স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে গল্প।

স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে

—————————

আজ বৃহস্পতিবার। এই দিন শেষের দুই পিরিয়ডে অন্য রকমের কাজ হয়। আনন্দে ভরে ওঠে আমাদের মন। হাসি আনন্দে ভরে থাকে পুরো সময়টা। তাই সবাই আমরা বৃস্পতিবারের অপেক্ষায় থাকি।

আজ ছবি আঁকার শিক্ষক রুপা আপা তাড়াতাড়ি চলে এলেন।

রুপা: তোমরা তো জানোই আগামী রবিবার আমাদের স্বাধীনতা দিবস। তাই তোমাদের আজই শ্রেণিকক্ষ সাজিয়ে ফেলতে হবে।

তিথি: হ্যাঁ, সাজাব আপামনি।

রুপা: রুনু ও আনিস এখানে চলে এসো।

রুনু ও আনিস তাঁর টেবিলের কাছে চলে গেল।

রুপা আপামণির হাতে একটি ডালা। তাতে কত রকমের জিনিস।

রুপা: এগুলো নাও। পাঁচ মিনিট দুজনে পরামর্শ করো। কী কী তৈরি করবে, কোথায় কোথায় সেগুলো লাগবে। আমি সাহায্য করব। প্রয়োজনে আমাকে জিজ্ঞেস করো।

রুনু ও আনিস নিজেদের মধ্যে কথা বলল। তারপর দুটি দলে ভাগ করে দিল সবাইকে। দুটি দল দুই দিকে বসে কাজ শুরু করে দিল। একটু গল্প হাসিও চলতে লাগলো।

দুই দল মিলে নানা রকমের কাজ করল। লম্বা লম্বা শিকল বানালো রঙিন কাগজ দিয়ে। আর্টবোর্ডে ফুল পাতা এঁকে রং করে নিল। তাতে রাংতার ফিতে দিয়ে কারুকাজ করল। রুপা আপামণি ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন। একটু দেখিয়ে দিচ্ছিলেন মাঝে মাঝে। তারপর গিয়ে বসলেন নিজের চেয়ারে। একটু পরে রুনু ও আনিস এলো তাঁর কাছে।

আনিস: আপামণি, আমাদের একটা অনুরোধ আছে।

রুপা: হ্যাঁ, বলো।

রুনু: আমরা একটা দৃশ্য তৈরি করেছি। সেটা পিছনের দেয়ালে লাগাতে হবে। আমরা দেয়ালটা ব্যবহার করতে চাই।

রুপা: তা করতে পারো।

আনিস: আপনি দয়া করে একটু উঠে দাঁড়ান। তা হলে আমরা দেয়ালে কাজ করতে পারব।

রুপা: ঠিক আছে।

ওরা প্রথমে সাদা আর্টবোর্ড আঠা দিয়ে দেয়ালে লাগাল। রং করা লম্বা গাছটি সেঁটে দিল বা দিকে। গাছের নিচে সবুজ ঝোপে লাল হলুদ কাগজের ফুল লাগাল। চার পাঁচটি গামছা বাঁধা মাথা দেখা যাচ্ছে সেখানে। শক্ত আর্টবোর্ড দিয়ে বানানো হাতে ধরা রাইফেল। দেয়ালের ডান দিকে বালির বস্তা আঁকা কাগজ লাগাল। সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের ছবি। পুরো দৃশ্যটায় যেন যুদ্ধ লেগে গেছে।

নীলার হাতে শক্ত কাগজে বানানো জাতীয় পতাকা।

রুপা: দাও, আমি ওটা লাগিয়ে দিচ্ছি। ওটা লাগাতে হবে গাছের মগডালে।

রবি: (হেসে) ধন্যবাদ, আপামণি।

রঙিন কাগজের শিকল, ফুল আর পাতা বানানো ছিল।

শ্রেণিকক্ষের চারদিকে মালার মতো সেগুলো ঝুলিয়ে দিল রবি ও পারুল। নীল সাদা রাংতার ফিতে মালার মাঝে মাঝে ঝুলিয়ে দিল। চারদিকটা তখন ঝলমল করে উঠলো।

রুপা: খুব সুন্দর কাজ হয়েছে তোমাদের। ২৬ এ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে তোমাদের কাজের জন্য পুরষ্কার দেওয়া হবে।

খুশিতে সকলে হাত তালি দিল।