ওজন কমানোর প্রাকৃতিক উপায়।
আধুনিক ও যান্ত্রিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে আমাদের শরীরের ওজন। আর এর থেকে মুক্তি পেতে কেউ ছুটছেন জিমে আবার কেউ বা করছেন ডায়েটিং।
শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে আজকাল অনেকেই চিন্তিত। সুস্বাস্থ্যের জন্য তো বটেই, শারীরিক সৌন্দর্যের জন্যও নারী-পুরুষ উভয়েরই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিৎ।
কিন্তু কর্মব্যস্ততার কারণে অনেক সময়েই ওজন কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম বা ডায়েট করা হয়ে ওঠে না।
তবে কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করলে বাড়তি ওজন কমানো বেশি একটা কঠিন কাজ নয়। আপনিও চাইলে পারবেন ওজন কমাতে। একটু ইচ্ছে আর সামান্য ধৈর্য থাকলেই ওজন কমানো সম্ভব।
বেশি করে পানি পান করুন:
ওজন কমানোর জন্য অন্যতম উপায় হলো প্রতিদিন বেশি পরিমাণে পানি পান করা। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে শরীর আর্দ্র থাকে, এতে আপনার পেট ভরা ভরা লাগবে।
ক্ষুধাও কম লাগবে, যার ফলে আপনি কম খাবেন, ধীরে ধীরে ওজনও কমতে থাকবে। দিনে অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন।
তাছাড়া খাবার আগে খালি পেটে পানি পান করলে পেট আংশিক ভর্তি হবে এবং ক্ষুধা কম লাগবে ও কম পরিমাণ খাবারে পেট ভরে যাবে।
একটি সমীক্ষায় দেখা যায় যে, যারা খাবারের আগে ০.৫ লিটার পানি পান করেছিলেন, তাদের ১২ সপ্তাহের মধ্যে ৪৪% এর বেশি ওজন হ্রাস পেয়েছিল।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন:
আমাদের শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য সকলের উচিৎ প্রতিদিন ব্যায়াম করা। ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর সুগঠিত হয় এবং রক্ত চলাচলে ভালো হয়। ওজনও দ্রুত কমে।
ব্যায়ামের মধ্যে যোগ ব্যায়াম খুবই ফলদায়ক। ওজন কমানোর জন্য ও মানসিক অবসাদ কাটিয়ে উঠার জন্য ব্যায়াম এর গুরুত্ব অপরিহার্য।
গ্রিন টি পান করুন:
ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি পান করা খুবই উপকারী। নিয়মিত গ্রীন টি পান করলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
এটি আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রীন টি শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে বিশেষ করে তল পেটের চর্বি। তাই প্রতিদিন গ্রিন টি অবশ্যই পান করুন।
মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করুন:
মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন – চিনি, গুড়, পায়েস, মিষ্টি, কেক, পুডিং, আইসক্রিম, চকলেট ইত্যাদি খাবার থেকে একদম দূরে থাকুন।
এই মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো আমারের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায়। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
তাই মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিলে শরীরের ওজন কমানো সম্ভব।
প্রচুর ফল ও শাক-সবজি খান:
ফল এবং শাক-সবজিতে ক্যালরি এবং ফ্যাট কম এবং ফাইবার উচ্চ পরিমানে থাকে। আমরা সকলেই জানি উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমায় যা ওজন কমাতে সহায়তা করে।
উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার খান:
প্রচুর পরিমাণে ফাইবারযুক্ত খাবার লাল আটার রুটি, শাক-সবজি, শসা ইত্যাদি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার পূর্ণতা বোধ করতে সহায়তা করতে পারে যা ওজন হ্রাস করার জন্য উপযুক্ত।
নিজেকে সক্রিয় রাখুন:
নিজেকে সক্রিয় রাখা ওজন হ্রাস করার মূল চাবিকাঠি। যখন ফোনে কথা বলবেন, তখন এক জায়গায় বসে কথা না বলে ঘুরে ঘুরে কথা বলুন।
এইভাবে আপনার কথা বলা হবে আবার ক্যালরি বার্ন করতে পারবেন। বা হাতে কাজ না থাকলে বসে না থেকে ঘরের বিভিন্ন কাজ করুন।
সাঁতার কাটুন ও সাইকেল চালান:
নিয়মিত সাঁতার কাটা ওজন কমানোর অন্যতম ব্যায়াম। আবার সাইকেল চালানোর মাধ্যমেও ওজন কমানো যায়। এটি পেটের মেদ কমিয়ে শরীরের ওজন কমায়।
ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় কম খান:
তেলে ভাজা, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, সোডা—এই খাবারগুলো একদমই খাবেন না। এগুলোর মধ্যে থাকে উচ্চ পরিমাণে ক্যালরি, শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে।
তাই শরীরের ওজন কমাতে চাইলে এই খাবারগুলি একদমই খাওয়া উচিৎ নয়।