যেসব ফল ও সবজিগুলোর খোসাসহ খাওয়া উচিত।
ফল এবং সবজির খোসা সাধারণত ফল ও সবজির ভিতরের অংশ থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ বেশি থাকে। ফলের খোসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা ফলের শাষ এর তুলনায় ৩২৮ গুণ বেশি।
ফল খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী সে কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু আমরা বেশির ভাগ ফলের খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে থাকি। তবে এমন কিছু ফল ও সবজি রয়েছে যা খোসা না ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো।
তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক, কোন ধরনের ফল ও সবজি খোসাসহ খাওয়া উচিত-
মিষ্টি আলু:
মিষ্টি আলু পোড়া বা তরকারিতে দিয়ে যেভাবেই খাইনা কেন সবসময় আমরা খোসা ফেলে দিয়ে থাকি।
কিন্তু মিষ্টি আলুর খোসায় রয়েছে ভিটামিন “সি”, বিটা ক্যারোটিন ও পটাশিয়াম।
সুস্বাদু মিষ্টি আলুর খোসা ছাড়িয়ে খেলে এই উপাদানগুলি কিন্তু বাদ পড়ছে আপনার ডায়েট থেকে। তাই মিষ্টি আলু সবসময় খোসাসহ খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
তরমুজ:
আমরা তরমুজের মিষ্টি অংশটা অর্থাৎ লাল অংশটা খেয়ে খোসা সহ সাদা অংশটা ফেলেদি। কারণ তরমুজের সাদা অংশ অর্থাৎ পাশটা স্বাদে লবনাক্ত ও টকটক।
কিন্তু তরমুজের এই অংশে রয়েছে আরও বেশী পরিমাণে ভিটামিন “সি”, “বি”৬ ও সিট্রুলিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড যা রক্ত সঞ্চালনের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
বেগুন:
অনেকে বেগুন খাওয়ার সময় খোসা ফেলে খায়। কিন্তু জানেন কি বেগুনের খোসাতে রয়েছে নাসুনিন নামের একটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট। তাই খোসাসহ বেগুন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
শসা:
শসার খোসা ফেলে দিয়ে খেতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু শসার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “কে”, ফাইবার এবং পটাসিয়াম।
নাশপাতি:
এই ফলের খোসা ছাড়ালে হারাতে হবে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলটির মোট পুষ্টি ও ফাইবারের প্রায় অর্ধেকটাই থাকে এর খোসায়।
তাই খোসাসহ ফলটি খাওয়াই সবচাইতে ভালো। খাওয়ার আগে ভালভাবে ধুয়ে নিন।
গাজর:
গাজরের খোসার ওপর একটু ময়লা অনুভব হলে অনেকেই গাজরের উপরের পাতলা খোসা ফেলে দিয়ে গাজর খেয়ে থাকেন।
কিন্তু গাজরের খোসাতেই অনেক বেশী পুষ্টি উপাদান থাকে যা আমাদের চোখ, ত্বক, কোলনের সুরক্ষা করে। তাই ভালো করে ধুয়ে নিন, কিন্তু খোসা ফেলে দেবেন না।
আলুবোখরা:
মানসিক চাপ দূর করতে সুস্বাদু এই ফল অত্যন্ত কার্যকর। এর খোসাতে থাকে ‘ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড’ নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন “সি”।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও অন্যান্য হজমের সমস্যা দূর করতে খোসাসহ আলুবোখরা খাওয়া বেশ উপকারী।
আলু:
যেসব সবজি বা ফল খোসাসহ খাওয়া উচিত্ তার মধ্যে অন্যতম আলু। তাই আলু খোসা ফেলে দিয়ে খাওয়ার চেয়ে খোসাসহ খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়।
আলুর খোসায় রয়েছে ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন “সি”, পটাশিয়াম এবং ফোলেট।
পুষ্টিবিদদের মতে, আলুর খোসার নিচে নাকি সবচেয়ে বেশি পুষ্টি থাকে। তাই আলু সবসময় খোসাসহ খাওয়া উচিত।
টমেটো:
টমেটোর খোসাতে ফ্ল্যাভোনয়েড ন্যারেনজেনিন (naringenin) উচ্চ মাত্রায় রয়েছে, যা প্রদাহ হ্রাস করতে পারে এবং কিছু রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
অন্যান্য গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটো খোসা সহ রান্না করলে পুষ্টি উপাদান বেশি পাওয়া যায়।
জাম, চেরি বা আঙ্গুর:
জাম, চেরি এবং আঙ্গুর খোসাতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। আঙ্গুরের খোসা উপকারী কারণ আঙ্গুরের খোসাতে সর্বোচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
মনে রাখতে হবে, খোসাসহ খাওয়ার আগে ফল ও সবজি অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে কীটনাশকযুক্ত ফল বা সবজির খোসা খাওয়ার থেকে না খাওয়াই ভালো।