রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই তীরে কবিতা।

একটি নদী। সেই নদীর দুই তীরে বাস করে দুজন মানুষ। বালুচরে বসবাসকারী মানুষটি অপর তীরের বন এলাকায় বসবাসকারী মানুষটির উদ্দেশে বলছে তাঁর ভালো লাগা সেই তীরের কথা। যেই তীরে ঘন ছায়াঘেরা বন রয়েছে। রয়েছে পাতার ছাউনিতে ঢাকা এক অপরূপ শ্যামল প্রকৃতি। পাতায় ঘেরা ছায়াসুনিবিড় বনের সৌন্দর্যে ওপারের মানুষটি মুগ্ধ। দুই তীরের দুজন দুভাবে মুগ্ধ—ঠিক এই কথাই এখানে বোঝানো হয়েছে।

দুই তীরে

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

—————————

আমি ভালোবাসি আমার
নদীর বালুচর,
শরৎকালে যে নির্জনে
চকাচকীর ঘর।

যেথায় ফুটে কাশ
তটের চারি পাশ,
শীতের দিনে বিদেশী সব
হাঁসের বসবাস।

কচ্ছপেরা ধীরে
রৌদ্র পোহায় তীরে,
দু – একখানি জেলের ডিঙি
সন্ধেবেলায় ভিড়ে।

তুমি ভালোবাস তোমার
ওই ও পারের বন,
যেথায় গাঁথা ঘনচ্ছায়া
পাতার আচ্ছাদন।

যেথায় বাঁকা গলি
নদীতে যায় চলি,
দুই ধারে তার বেণুবনের
শাখায় গলাগলি।

সকাল – সন্ধেবেলা
ঘাটে বধূর মেলা,
ছেলের দলে ঘাটের জলে
ভাসে ভাসায় ভেলা।

(সংক্ষেপিত)