প্রচণ্ড বুক ধড়ফড় করলে কি করবেন?

বুক ধড়ফড় সাধারণত পরিশ্রম বা অন্য সাধারণ কারণে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশ্রাম নিলে এটি ঠিক হয়ে যায়। একজন সুস্থ মানুষের মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার হার্ট বিট হয়।

দৈনন্দিন জীবনে নানা পরিস্থিতিতে হার্ট বিট বৃদ্ধি পেতে পারে বা বুক ধড়ফড় করতে পারে। হৃদরোগ ও অন্য জটিলতায়ও হার্ট বিট অনিয়মিত হতে পারে।

তবে হুটহাট প্রচণ্ড বুক ধড়ফড় হৃদযন্ত্রের কিছু কিছু অসুখের কারণে হয়ে থাকে। আবার হরমোনজনিত কিছু অসুখের কারণে অথবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা ভয় থেকেও বুক ধড়ফড় করতে পারে।

অতিরিক্ত পরিশ্রম, ব্যায়াম বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ, আবেগ, উচ্ছ্বাস সাময়িকভাবে হৃদ্স্পন্দন বাড়িয়ে দিতে পারে, এতে করে বুক ধড়ফড় শুরু হয়।

আবার খুব জ্বর, রক্তশূন্যতা, নিকোটিন, ক্যাফেইন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাজনিত রোগও বুক ধড়ফড়ের জন্য দায়ী। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করা হঠাৎ কমে যাওয়া বা থাইরয়েড হরমোনের কারণে বুক ধড়ফড় করে।

দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস রোগীর স্নায়ুগত জটিলতার কারণে বিশ্রামের সময়ও হৃদ্স্পন্দন কমে যায় ফলে বুক ধড়ফড় করে।

হার্টের ভাল্বের সমস্যা, জন্মগত হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিউর, বড় হয়ে যাওয়া হৃদ্যন্ত্রসহ হৃদ্যন্ত্রের নানা ধরনের অনিয়মিত স্পন্দনজনিত কারণে বুক ধড়ফড় করে। কিছু কিছু ওষুধও বুক ধড়ফড় বাড়িয়ে দেয়, যেমন অ্যামলোডিপিন, অ্যামিট্রিপটাইলিন, থাইরক্সিন ইত্যাদি।

প্রচণ্ড বুক ধড়ফড় করলে করণীয়:

চলুন জেনে নেওয়া যাক, হুটহাট প্রচণ্ড বুক ধড়ফড় করলে কি করবেন-

হঠাৎ বুক ধড়ফড় করতে থাকলে নাক মুখ খোলা রেখে দীর্ঘ শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকলে কিছুটা কমে।
হুটহাট প্রচণ্ড বুক ধড়ফড় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে হয়, তাই সর্বপ্রথম দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত চা পান, ধূমপান বা কফি পানের অভ্যাস থাকলে, তা বর্জন করে অল্প পরিমাণে পান করতে হবে।
এছাড়া কিছু কিছু পরীক্ষা করে বুক ধড়ফড়ের কারণ বের করা যায়, যেমন- ইসিজি, ইকো-কার্ডিওগ্রাম, ইটিটি, থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা ও ইপি (ইলেকট্রোফিজিওলজি) এই পরীক্ষাগুলি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া মানে রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা হঠাৎ কমে যাওয়া। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে বুক ধড়ফড় করলে দ্রুত চিনির শরবত খেলেই ঠিক হয়ে যায়।
কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে বুক ধড়ফড় করলে ঐ ওষুধ বন্ধ করা যায় কি না দেখতে হবে অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হৃদ্স্পন্দন হঠাৎ বেড়ে গিয়ে বা অনিয়মিত হলে রোগী পড়ে গিয়ে অজ্ঞানও হতে পারে। এ সময় মাথা ঝিমঝিম, মাথা শূন্য বোধ হওয়া বা মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ রকম হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি।
যাদের আগে থেকেই হৃদরোগ আছে বা পরিবারে আকস্মিক মৃত্যুর ইতিহাস আছে তাদের জন্য বুক ধড়ফড়ানি একটি সতর্কবাণী। তাই একে অবহেলা করা একদমই চলবে না।