কত সপ্তাহের আগে বাচ্চার ডেলিভারি বা সিজার করানো ভালো নয়? নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়?
৩৭ সপ্তাহের আগে বাচ্চার ডেলিভারি বা সিজার করানো ভালো নয়। অনেক মায়েরা প্রশ্ন করেন বা জানতে চান, স্বাভাবিক প্রসব বা নরমাল ডেলিভারি বা যদি সিজার করতে চায় তাহলে সেটা কত সপ্তাহে করলে ভালো হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩৭ সপ্তাহ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে বেশীরভাগ শিশুর নরমাল ডেলিভারি হয় বা করানো উচিত বা সিজার করলেও এই সময়ের মধ্যে করানো উচিত। এই ৫ সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো সময় জন্ম নিলে তাকে স্বাভাবিক বলে যাবে।
সাধারণতঃ শিশু যদি ৩৭ সপ্তাহ বা ২৫৯ দিনের আগে জন্মগ্রহণ করে তাহলে এই অকালে বা প্রিম্যাচিওর বাচ্চার শারীরিক বিভিন্ন ঘাটতি থাকে। ওজন কম হয়। শরীরে ফ্যাট কম থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এমনকি অনেক সময় বাচ্চা মারাও যায়।
প্রথম দিকে জন্মানো শিশুর মায়ের জরায়ুতে বেড়ে ওঠার ও ওজন বাড়ানোর জন্য কম সময় থাকে এবং ভ্রূণের ওজনের বেশিরভাগ অংশ মায়ের গর্ভাবস্থার শেষ অংশে প্রাপ্ত হয়।
আবার গর্ভাবস্থা যদি ৪২ সপ্তাহের বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তাকে দীর্ঘায়িত গর্ভাবস্থা বলে। দীর্ঘায়িত গর্ভাবস্থা হলে বিভিন্ন প্রকার জটিলতার আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়?
এমন কোনো ম্যাজিক সংখ্যা নেই যে, এই দিনেই নরমাল ডেলিভারি হবে। এক এক জনের শারীরিক ও মানসিক কন্ডিশন বা অবস্থা এক এক রকমের এবং পরিবেশের হাজারো রোগ জীবাণু একেক সময় একেক ভাবে আমাদের প্রভাবিত করে।
গর্ভের মোট সময়কাল ধরা হয় সাধারণতঃ ৪০ সপ্তাহ বা ২৮০ দিন বা ৯ মাস ৭ দিন। শেষ মাসিকের প্রথম দিনটিকে গর্ভধারণের প্রথম দিন ধরে প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
যেমনঃ গর্ভধারণের পূর্বে শেষ মাসিকের প্রথম দিন যদি ৩০ নভেম্বর হয় তবে প্রসবের সম্ভাব্য তারিক হবে ৭ সেপ্টেম্বর। এক্ষেত্রে, প্রতি মাসকে ৩০ দিন হিসাবে ধরা হয়। এই তারিখের ২-৪ দিন আগে বা পরে যে কোনো তারিখে নরমাল ডেলিভারি হয়ে থাকে।
নয় মাস বা দশ মাস যেটা ধরেই হিসাব করেন না কেন, গর্ভাবস্থায় আপনার প্রথম আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান আপনাকে অনেকটা সঠিক তারিখ দিতে পারবে। যে ডাক্তার বা সোনোগ্রাফার আলট্রাসাউন্ড করে থাকেন তিনি শিশুর মাথা থেকে পা পর্যন্ত পরিমাপ করেন।
এটা অনেকটা আসল তারিখটা বলতে সক্ষম যে, আপনি কবে গর্ভধারণ করেছেন। সাধারণতঃ গর্ভাবস্থার ১১-১৪ সপ্তাহ-এর ভিতর আলট্রাসাউন্ড টেস্ট করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে করা আলট্রাসাউন্ড ফলাফল সাধারণতঃ সঠিক হয় কারণ এই সময়টাতে গর্ভের ভ্রুণ সবার ক্ষেত্রে একই হারে বাড়ে। গর্ভের সময় বাড়ার সাথে সাথে এই বৃদ্ধির হার একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়।
গর্ভাবস্থার শেষের দিকে করা আলট্রাসাউন্ডে সঠিক ডিউ ডেট পাওয়া যাই না এবং তা প্রথম আলট্রাসাউন্ড থেকে ভিন্ন হয়। উপরোক্ত আলোচনা থেকে নরমাল ডেলিভারি বা সাধারণ ডেলিভারি কোন সময়ে হতে পারে বা কোন সময় থেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে সেটা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।
ভয় পাবেন না। আগেই বলেছি, প্রতিটা মানুষ যেমনঃ একজন আরেকজন থেকে পৃথক তেমনি প্রতিটা গর্ভবতী নারীর প্রসবকালীন সময়সীমা, প্রসবের ব্যাথার সময়ের পরিধি বা ধরণও পৃথক।