রূপচর্চায় পিপারমিন্ট অয়েলের উপকারিতা।
দাগহীন উজ্বল ত্বক পেতে কে না চায়। তবে সব সময়ে তা সম্ভব হয় না। আমরা অনেকেই নানা কসমেটিকস ব্যবহার করে নিজেদের ত্বক সুন্দর করে তুলতে চাই। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই এই কসমেটিকস আমাদের ত্বক নষ্ট করে। তাই এসব কসমেটিকস ছেড়ে আমরা এবার পিপারমিন্ট অয়েল ব্যবহার করেতে পারি।
প্রাচীনকাল থেকে পিপারমিন্ট ওষধি হিসেবে ও রূপচর্চার কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ত্বকের যত্নেই হোক বা চুলের সমস্যা যেকোনো সমস্যা সমাধানে পিপারমেন্ট অয়েল (Peppermint Oil)খুবই কার্যকরী।
ত্বকের যত্নে পিপারমিন্ট অয়েল
ত্বকের যত্নে পিপারমিন্ট অয়েলের অবদান নিচে দেওয়া হলো –
ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে:
উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে বিউটি রুটিনে পিপারমিন্ট অয়েল যোগ করা অত্যন্ত জরুরি। পিপারমিন্টের মধ্যে মেন্থল রয়েছে যা ত্বকে একটা কুলিং এফেক্ট দেয় এবং একই সঙ্গে ত্বকের ভিতর থেকে ময়লা টেনে বার করে ও মৃতকোষ দূর করে ত্বক গভীরে গিয়ে পরিষ্কার করে। এতে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল।
ব্রণ দূর করে:
ব্রণের সমস্যায় আমরা কম বেশি সবাই পরি। লোমকূপের ভিতরে ময়লা জমে গিয়ে ইনফেকশন হয়ে গেলে তখনই ব্রণ হয়। এক্ষেত্রে পিপারমিন্ট অয়েল ব্যবহার করে সহজেই ব্রণের সমস্যা দূর করা যায়।
টোনার হিসেবে খুব ভালো:
একটি ছোট স্প্রে বোতল নিয়ে তাতে বোতলের তিন চতুর্থাংশ পানি, এক চতুর্থাংশ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার এবং ৩০ ফোঁটা পিপারমিন্ট এসেনশিয়াল অয়েল নিয়ে ভাল করে মেশান। এরপর বাইরে বের হলে বা বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে এই স্প্রেটি টোনার হিসেবে আপনার মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়:
২ চামচ অলিভ অয়েল, ৪ ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল মিশিয়ে তৈরি করে নিন স্ক্রাবার। সপ্তাহে একদিন শুধু মুখে স্ক্রাবার দিয়ে স্ক্রাব করুন ফলে ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
ত্বকের মলিনতা দূর করে:
ত্বকের মলিনতা দূর করে লাবন্য ফিরে পেতে পিপারমিন্ট অয়েলের এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। ২ চামচ শশাকুচি, ৩ ফোঁটা পানি মেশানো পিপারমেন্ট অয়েল মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করে নিন। ব্রাশের সাহায্যে মুখে মাস্কটি লাগিয়ে মিনিট ২০ পর উষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে নিন।
চুলের যত্নে পিপারমিন্ট অয়েল
নিচে চুলের যত্নে পিপারমিন্ট অয়েলের উপকারিতা দেওয়া হলো-
মাথার তালুর শুষ্কতা দূর করে:
মাথার তালুর শুষ্কতা দূর করতে পিপারমেন্ট অয়েল এক মহৌষধি হিসেবে কাজ করে। এই তেলটিতে দারুণ ময়শ্চারাইজ করার ক্ষমতা রয়েছে কাজেই চুল ও মাথার তালুর রুক্ষতা দূর করতে পিপারমেন্ট এর উপকারিতা অনেক।
যেকোনো ধরনের চুলের জন্যই ভালো:
চুলের ধরন যদি অন্য কিছু হয় সেক্ষেত্রেও কিন্তু পিপারমিন্ট অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। পিপারমিন্ট অয়েলে এমন কিছু মৌলিক উপাদান রয়েছে যা মাথার তালুর এবং চুলের PH ব্যাল্যান্স ঠিক করতে সাহায্য করে এবং চুলের নানা সমস্যা দূর হয়।
নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে:
মাথার চুল ঝরে যাচ্ছে! রোজ রাতে চুলের গোড়ায় পিপারমিন্ট অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান এবং মিনিট দশেক আঙুলের সাহায্যে ম্যাসাজ করুন। কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন নতুন চুল গজাচ্ছে এবং চুল পড়ার সমস্যাও দূর হয়েছে।
ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করে:
অনেক সময়ে নানা কারণে আমাদের চুলের গোড়ায় ময়লা জমে মাথার তালুতে ইনফেকশন হয়ে যায় আবার অনেক সময়ে স্ক্যাল্প অ্যাকনে হলে তা খুঁটে দিলেও ইনফেকশন ছড়িয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভিটামিন “ই” ক্যাপসুলের সঙ্গে পিপারমিন্ট অয়েল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগাতে পারেন।
চুল মোলায়েম করে তোলে:
পিপারমিন্ট অয়েলে যেহেতু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজিং প্রপারটিস রয়েছে কাজেই পিপারমেন্ট অয়েল দিয়ে নিয়মিত চুলে মালিশ করলে, চুলের কিউটিক্যাল সারাই করা যায় এবং ফলে চুল হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, মোলায়েম এবং জেল্লাদার।