বাংলা বর্ণমালায় স্পর্শবর্ণ, খন্ডব্যাঞ্জন ধ্বনি, কম্পনজাত ধ্বনি ও অন্তঃস্থ ধ্বনি কয়টি ও কি কি?

ব্যঞ্জনবর্ণ হলো এমন কিছু বর্ণ যারা অন্য কোনো বর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে না। বিশ্বের প্রতিটি ভাষায় এধরনের কিছু বর্ণ রয়েছে। বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা মোট ৩৯টি।

যেসব বর্ণ উচ্চারিত হওয়ার সময় মুখগহ্বরের কোথাও না-কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হয় তাদের বলা হয় ব্যঞ্জনবর্ণ। ব্যঞ্জনবর্ণগুলো উচ্চারিত হতে অন্য বর্ণের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। এরা অন্যান্য বর্ণের সাহায্যে (মূলতঃ স্বরবর্ণের) উচ্চারিত হয়ে থাকে।

বাংলা বর্ণমালায় খন্ডব্যঞ্জণ ধ্বনি ১টি (ৎ)।

বাংলা বর্ণমালায় কম্পনজাত ধ্বনি ১টি (র)।

বাংলা বর্ণমালায় অন্তঃস্থ ধ্বনি ৪টি (ব, য, র, ল)

স্পর্শ বর্ণ :—ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি বর্ণ উচ্চারণকালে মুখ গব্বরের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করে বলে এদের স্পর্শবর্ণ বলে।

স্পর্শ বর্ণগুলি অল্পপ্রাণ বর্ণ, মহাপ্রাণ বর্ণ, অঘোষ বর্ণ, ঘোষ বর্ণ ও অনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ—এই কয় ভাগে বিভক্ত।

উচ্চারণ রীতির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ব্যঞ্জনবর্ণ গুলিকে ৫ ভাগে ভাগ করা যায়।১) মহাপ্রাণবর্ণ ২) অল্পপ্রাণবর্ণ ৩) ঘোষবর্ণ ৪) অঘোষবর্ণ ৫) অনুনাসিক বা নাসিক্যবর্ণ

১) মহাপ্রাণবর্ণ:- প্রাণ শব্দের অর্থ নিঃশ্বাস বায়ু, প্রতিটি বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণ উচ্চারণের সময় হ জাতীয় নিঃশ্বাসবায়ু জোরে বেরিয়ে আসে। তাই এদের মহাপ্রাণবর্ণ বলে। যেমন খ -( ক+হ), ঘ- (গ+হ) ইত্যাদি।

২) অল্পপ্রাণবর্ণ: – প্রতিটি বর্গের প্রথম ও তৃতীয় বর্ণগুলি উচ্চারণের সময় হ জাতীয় নিঃশ্বাস বায়ু বেরিয়ে আসে না তাই এদের অল্পপ্রাণবর্ণ বলে। যেমন – ক, গ ইত্যাদি।

৩) ঘোষবর্ণ:- ঘোষ শব্দের অর্থ গাম্ভীর্য। প্রতি বর্গের তৃতীয়, চতুর্থবর্ণের উচ্চারণ গাম্ভীর্যপূর্ণ তাই এদের ঘোষবর্ণ বলে।যেমন-গ,ঘ,ইত্যাদি।

৪) অঘোষবর্ণ: – প্রতিটি বর্গের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ণের উচ্চারণ মৃদু ও গাম্ভীর্যহীন তাই এদের অঘোষবর্ণ বলা হয়।যেমন- ক,খ ইত্যাদি।

৫) অনুনাসিক বা নাসিক্যবর্ণ:- প্রতিবর্গের শেষবর্ণের উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাসবায়ু আংশিকভাবে নাসিকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং এর ফলে উচ্চারণ কিছুটা নাকিসুরের হয়।তাই এদের অনুনাসিক বা নাসিক্যবর্ণ বলে। যেমন-ঙ,ঞ ইত্যাদি।