ছয় ঋতুর দেশ।

আমাদের দেশটা কতো সুন্দর। তার নানা রূপ। চারপাশে সবুজ আর সবুজ। মাথার উপর নীল আকাশ। রুপালি ফিতার মতো নদী বয়ে যায়।

সকালে সূর্য ওঠে। নরম আলোয় চারদিক হেসে ওঠে। দুপুরে রোদ কড়া হয়। বিকালে রোদ সোনালি। সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশ রঙিন হয়ে ওঠে। রাত কখনো অন্ধকার, কখনো চাঁদের আলোয় ঝলমলে।

এভাবে একদিন হয়। সাত দিনে হয় এক সপ্তাহ। আর ত্রিশ দিনে এক মাস। বারো মাসে হয় এক বছর। দুই মাসে একটি ঋতু। আমাদের ঋতু হচ্ছে ছয়টি।

বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস নিয়ে গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে খুব গরম পড়ে। খাল বিল শুকিয়ে ফেটে যায়। কখনো কখনো প্রচন্ড ঝড় হয়। তখন জানমালেরও ক্ষতি হয়।

আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস নিয়ে বর্ষা ঋতু। আকাশে তখন ঘন কালো মেঘের আনাগোনা। যখন তখন ঝম ঝম করে বৃষ্টি নামে। খালবিল পানিতে থই থই করে। ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাং। কদম আর কেয়ার গন্ধে বাতাস ভরপুর থাকে।

ভাদ্র ও আশ্বিন মাস মিলে হয় শরৎ ঋতু। তখন নতুন ধানের শীষ বাতাসে মাথা দোলায়। এ সময় আকাশের রং হয়ে ওঠে গাঢ় নীল। তুলোর মতো হালকা সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। নদীর ধারে কাশফুলের দোলা লাগে। বাতাসে শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়।

কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস মিলে হেমন্ত ঋতু। তখন মাঠে মাঠে ধান পাঁকে। ঘরে ঘরে নতুন চালের পিঠা, পায়েস তৈরির উৎসব হয়। এ উৎসবকে বলে নবান্ন। এ সময় একটু একটু ঠান্ডা পড়তে থাকে। সকালে ঘাসের ডগায় হালকা শিশির জমে।

পৌষ ও মাঘ মাস নিয়ে শীত ঋতু। এ সময় খেঁজুরের রস ও গুড় পাওয়া যায়। ঘরে ঘরে পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। চারপাশ ঢাকা থাকে ঘন কুয়াশায়। সকালে গাছপালা আর ঘাসের ডগায় বেশ শিশির জমে। শীতের শেষ দিকে শুরু হয় গাছ থেকে পাতা ঝরা।

ফাল্গুন ও চৈত্র মাস মিলে বসন্ত ঋতু। এ সময় প্রকৃতি নতুন রূপে সাজে। নানান ফুলে ভরা থাকে গাছ। শাখায় শাখায় পাখি গান করে। কোকিলের গানের সুরে মন ভরে যায়। বসন্তকে বলা হয় ঋতুর রাজা।