রূপচর্চায় মুসুর ডাল এর ব্যবহার।
বাঙালির রান্নাঘরের অন্যতম সুপরিচিত একটি খাদ্য উপাদান হলো মসুর ডাল (lentils) প্রচুর পরিমাণে ফাইবারে পূর্ন যা নিয়মিত অন্ত্রের গতিবিধি এবং অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটিরিয়া বৃদ্ধি করে। হাতের কাছের সহজলভ্য সব জিনিস ব্যবহার করেও আপনি হয়ে উঠতে পারেন অনন্য সুন্দর।
মুসুরের ডাল বেটে মুখে লাগালে মুখের পিম্পল ও ব্রণ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
রূপচর্চায় মুসুর ডাল এর ব্যবহার
চলুন রূপচর্চায় মুসুর ডাল এর ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন –
ব্রণ দূর করতে:
মসুর ডাল পেস্ট তার সাথে হলুদ মিশিয়ে তৈরি করুন ফেসপ্যাক। এই ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এতে মুখের ব্রণ কমে যাবে।
ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে:
অল্প সময়ে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত করে তুলতে মুসুর ডাল লাগাতে ভুলবেন না। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো মুসুর ডাল সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে পানি ছেঁকে ডাল বেটে নিতে হবে।
তারপর ডালের পেস্টের সাথে ১ চামচ কাঁচা দুধ এবং পরিমাণ মতো তেল মিশিয়ে পেস্টটি ভাল করে মুখে লাগান। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১৫-২০ মিনিট পর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফলতে হবে। এতে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
দাগ দূর করতে:
ব্রণের দাগ বা যেকোন দাগ দূর করতে মসুরের ডাল খুব কার্যকরী। পরিমান মতো মসুর দল পেস্ট করে তার মধ্যে চালের পেস্ট, চন্দন গুঁড়ো, মুলতানি মাটি মিশিয়ে মুখে এবং শরীরে পেস্ট লাগান। শুকিয়ে যাওয়ার পরে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন দাগ দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের শুস্কতা দূর করবে:
পরিমাণ মতো মসুর ডাল ও গাঁদা ফুল মিশিয়ে বেটে নিতে হবে। তারপর ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এই পেস্টটি ত্বকের শুস্কতা দূর করার পাশাপাশি ব্রণের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
ফেইসওয়াশ হিসেবে ও কাজে লাগানে যায়:
মসুর ডাল দিয়ে ত্বককে পরিষ্কার করলে স্কিনটোনের উন্নতির পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের কারণে ত্বকের কোন ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। সেক্ষেত্রে ১ চামচ বাঁটা মসুর ডাল, ২ চামচ দুধ, অল্প পরিমাণে হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।
তারপর মিশ্রণটি সারা মুখে লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।
মাথার চুলকানি দূর করতে:
মাথার ত্বকে ময়লা কিংবা খুশকি জমার কারণে ত্বক চুলকাতে পারে। সেক্ষেত্রেও এই মসুর ডাল উপকারী। মসুর ডাল বেটে মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে করতে থাকলে চুলকানি দূর হবে।
ত্বক ফাটা দূর করতে:
ত্বক ফেটে যাওয়া খুবই সাধারণ বিষয়। শীত বর্ষা গ্রীষ্ম যেকোন আবহাওয়াতে পা ফেটে যেতে পারে। মুসুর ডাল পা ফাটা দূর করতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে মসুর ডাল বেটে ফেটে যাওয়া জায়গাটিতে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে আসলে পানি দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
কনুইয়ের রুক্ষ ভাব কমাতে ও কালো দাগ দূর করতে:
মসুর ডাল বাটা, হলুদ বাটা, টমেটোর রস, কাঁচা দুধ ও সূর্যমুখীর তেল একসঙ্গে মিশিয়ে হাতের কনুইয়ে লাগান। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। ধীরে ধীরে ফাটা পুরোটাই চলে যাবে।
ত্বক সতেজ রাখতে:
ত্বক সতেজ রাখতে টক দই, মধু ও মসুর ডাল বাটা দিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। এবার এই প্যাক মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক অনেক সতেজ থাকবে।