সুকুমার রায়ের হুঁকোমুখো হ্যাংলা কবিতা।

সুকুমার রায় (৩০ অক্টোবর ১৮৮৭ – ১০ সেপ্টেম্বর ১৯২৩) ছিলেন একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও ভারতীয় সাহিত্যে “ননসেন্স ছড়া”র প্রবর্তক। তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক।

হুঁকোমুখো হ্যাংলা

সুকুমার রায়

—————————

হুঁকোমুখো হ্যাংলা বাড়ি তার বাংলা
মুখে তার হাসি নাই দেখেছ?
নাই তার মানে কি? কেউ তাহা জানে কি?
কেউ কভু তার কাছে থেকেছ?
শ্যামাদাস মামা তার আফিঙের থানাদার,
আর তার কেউ নাই এ-ছাড়া—
তাই বুঝি একা সে মুখখানা ফ্যাকাশে,
ব’সে আছে কাঁদ’-কাঁদ’ বেচারা?
থপ্ থপ্ পায়ে সে নাচ্‌ত যে আয়েসে,
গালভরা ছিল তার ফুর্তি,
গাইতো সে সারাদিন ‘সারে গামা টিম্ টিম্’
আহ্লাদে গদ-গদ মূর্তি।
এই তো সে দুপ’রে বসে ওই উপরে,
খাচ্ছিল কাঁচকলা চট্‌কে—
এর মাঝে হল কি? মামা তার মোলো কি?
অথবা কি ঠ্যাং গেল মট্‌কে?
হুঁকোমুখো হেঁকে কয়, “আরে দূর, তা তো নয়,
দেখছ না কি রকম চিন্তা?
মাছি মারা ফন্দি এ যত ভাবি মন দিয়ে—
ভেবে ভেবে কেটে যায় দিনটা।
বসে যদি ডাইনে, লেখে মোর আইনে—
এই ল্যাজে মাছি মারি ত্রস্ত;
বামে যদি বসে তাও, নহি আমি পিছপাও,
এই ল্যাজে আছে তার অস্ত্র।
যদি দেখি কোনো পাজি বসে ঠিক মাঝামাঝি
কি যে করি ভেবে নাহি পাই রে—
ভেবে দেখি একি দায় কোন্ ল্যাজে মারি তায়
দুটি বৈ ল্যাজ মোর নাই রে।”