সারস পাখির গল্প।

এক বড় বনের মাঝে এক সারস পাখি বাস করত। আর সেই বনের মাঝে থাকা এক ডোবার মধ্যে অনেক গুলো মাছ বাস করতো।

বর্ষা এলে বা অন্য সময় মাছেরা যখন লাফালাফি করতো তখন ঐ সারস পাখিটা মাছ গুলো খেয়ে জীবন ধারন করতো।

তাই মাছেরা বুদ্ধি করলো কিভাবে সারস পাখির হাত থেকে বাঁচা যায়?

অবশেষে বুদ্ধি বাহির করলো তারা সবাই একত্রিত থেকে দিনের বেলায় পানির নিচের দিকে চলে যাবে যাতে সারস পাখি তাদের খেতে না পারে।

আর রাতের বেলায় ভেসে বেড়াবে। সেদিন থেকে তারা তাই করলো। এভাবে তারা একত্রিত হয়ে বাস করতে লাগল।

এখন তো সারস পাখি মহা বিপদে। তাই সেও বুদ্ধি খাটাতে লাগল।

অবশেষে সে, সেই পানির মধ্যে থাকা কাঁকড়ার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুললো। এই কাঁকড়ার মাধ্যমেই একটি গল্প বানিয়ে মাছেদের শুনালো।

সে মিথ্যে বলল, বলল আজ হতে আগামী বারো বছর বৃষ্টি হবে না তা এক সন্ন্যাসী বলে গেছে। এবং এসব ডোবা শুকিয়ে যাবে তখন মাছেরা যাবে কোথায়? সকলকেই মরতে হবে।

এই কথা শুনে মাছেরা ঘাবড়ে গেল। তাই একটা উপায় খূঁজে বাহির করার জন্য সারস পাখিকেই অনুরোধ করলো।

সারস পাখি তো মহা খুশি না চাইতেই যেন সব পেয়ে গেল। সে বলল, এই বন হতে একটু দূরে একটা অনেক বড় পুকুর আছে যার পানি কোনদিনও শুকাবে না। তোমরা চাইলে আমি তোমাদের এক এক করে ঐখানে রেখে আসতে পারি।

এই শুনে সকল মাছেরা রাজী হয়ে গেল। এবার একে একে মাছেরা সারস পাখির কাছে আসে আর সারস পাখি তাদের নিয়ে যায়।

চালাক সারস পাখি নিজের ক্লান্তির কথা বলে প্রতিদিন তিন, চারটি করে মাছ নিয়ে যায়। এভাবে একে একে ডোবার সব মাছ শেষ হয়ে গেলো। পরিশেষে কাঁকড়া এসে সারস পাখিকে বলল দোস্ত সবাইকেই তো নিরাপদে নিয়ে গেলে এবার আমাকেও নিয়ে যাও নিরাপদ আশ্রয়ে।

তখন সারস পাখি মনে মনে ভাবল মাছ তো অনেক খাওয়া হল এবার কাঁকড়া খেয়ে স্বাদ পরিবর্তন করি। তাই কাঁকড়া কেও সারস পাখি কাঁধে উঠাল।

উড়েই কাঁকড়াকে বলল দোস্ত তুমি কি বোকা, আমি সব গুলো মাছ খেয়ে ফেলেছি। এবার তোমাকে খাবো।

কাঁকড়া তখন উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলো মাছের উচ্ছিষ্ট বিভিন্ন অংশ পড়ে আছে। তাই সে রেগেমেগে তার লম্বা দুটো দাঁড়ালো চিমটা দিয়ে সারস পাখির গলা কেটে দিল আর সারস পাখিটিও মারা গেলো।