হতাশাগ্রস্ত মানুষের লক্ষণ।

আমাদের জীবন আশা এবং নিরাশায় পূর্ণ। হতাশাগ্রস্ত মানুষের লক্ষণ অন্যতম কারণ বিষণ্ণতা, নিঃসঙ্গতা এবং কাজের ইচ্ছা কমে যাওয়া। এতে করে আমাদের জীবনে কোনো বড় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হতে পারে।

এই অবস্থা কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর ধরে চলতে পারে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এর মতে, বিশ্বব্যাপী নানা ধরণের প্রতিবন্ধিতার প্রধান কারণ হলো এই হতাশা। অনেক সময় দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষ সামাজিক কলঙ্ক বা জ্ঞানের অভাবের কারণে হতাশা থেকে বের হওয়ার জন্য কারো সাহায্য নিতে চায় না। যা তাদের অবস্থা আরও অনেক বেশি খারাপ করে তুলতে পারে।

হতাশাগ্রস্ত মানুষের লক্ষণ

হতাশাগ্রস্ত মানুষের লক্ষণ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো –

সামাজিকতাকে এড়িয়ে চলা:

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা চারপাশের মানুষের সাথে কম আলাপ করতে পছন্দ করে। কিন্তু যারা উচ্চমাত্রায় হতাশ তাদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি ভিন্নভাবে দেখা দেয়। যারা এই সমস্যার ভুক্তভোগী তারা কর্মক্ষেত্রে হাসিখুশি, বন্ধুভাবাপন্ন বলে মনে হলেও, এরা ব্যক্তিগত জীবনে সবাইকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে থাকেন। এর ফলে তাদের সামাজিক জীবন ভেঙ্গে পড়ে।

শারীরিকভাবে বিভিন্ন রকমের অসুস্থতা দেখা দেওয়া:

যারা অতিমাত্রায় হতাশায় ভোগেন তাদের শারীরিকভাবে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা দেখা দেয়। এটার মানে এই নয় যে, আপনি অসুস্থ হচ্ছেন শুধু হতাশার কারণে। কিন্তু অসুস্থতা ও হতাশা একে অন্যকে প্রভাবিত করে থাকে। হতাশর কারণে শারীরিক নানা অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।

ঘুমে পরিবর্তন ঘটা:

অনেক সময় দেখা যায় মানুষ হতাশায় ভুগলে ঘুমে পরিবর্তন দেখা দেয়। ঘুমের সময় ঘুমানোর অবস্থান, নড়াচড়া করা, ঘুম না আসা, ঘুমের মধ্যে কথা বলা  এমন অনেক পরিবর্তন হয় হতাশা থেকে। তাই খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনার ঘুমে কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা।

দ্রুত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া:

যদি মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে তাহলে এর সাথে কিছু আবেগ প্রকাশ পায় যেমন, উদ্বিগ্নতা। যদি কেউ হতাশ হয়ে গড়ে তাহলে কিছুক্ষণ পরপর কথা ও আচরনে রাগ, ক্ষোভ, উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি প্রকাশ পাবে।

সফলতা বা কাজ হতে পারে হতাশার সোপান:

অনেকেই বলেন যে, কাজের মধ্যে থাকলে হতাশা দূর হয়। কথাটি কতটা ঠিক এটা সঠিক ভাবে বলা যায় না। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেক কাজে ব্যস্ত মানুষ চরম হতাশায় ভুগে থাকেন। অনেক বেশি ব্যস্ত থাকায় নিজেদের আবেগের দিকে খেয়াল করতে পারে না অনেকেই। ফলে একটা সময় তারা হতাশায় ডুবে যান।

মন মেজাজ খারাপ থাকা:

সবসময় মন মেজাজ খারাপ থাকা, হুট করে রাগ হওয়া, সারাক্ষণ বিরক্তি বোধ হওয়া, এই আচরণগুলো মানুষের প্রতিই অন্যদেরকে বিরক্ত করে তুলতে পারে। কিন্তু এমন করবেন না বা এসব থেকে বিরত থাকবেন ভাবার পরেও এমন আচরণই যদি আপনি করে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে যে, আপনার ভেতর অনেক বেশি মাত্রায় হতাশা জমে আছে।

আমাদের সুন্দর জীবন ধারনের জন্য মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা খুব প্রয়োজন। তাই আপনার মধ্যে যদি এসব লক্ষণ থেকে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।