খরগোশ ও কচ্ছপের গল্প।
একদা এক বনে এক খরগোশ আর কচ্ছপ পাশাপাশি বাস করত। দুই জনের মধ্যে বেশ বন্ধুত্বও ছিল। কিন্তু মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাটি যে হতো না তা নয়। খরগোশ খুব জোরে ছোটে। যেন বাতাসের আগেই ছুটে চলে। আর কচ্ছপ? সে চলে ধীরে ধীরে হেলেদুলে।
কচ্ছপের ওই হাঁটা দেখে একদিন খরগোশটি আর চুপ করে থাকতে পারলো না। সে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছিল আর মুখ ফসকে বলেও ফেলল, তুমি কি হাঁটাই শেখনি।
কচ্ছপকে এ রকম ব্যঙ্গ করতে শুনে কচ্ছপটি খরগোশকে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, এত হাসার কি আছে? এসো প্রতিযোগিতায় নামো। তখন দেখা যাবে।
এই কথা শুনে হো হো করে খরগোশ হাসতে হাসতে বলল, প্রতিযোগিতা! তা কার সঙ্গে? তোমার সঙ্গে বলেই আবার হো হো করে হাসতে লাগল।
আচ্ছা, তুমি যখন নিজে মুখে বলছ তবে তো রাজি হতেই হয়। তাহলে কত দূর যাওয়ার প্রতিযোগিতা হবে আর কখন শুরু হবে?
কচ্ছপ বলল, এখনই। ওই যে ওই অনেক দূরে ওই নদীর ধারে একটা অশ্বত্থ গাছ দেখা যাচ্ছে, এসো দেখি ওইখানে কে আগে পৌঁছতে পারে?
অতএব শুরু হয়ে গেল প্রতিযোগিতা। জঙ্গলের অন্যান্য পশুপাখিও এই প্রতিযোগিতা দেখতে আসলো। খরগোশ একটু দৌড়েই পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখতে পেল কচ্ছপ অনেক পেছনে পড়ে আছে।
পাশেই একটা গাছের নিচে একটু ছায়া দেখে খরগোশ ভাবল, একটু বিশ্রাম নিলে ভালো হয়। এইখানে পৌঁছতে কচ্ছপের অনেক দেরি।
একটু বিশ্রাম নেয়া যাক। হঠাৎ ফুরফুর করে হাওয়া বইতে লাগল। গাছের ছায়ায় বসে মিষ্টির ফুরফুর হাওয়ায় খরগোশের ঘুম পেয়ে গেল। খরগোশ কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল তা নিজেই জানতে পারল না।
ওদিকে কচ্ছপ কিন্তু সমানে একটানা হেঁটে চলছিল। তেজি রোদ্দুর গ্রাহ্য না করে সে একটুও না থেমে হেঁটেই চলল। এদিকে বেলা পড়ে এলো। খরগোশের ঘুম ভাঙল এবার।
সে তখন আশপাশে তাকিয়ে কচ্ছপকে দেখতে না পেয়ে নদীর তীরের সেই অশ্বত্থ গাছটার দিকে ছুটতে থাকল। সেখানে গিয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে খরগোশ দেখল তার আগেই সেখানে কচ্ছপ পৌঁছে গেছে।
উপদেশ: ধীর ও স্থির ব্যক্তিরাই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করে।