লবণ কম খান এবং আপনার হার্টকে সুরক্ষিত রাখুন।

আমাদের খাদ্য তালিকায় লবণের প্রয়োজন রয়েছে। লবণ আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে থাকে।

দেহের কোষগুলোকে সবল রাখতে, রক্তচাপ ঠিক রাখতে, গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ট্রাক্ট এবং নার্ভ সিস্টেম ঠিক রাখতে, হার্ট সচল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু দুর্ভ্যাগ্যবশতঃ আমরা লবণ বেশি খেয়ে থাকি।

প্রদিতিন কতটুকু লবণ খাওয়া উচিত

আমেরিকাতে একজন পূর্ণ বয়স্ক ব্যাক্তির জন্য প্রতিদিন ২৩০০ মিমিগ্রাম (২.৩ গ্রাম) লবণ খেতে বলা হয়েছে।

কিন্ত বয়স ৫০-এর বেশি হলে এবং হার্ট, কিডনি, ডায়াবেটিস, প্রেসার এর সমস্যা থাকলে ১৫০০ মিলিগ্রাম (১.৫ গ্রাম) বা এর কম লবণ খেতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মার্কিন হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা এর আগে বহুবার দাবি করেছে, কাঁচা লবণ মস্তিষ্কের নিউরোনকেও প্রভাবিত করে। এর প্রভাবে কোলন ক্যান্সার ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের মতো মারণরোগও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।

আমরা কেন লবণ বেশি খাই?

লবণ ছাড়া কোনো খাবারই যেন বাঙ্গালীর মুখে ভালো লাগে না। খাবার খেতে গেলে আগেই আমরা খাবারের স্বাদের দিকে গুরুত্ব দেই। খাবারে লবণ হয়নি এটা কি খাওয়া যাই।

একদিকে স্বাদ-এর বিষয় অন্যদিকে অভ্যাস। এই স্বাদ আর অভ্যাস এর কারণে আমরা অতিরিক্ত লবণ খেয়ে ফেলছি।

আসলে আমরা অনেকেই জানিনা লবণটা আসলে কী এবং কিভাবে এটা আমাদের ক্ষতি করছে। এটা জানতে পারলে অবশ্যই আমরা লবণ খাওয়া কমিয়ে দেবো। স্বাদ একটু কম হলে ক্ষতি নেই এবং অভ্যাসটাও আস্তে আস্তে পরিবর্তন হয়ে যাবে।

লবণটা আসলে কি?

এখন দেখা যাক লবণটা আসলে কি? সোডিয়াম শব্দটির সাথে আমরা কম বেশি পরিচিত। অনেকে হয়তো শুনে থাকবেন। লবণের প্রাইমারি উপাদান হলো সোডিয়াম এবং ক্লোরাইড। আপনি লবণ বেশি খাবেন মানে সোডিয়াম শরীরে বেশি জমা হবে।

শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়ামের উপস্থিতি কিডনির জন্য ক্ষতিকর। আমাদের শরীরের ছাঁকনি কিডনি আর কতো ছাঁকবে। সেতো পরিষ্কার করতে করতে দূর্বল হয়ে পড়বে।

লবণ বেশি খেলে কি ক্ষতি?

  • লবণ বেশি খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা – সহ নানা অসুখ শরীরে বাসা বাঁধবে।
  • লবণের সোডিয়াম যে কিডনির ক্ষতি করে এমনই নয়, ওবেসিটি বা স্থূলতার জন্যও অনেকটাই দায়ী।
  • হার্টের রোগ বিশেষ করে যারা ইস্কিমিয়ায় ভোগেন এমন মানুষদের জন্য অতিরিক্ত লবণ ক্ষতি করে।
  • অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে হার্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে জর্জিয়াতে সবথেকে বেশি মানুষ মারা যায়।
  • অন্যদিকে পূর্ব এবং মধ্য ইউরোপ এর ন্যায় পূর্ব এবং দক্ষিণ এশিয়াতে এর ফলে মৃত্যুহার বেশি।

এর থেকে পরিত্রান পেতে হলে আমাদের লাইফস্টাইল চেঞ্জ-এর পাশাপাশি নিম্ললিখিত কাজগুলো করতে হবে :

আমাদের করণীয় কী?

  • প্রসেসেড এবং লবণ দিয়ে প্রিসার্ভড করা খাবার না খেয়ে ফ্রেশ খাবার অর্থাৎ টাটকা খাবার খান।
  • পছন্দ করুন কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার।
  • উচ্চ সোডিয়াম খাবার যেমনঃ সয়া সস, লবণযুক্ত সালাদ, রেলিশ, মাস্টার্ড, কেচাপ, sauches/dips ব্যবহার সীমিত রাখুন।
  • খাবারের রেসিপিতে লবণের ব্যবহার সল্প করুন।
  • রুটি, বিস্কুট-এ বেশি সোডিয়াম থাকে। আজকাল অনেক কোম্পানির প্যাকেটজাত রুটি, বিস্কুটে প্রচুর পরিমানে সোডিয়াম পাওয়া যায় যেটা ক্ষতিকর।

উৎস:
https://www.hsph.harvard.edu/nutritionsource/salt-and-sodium/sodium-health-risks-and-disease/