সংসার খরচ বাঁচাতে যা করবেন।
আধুনিক জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে চাহিদা যেন আমাদের নিত্য সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চাহিদার কোন শেষ নেই। কোন কিছুতেই যেনো খরচের মাত্রা কমানো যাচ্ছে না। জীবনে ভালো থাকতে গেলে সংসারে সচ্ছলতা অবশ্যই দরকার।
সেই সঙ্গে আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখাটাও আজকাল কঠিন হয়ে যাচ্ছে সাথে মানসিক চাপতো আছেই। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই আপনার প্রতি মাসের খরচ যেমন কমিয়ে আনতে পারেন, তেমনি পারেন সেই টাকা থেকে কিছু অংশ আপনার ভবিষ্যতের জন্যে সঞ্চয় করতে।
প্রতিদিন কিছু না কিছু জমান:
১ টাকা ৫ টাকা ১০ টাকা যে যা পারেন প্রতিদিন জমান। প্রতিদিনই চেষ্টা করুন কিছু না কিছু টাকা জমাতে। যতটুকুই পারেন জমান। এবং সেটার কথা ভুলে যান। ভুলেও সেটায় হাত দেবেন না। ১ টাকা ৫ টাকা ১০ টাকা রাখতে রাখতে দেখবে একটা ভালো সঞ্চয় হয়ে গেছে।
সন্তানকে সঞ্চয় করতে শেখান:
আমাদের বড়দের দেখে ছোটরা শেখে। তাই ওদের ভালো কিছু শেখান। সন্তানকে ছোট্ট একটা মাটির বা প্লাস্টিকের ব্যাংক কিনে দিন। প্রতিদিন বাচ্চার হাতে টাকা দিয়ে জমাতে শিখান।
প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন:
ও ওটা কিনেছে আমারও কিনতে হবে এরকম চিন্তা ভাবনা বন্ধ করুন। কোন খাতে কতটা খরচ করবেন তা ঠিক করে নিন। আয় বুঝে খরচ করুন। অন্যর সাথে প্রতিযোগিতা করবেন না।
বাইরে খাওয়ার প্রবণতা কমান:
শহর জীবনে বাইরে খাওয়ার প্রবণতা আমাদের অনেকের মাঝেই লক্ষ্য করা যায়। আজ এ রেস্টুরেন্ট কাল সে রেস্টুরেন্ট আবার অনেকে বাসায় বসে অর্ডার করছেন এমন প্রবণতা কমিয়ে আনা দরকার। প্রতি সপ্তাহে বাইরে খাবার অভ্যাসটা কমিয়ে মাসে একবারে নিয়ে আসুন।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমান:
হাতে টাকা নিয়ে কেনা কাটা করা ভালো। ক্রেডিট কার্ডটা ব্যবহার করলে ওঠা হিসাব থাকে না। তাই ক্রেডিট কার্ডটা যতটা সম্ভব বাসায়ই ভুল করে রেখে শপিং এ যান। ক্যাশ ব্যবহার করুন। এতে চাইলেও আপনি যথেচ্ছ টাকা খরচ করতে পারবেন না। দেখবেন এভাবে আপনার অনেক টাকা বেঁচে গেছে।
অপ্রয়োজনে খরচ করবেন না:
অনেক সময় আমাদের যে জিনিসটা দরকার না তারপরও অনেক সময় আমরা সেটা কিনি। এমনটা করবেন না যদি আপনি সংসার খরচ কমাতে চান। আগে থেকেই সংসারের ব্যয়ের হিসাব ঠিক করে রাখুন। এবার ঠিক করুন কোন কোন খাতে চাইলেই আপনি খরচ কমাতে পারবেন।
ব্যয়ের সমতা রাখুন:
দুজনেই আয় করেন তাহলে ব্যয়ের মধ্যে সমতা রেখে চলুন। সংসারের খরচ ভাগ করে নিন। একজনের উপর সব চাপিয়ে দেবেন না। কেউ সংসারে খরচ করলে অন্যজন ঋণ মেটান। প্রয়োজনে আলাদা সেভিংস অ্যাকাউন্ট করে রাখুন। এতে দুজনের সমঝোতায় বাড়তি খরচ অনেকটাই কমাতে পারবেন। অন্যদিকে সঞ্চয়ও বাড়বে।
মাসিক বাজার করুন:
প্রতিমাসে এক তারিখে লিস্ট করে বাজার করুন। মাসিক বাজার কাঁচা বাজার ছাড়া চাল, ডাল, তেল, লবনসহ বাকি সব কিছু এক মাসের জন্য একবারে কিনে রাখুন। এতে আপনার বারবার বাজারে যাওয়ার জন্য খরচ আর সময় দুটোই বাঁচবে।
কিছু কেনার আগে ভাবুন:
আমাদের অনেকেরই অভ্যাস হল রাস্তায় যেতে যেতে কোন দোকানে কিছু পছন্দ হলে হুট করে কিনে ফেলা। এটা করার ফলে বেশীরভাগ সময়েই আমরা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে ঘর বোঝাই করে ফেলি। জিনিস পছন্দ হয়ে গেলেই হুট করে কিনে না ফেলে একটু ভেবে নিন। দরকার হলে ১/২ দিন পরে কিনুন।
শপিং এ যাবার আগে লিস্ট করুন:
শপিং এ যাবার আগে লিস্ট করুন। জামা কাপড় কেনার আগে দেখে নিন আপনার কি কি আছে এবং কি কি আসলেই কেনা প্রয়োজন।
ঘরের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করুন:
দরকার না হলে ঘরের পানির ট্যাপ, চুলা ও ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্রের লাইন অফ করে রাখুন। বিল কম আসবে। ইলেক্ট্রিসিটি না থাকলে মোমের বদলে চার্জার লাইট ব্যবহার করুন। মোমের গলে যাওয়া অংশগুলো জমিয়ে রাখতে পারেন। গলিয়ে মাঝখানে সুতো দিয়ে আবার মোম বানাতে পারবেন। প্রথমবারের চেষ্টায় খরচ আশানুরূপ কমাতে না পারলে হাল ছেড়ে দেবেন না যেন!