সুইসাইড কি? মানুষ সুইসাইড কেন করে? কোন লক্ষণগুলি মানুষকে আত্নহত্যার দিকে নিয়ে যায়।

আত্মহত্যা বলতে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবনকে নিজেই শেষ করে দেওয়া বোঝায়। Suicide is intentional taking of one’s own life .

বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রচুর মানুষ আত্নহত্যা করে। সুদূর অতীত কাল থেকে এটি হয়ে আসছে। কিন্তু প্রশ্নের বিষয় বা ভাবার বিষয় হলো যে,  সুইসাইড বা আত্নহত্যা কমবে কি বেড়েই চলেছে। বর্তমান সময়েও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

উনিশ শতকের শেষের আগে, বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশগুলিতে আত্মহত্যা আইনত একটি অপরাধমূলক কাজ হিসাবে সংজ্ঞায়িত হয়েছিল।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর সুইসাইড করছে প্রায় দশ হাজার।  অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ২৭ জন। এইটুকু একটা দেশে প্রতি ঘণ্টায় ১ জনের বেশি সুইসাইড করছে।

এত অভিমানী মানুষ ?…. ..এই ব্যাপার গুলো কেন ঘটে ? মানুষ সাধারণত একটি বিশেষ ঘটনায় সুইসাইড করে না। এই রোগটি সে তার ভেতরে অনেক দিন থেকে লালন করে। মানুষের অনুভূতি অনেক বেশি।

প্রতিটি মানুষ একজন লেখক, একজন গায়ক,  একজন কবি,  একজন নেতা। এই পৃথিবীতে আপনার উপস্থিতি অনেক বেশি প্রয়োজন। অভিমান করে চলে যাবার জন্য আপনার জন্ম হয়নি।

কোনও ব্যক্তি ভেতরের দিক থেকে কী অনুভব করছেন তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না, তাই যখন কেউ আত্মঘাতী চিন্তাভাবনা করে তখন তা সনাক্ত করা সর্বদা সহজ নয়।

জাপানে “সি অফ ট্রি” নামে একটি বন আছে। যেখানে কিছুদূর হাঁটলেই দেখতে পাবেন গাছ গুলোর ডালে মানুষের কঙ্কাল ঝুলছে! প্রতি বছর এখানে প্রচুর মানুষ সুইসাইড করতে আসে! কেউ কেউ অনেক দূর দেশ থেকে টাকা খরচ করে মরতে আসে! মানুষ নিরিবিলিতে মারা যেতে পছন্দ করে।

মৃত্যুর জন্য এই জায়গাটি বেছে নেয় কেন জানেন? যেন কেউ কখনো খুঁজে না পায়।  মানুষ বড় অভিমানী প্রাণী।  মনোবিজ্ঞানীরা এখন বলছে প্রতিটি সুইসাইডের রক্তে তিনটি element মিশে থাকে।

অর্থাৎ এই তিনটি কারণেই মানুষ বেশি আত্মহত্যা করে থাকে :

১-অভিমান
২-হতাশা
৩-আত্মবিশ্বাসের অভাব।

pathetic

আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর সুইসাইড প্রতিরোধের মতে, আত্মহত্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর দশতম প্রধান কারণ এবং প্রতি বছর প্রায় ৪৭,০০০ আমেরিকানকে হত্যা করে।

আত্মঘাতী আচরণ বলতে নিজের নিজের জীবন শেষ করার বিষয়ে কথা বলা বা পদক্ষেপ নেওয়া বোঝায়। আত্মঘাতী চিন্তাভাবনা এবং আচরণগুলি মানসিক রোগ হিসাবে বিবেচনাও করা যেতে পারে।

কিছু কর্মকান্ড থেকে আগে থেকে আছ করা যায়। তবে, কিছু বাহ্যিক কারণ রয়েছে,

যে লক্ষণগুলি কোনও ব্যক্তিকে আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যায় :

হতাশ, আটকা পড়ে বা একা অনুভব করা।

মনে মনে ভেবে নিয়েছে আমার বেঁচে থাকার কোনো কারণ নেই।

একটি উইল করা বা ব্যক্তিগত সম্পত্তি দূরে প্রদান।

বন্দুক কেনার মতো ব্যক্তিগত ক্ষতি করার উপায় অনুসন্ধান করা।

খুব বেশি বা খুব কম ঘুমানো।

খুব অল্প পরিমাণে খাওয়া বা খুব বেশি খাওয়া, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায় বা হ্রাস পায়।

অতিরিক্ত মদ বা মাদক সেবন সহ বেপরোয়া আচরণে জড়িত।

অন্যের সাথে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এড়ানো।

ক্রোধ বা প্রতিশোধ নেওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করা।

চরম উদ্বেগ বা আন্দোলনের লক্ষণ।

নাটকীয় মেজাজে থাকা।

উপায় হিসাবে আত্মহত্যা সম্পর্কে কথা বলা।

প্রতিটি লক্ষণই ভীতিকর। তবে সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া এবং কাছের মানুষজন যদি আগে থেকে আঁচ করতে পারে তাহলে বুঝিয়ে বা কাউন্সেলিং করে    আত্মহত্যার প্রচেষ্টা বা মৃত্যু প্রতিরোধে সহায়তা করা বা ভূমিকা রাখা যেতে পারে।