জীববিজ্ঞান (Biology) কাকে বলে? জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বর্ণনা করো।
জীববিজ্ঞান (Biology) কাকে বলে?
জীববিজ্ঞান (Biology) বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীব ও জীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। যে শাখায় জীবের গঠন, জৈবনিক ক্রিয়া এবং জীবনধারণ সম্পর্কে সম্যক বৈজ্ঞানিক জ্ঞান পাওয়া যায় তাকে জীববিজ্ঞান (Biology) বলে।
আধুনিক জীববিজ্ঞান খুব বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র, যেটির অনেক শাখা-উপ-শাখা আছে। আধুনিক জীববিজ্ঞান বলে, কোষ হচ্ছে জীবনের মূল একক, আর জিন হলো বংশগতিবিদ্যার মূল একক।
জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা
জীববিজ্ঞানকে দুইটি শাখাতে ভাগ করা যায় যথা: ১. উদ্ভিদবিজ্ঞান, ২. প্রাণিবিজ্ঞান।
জীবের কোন দিক আলোচনা করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানকে আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়: ১. ভৌত জীববিজ্ঞান, ২. ফলিত জীববিজ্ঞান।
ভৌত জীববিজ্ঞান সমূহঃ
কোষবিদ্যা (Cytology): এই শাখায় জীবদেহের গঠন কার্যাবলী ও বিভাজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
অঙ্গসংস্থান (Morphology): এখানে জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা করা হয়। দেহের বাইরের বর্ণনার বিষয়কে বহিরঙ্গ সংস্থান এবং দেহের ভিতরের বর্ণনার বিষয়কে অন্ত অঙ্গসংস্থান বলা হয়ে থাকে।
জীবভূগোল (Biogeography): এই শাখায় পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমারেখা, জীবের বিস্তৃতি ও অভিযোজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
শ্রেণিবিন্যাস বিদ্যা বা ট্যাক্সোনমি (Taxonomy): এখানে জীবের শ্রেণীবিন্যাস ও তার রীতি নীতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
এন্ডোক্রাইনোলজি (Endocrinology): এই শাখায় জীবদেহের অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিতন্ত্র, রোগ এবং হরমোন নামক সুনির্দিষ্ট জৈব যৌগের নিঃসরণ নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
শরীর বিদ্যা (Physiology): এখানে জীবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জৈব-রাসায়নিক কার্যক্রম যেমন, সরণ সালোকসংশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বাস্তুবিদ্যা (Ecology): এই শাখায় প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
হিস্টলজি (Histology): এখানে জীব দেহের টিস্যুসমূহকে গঠন বিন্যাস এর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
বিবর্তন বিদ্যা (Evolution): এই শাখায় পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ, জীবের বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশের তথ্যসমূহের আলোচনা করা হয়।
ভ্রূণবিদ্যা (Embryology): জনন কোষের উৎপত্তি নিষিক্ত জাইগোট থেকে ভ্রূনের সৃষ্টি, গঠন বিকাশ প্রভৃতির নিয়ে ভ্রূণবিদ্যা শাখায় আলোচনা করা হয়।
বংশগতি বিদ্যা বা জেনেটিক্স (Genetics): এই শাখায় জিন ও জীবের বংশগতি বা জেনেটিক্স ধারা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
ফলিত জীববিজ্ঞান সমূহঃ
জীবাশ্মবিজ্ঞান (Paleontology): এই শাখায় প্রাগৈতিহাসিক জীব এর বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
বায়োইনফরমেটিক্স (Bioinformation): এই শাখায় কম্পিউটার, প্রযুক্তি নির্ভর জীববিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য যেমন, ক্যান্সার বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
জীব পরিসংখ্যানবিদ্যা (Biostatistics): এখানে জীবপরিসংখ্যান বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
বন্যপ্রাণীবিদ্যা (Wildlife): এই শাখায় বন্যপ্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
পরজীববিদ্যা (Parasitology): এখানে পরজীবিতা, পরজীবী জীবের জীবন প্রণালী এবং রোগ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology): এই শাখায় মানব এবং পরিবেশের কল্যাণের জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
মৎস্যবিজ্ঞান (Fisheries): এখানে মাছ উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
ফার্মেসি (Pharmacy): এই শাখায় ওষুধ শিল্প ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
কীটতত্ত্ব (Entomology): এখানে কীটতত্ত্ব বিষয়ের উপকারিতা-অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
বন বিজ্ঞান (Forestry): এই শাখায় বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology): এখানে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া আণুবীক্ষণিক ছত্রাক এবং অন্যান্য অনুজীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান (Oceanography): এই শাখায় সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture): এখানে কৃষি বিষয়ক বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
পরিবেশ বিজ্ঞান (Environmental Science): এই শাখায় পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান (Medical Science): এখানে মানবদেহের রোগ, চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
জিন প্রযুক্তি (Genetic Engineering): এই শাখায় জিন ও জীবের বংশগতি বা জেনেটিক্স ধারা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
প্রাণরসায়ন (Biochemistry): এই শাখায় জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যপ্রণালী রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়ে থাকে।
