বেঢক ভুঁড়ি নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। জেনে নিন পরিত্রাণের উপায়।
মানুষ সৌন্দর্যপ্রিয়। সুন্দরের পূজারী মানুষ সবসময় চায় নিজেকে সুন্দর অবয়বে সাজাতে। তাকে দেখে যেন সবাই ভালো বলে অর্থাৎ শারীরিক গঠন নিয়ে কেহ যেনো বাজে মন্তব্য না করে।
বর্তমান বিশ্বে মানুষ যেন স্লিম / পাতলা হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মোটা পেট বা ভুঁড়ি ব্যক্তিত্বকে নিচে নামিয়ে দেয়। অন্যদিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানও ভুঁড়ির বিপক্ষে। ভুঁড়ি নীরোগ ও দীর্ঘ জীবনের অন্তরায়। ভুঁড়ি অর্থাৎ মেদবহূল পেট কিডনি ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
রাস্তাঘাটে চলতে গিয়ে এমন অনেক মানুষকে দেখা যায়- যারা দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু একটা ভুঁড়ি নিয়ে অস্বস্তি সহকারে হেটে যাচ্ছে। ভুঁড়ির কারণে সব সৌন্দর্যই মাটি।আবার লোকলজ্জার ভয়ে অনেক সময় নিজের মনের ভাবনা ও স্বপ্নগুলো সাফল্যের মুখ দেখে না। একাকীত্ব জেঁকে বসে।
আমাদের বাঙ্গালি গ্রামীণ সমাজে ভুঁড়ি নিয়ে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে। ভুঁড়ি নাকি সুখী মানুষের লক্ষণ। কী করবো ভাই, সৃষ্টিকর্তা দিছে এটা তো খারাপ হতে পারে না। এসব কারণে ভুঁড়ি ভুঁড়িই থেকে যায়। পরিশেষে, পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে যায়।
কি কি কারণে ভুঁড়ি হয়?
পরিশ্রম কম করা :
আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে যন্ত্রের আধিক্যের কারণে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাত্রে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত মানুষের যে মুভমেন্ট /নড়াচড়া – সেটা কমে গেছে। দুই তলা বা তিন তলাতে অফিস লিফট-এর কল্যানে সিঁড়ি ভাঙ্গা লাগছে না।কাছাকাছি কোথাও যাবো তাতেও রিকশা, গাড়ি ব্যবহার করছি। সারাবছরে দু-একদিনও সাঁতার কাটা হয় না।
জল কম খাওয়া:
তৃষ্ঞা পেয়েছে একটা কোল্ড ড্রিঙ্কস খেয়ে নিলাম।কোল্ড ড্রিঙ্কস-এ প্রচুর চিনি থাকে।
মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া:
দই,সন্দেশ,রসগোল্লা বলেন বা পিঠা পায়েশ মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি সবারই দূর্বলতা থাকে। মিষ্টি জাতীয় খাবার অবশ্যই খাবেন তবে খেয়াল রাখবেন শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যেন জমা না থাকে। মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে যাচ্ছেন অথচ শরীরের মুভমেন্ট বা নড়াচড়া বাড়ালেন না।
কম ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া:
সবুজ ও রঙিন সবজি এবং ফলমূল খাওয়া বাড়াতে হবে। লাল মাংস, ফার্স্ট ফুড অর্থাৎ প্রসেসেড ও প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। যারা কোষ্টকাঠিন্যই ভোগে তাদের ভুঁড়ি হওয়ার প্রবণতা বেশী। মোদ্দাকথা খাবারে আঁশ বা ফাইবার না থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাগরে আপনাকে ডুবতে হবে।
অনেকে মনে করেন, পূর্বপুরুষের ছিলো এ কারণে আমারো হয়েছে। এটা ঠিক নয়। মানুষের মনটাই অনেক কিছু। আপনি মনে মনে পণ করেন আমি ভুঁড়ি বানাবো না এবং নিয়ম মেনে চলবো তাহলে আপনার ভুঁড়ি হবে না।
পরিত্রানের উপায় :
- প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। সাঁতার কাঁটা ও সিঁড়ি ভাঙা অতি উত্তম।
- ফাইবার যুক্ত খাবার অর্থাৎ প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল ও সকল প্রকার বাদাম জাতীয় খাবার খান।
- অভ্যাস বদল করুন যেমন চিনির বদলে মধু খান। পুদিনা চা বা লেবু চা খান।গ্রীন টি ও ভিনেগার মেদ কমাতে ভালো কাজ করে।
- হজমটা আমাদের মুখ থেকে শুরু হয় তাই খাবারটা ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
- অনেকটা সময় বিরতি দিয়ে খাওয়া ঠিক নয়। তিন ঘন্টা পরপর পরিমাণমতো খেতে হবে।
যদিও আমরা জানি যে, রূপের সৌন্দর্য সুন্দর নয়, যার মন সুন্দর সেই প্রকৃত সুন্দর। কিন্তু একটু সচেতন হয়ে আমরা কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে অতি সহজে বেঢক ভুঁড়ি থেকে পরিত্রান পেতে পারি।