টুনটুনির বিয়ে।
এক গ্রামে বাস করতো এক গরীব কাঠুরিয়া। সংসার পরিচালনা করার জন্য তাকে বনে বনে কাঠ কাটতে যেতে হতো।পরিবারে সে, তার বউ ও একমাত্র ছেলে ছাড়া আর কেউই ছিল না।
অন্যদিকে কাঠুরিয়াও খুব বৃদ্ধ ছিল। জঙ্গল থেকে কাঠ কাটতে তার খুবই কষ্ট হতো। প্রতিদিনের মতো বৃদ্ধ কাঠুরিয়া বনে যাচ্ছিলো কাঠ কাটতে। এমন সময় তখন তার ছেলে তাকে দেখে বললো তোমাকে আর কাঠ কাটতে বনে যেতে হবে না।
এই বলে কাঠুরিয়ার ছেলে কাঠ কাটতে বনে চলে গেল। বনে গিয়ে সে একটি বড় বট গাছের ডাল কাটলো। ডাল কাটতে কাটতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়লো। তখন সে গাছের নিচে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর সে শুনতে পেল পাশ থেকে কে যেন চিৎকার করছে। চিৎকার শুনে সে দেখলো একটি টুনটুনি পাখি গাছের ডালের নিচে চাপা পড়ে আছে।
এই দেখে কাঠুরিয়ার ছেলে পাখিটিকে ডালের নিচ থেকে উদ্ধার করলো। পাখিটি খুবই খুশি হল। পাখিটি তখন কাঠুরিয়ার ছেলেকে বললো তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য। এই দেখে ছেলেটি পাখিটিকে বললো তুমি কথাও বলতে পার। তখন টুনটুনি পাখিটি বললো আমি কোনো সাধারণ পাখি নই।
আমি তোমাদের মতোই এক সাধারণ মানুষ। এক ঋষিমুনির অভিশাপে আমার এই অবস্থা। এই শুনে ছেলেটি বললো এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কি কোনো উপায় নাই। তখন পাখিটি বললো আমাকে যেই মন্ত্র দিয়ে পাখি বানিয়েছি, সেই মন্ত্রটি একটি মাটির হাঁড়ির ভেতর রাখা আছে।
আর সেই হাঁড়িটি ভেঙে ফেললেই আমি মুক্তি পাবো। এই শুনে কাঠুরিয়ার ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যায় ও হাঁড়িটি ভেঙে ফেলে। আর তখন মেয়েটি পাখির রূপ থেকে মুক্তি পেয়ে যায়।
মেয়েটি তখন অনেক খুশি হয় আর তাকে বলে আমার বাবা এই গ্রামেরই একজন জমিদার। আর আমি তার একমাত্র সন্তান। আমি তোমার এই আচরণ দেখে খুবই মুদ্ধ হয়েছি। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
এই শুনে তখন কাঠুরিয়ার ছেলেটি বললো আমিতো এক গরীব কাঠুরে। তখন মেয়েটি বললো এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। তারপর কিছুদিনের মধ্যে তাদের দুজনের বিয়ে হয়ে যায়। আর তারা সুখে শান্তিতে জীবনযাপন করতে থাকে।