দাদ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়।
দাদ ত্বকে একটি লাল, খসখসে, বৃত্তাকার চুলকানি সৃষ্টি করে। সময়ের সাথে সাথে, এটি একটি বৃত্ত বা একটি রিং আকার নেয়। এখান থেকেই রিংওয়ার্ম (Ringworm) বা “দাদ” নামটি এসেছে।
দাদ একটি ছোঁয়াচে চর্মরোগ। সাধারণত শরীরের এক জায়গায় গোল চাকতির মত ফুসকুড়ি উঠে চুলকানি হয়। আর একেই দাদ বলে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দাদ হতে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘ডার্মাটোফাইটোসিস’ (Dermatophytosis)। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। সংক্রামক ব্যক্তির অর্থাৎ যার দাদ আছে তার কাপড়, গামছা, তোয়ালে ব্যবহার করলে দাদ হতে পারে।
দাদ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
নিচে দাদ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়গুলো দেওয়া হলো –
সাবান জল:
শরীরের অন্যান্য অংশে দাদ ছড়ানো বা সংক্রমিত হতে না পারে সে জন্য দাদ হওয়ার স্থান যতটা সম্ভব পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতিদিন ২-৩ বার সাবান এবং উষ্ণ পানি দিয়ে সংক্রামিত স্থানটি ভালোভাবে ধুতে হবে। এতে শরীরের অন্য স্থানে দাদ সংক্ৰমণ হবে না।
আপেল সিডার ভিনেগার:
আপেল সাইডার ভিনেগারে শক্তিশালী অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দাদ নিরাময়ে খুবই কার্যকরী। এটি ব্যবহার করার জন্য, নরম কাপড় বা তুলায় আপেল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়ে দাদ আক্রান্ত স্থানে ভালোভাবে লাগাতে হবে। এটি দিনে ২-৩ বার লাগাতে হবে।
নারকেল তেল:
নারকেল তেলে মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উভয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দাদ সংক্রমণের চিকিৎসায় উপকারী। দাদ এবং অন্যান্য ছত্রাকের সংক্রমণের জন্য নারকেলের তেল একটি অত্যন্ত কার্যকর সাময়িক ঘরোয়া প্রতিকার। এক্ষেত্রে নারকেল তেল কুসুম গরম করে দিনে ২-৩ বার দাদ আক্রান্ত স্থানে ভালো করে লাগাতে হবে।
অ্যালোভেরা:
অ্যালোভেরা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক উভয় সংক্রমণের জন্য প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসাবে খুবই কার্যকরী। ঘৃতকুমারী দাদ, চুলকানি এবং প্রদাহ দূর করে। ঘৃতকুমারী গাছের জেলটি প্রতিদিন ৩-৪ বার দাদ আক্রান্ত স্থানে ভালোভাবে লাগাতে হবে। জেলটির শীতল করার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, তাই এটি চুলকানি এবং ফোলা ত্বককে প্রশমিত করতে পারে।
হলুদ:
হলুদে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ বা হলুদের গুঁড়া পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। তারপর আক্রান্ত ত্বকে ভালোভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
টি ট্রি তেল:
চা গাছের তেলে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল রয়েছে, যা ছত্রাকের ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর। নরম কাপড় বা তুলায় সামান্য পরিমাণ চা গাছের তেল মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে দিনে ২-৩ বার ভালোভাবে লাগাতে হবে। এছাড়া আপনি নারকেলের তেলের সাথে চা গাছের তেল মিশিয়ে দাদ এর উপর লাগাতে পারেন।
রসুন:
রসুন দাদ নিরাময়ের জন্য খুবই উপকারী। ২ কোয়া রসুন বেটে তার সাথে পরিমাণমতো জলপাই তেল বা নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। তারপর আক্রান্ত স্থানে পাতলা প্রলেপ আকারে মেশানো পেস্ট লাগাতে হবে। প্রয়োজন হলে প্রলেপের উপর গজ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
লেমনগ্রাস তেল:
লেমনগ্রাস তেলের নির্যাস এবং লেমনগ্রাস পাতায় অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দাদ এর মতো ছত্রাকের ত্বকের সংক্রমণের চিকিৎসায় সহায়ক। লেমনগ্রাস তেল ব্যবহার করতে, সরাসরি আক্রান্ত স্থানে ভালোভাবে লাগাতে হবে। দিনে ২-৩ বার লাগালে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।