারিতার স্থান। |
৭. নিউক্লিওপ্লাজম পারমাণবিক বিভাজনের সময় মুক্তি পায় এবং পারমাণবিক ঝিল্লি গঠনের পরে পুনরায় পূরণ করা হয়। | ৭. সাইটোপ্লাজম সাইটোকাইনেসিসের সময় এটি দুটি কোষে বিভক্ত হয়। |
৮. নিউক্লিওপ্লাজমের বাইরের দিকে ডবল মেমব্রেন এনভেলপ দ্বারা আবৃত থাকে যাকে নিউক্লিয়ার এনভেলপ বলে। | ৮. সাইটোপ্লাজমের বাইরের অংশটি পরিষ্কার এবং জেলের মতো তাই একে ইক্টোপ্লাজম বলে। |
৯. নিউক্লিওপ্লাজম এন্ডোমেমব্রেন অনুপস্থিত।। | ৯. সাইটোপ্লাজম ঘন তন্তুযুক্ত ল্যামিনা অনুপস্থিত। |
১০. নিউক্লিওপ্লাজমে তিনটি গঠন থাকে- ক্রোমাটিন, ম্যাট্রিক্স এবং নিউক্লিওলাস। | ১০. সাইটোপ্লাজমের অনেকগুলি অর্গানেল এবং সহায়ক কাঠামো রয়েছে। |
১১. নিউক্লিওপ্লাজম অল্প পরিমাণে খনিজ, চিনি এবং অ্যামিনো অ্যাসিড ধারণ করে। প্রচুর পরিমাণে নিউক্লিওসাইড, নিউক্লিওটাইড, প্রোটিন এবং এনজাইম রয়েছে। | ১১. সাইটোপ্লাজমের তরল অংশে খনিজ পদার্থ, নিউক্লিওটাইডস, অ্যামিনো অ্যাসিড, শর্করা, প্রোটিন এবং এনজাইমের মতো অনেক রাসায়নিক পদার্থ থাকে। |
১২. নিউক্লিওপ্লাজম হল কোষের অংশ, যেটিতে সাইটোপ্লাজমিক গঠন এবং কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য জেনেটিক উপাদান রয়েছে। | ১২. সাইটোপ্লাজম হল কোষের একটি অংশ যা বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ এবং কাজের সাথে যুক্ত। |