পারকিনসন রোগের কারণ, লক্ষণ।
পারকিনসন হলো মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি। বর্তমান দিনে মারণ ব্যাধিগুলির মধ্যে এটি একটি। এই রোগটি মূলত স্নায়ুর অধঃপতনজনিত একটি রোগ। এই রোগের প্রভাবে মৃত্যু হয় অনেক মানুষের। নারীদের তুলনায় পুরুষেরা এই রোগে বেশি প্রভাবিত হয়ে থাকে।
এই রোগের লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে শুরু হয়, কখনও কখনও কেবলমাত্র এক হাতে সামান্য কাঁপুনি দিয়ে শুরু হয়। হাঁটার সময় আপনার হাত দুলতে পারে না। এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। বেশির ভাগ রোগীই ওষুধের গ্রহণের মাধ্যমে ভালো জীবনযাপন করতে পারে। কি
রোগটি আরও খারাপ হওয়ার সাথে সাথে আপনার কথা বলতে, ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে, মানসিক এবং স্মৃতিশক্তির সমস্যা হতে পারে, আচরণগত পরিবর্তন হতে পারে।
শারীরিক পেশী নড়াচড়া সম্ভব হয় ডোপামিন, মস্তিষ্কের একটি পদার্থ দ্বারা। ডোপামিন মস্তিষ্কের একটি অংশে উৎপাদিত হয় যাকে “সাবস্ট্যান্টিয়া নিগ্রা” (substantia nigra) বলা হয়।
পারকিনসন (Parkinson’s) রোগ হলে, সাবস্ট্যান্টিয়া নিগ্রার কোষগুলি মারা যেতে শুরু করে। তখন ডোপামিনের মাত্রা কমে যায়। তখন পারকিনসন্সের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পারকিনসন রোগের কারণ
পারকিনসন স্নায়ুর অধঃপতনজনিত রোগ। নিউরন হলো মস্তিস্কের এক ধরনের কোষ যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি। যখন মস্তিস্কের এই নিউরনের মৃত্যু ঘটে তখন এই রোগের দেখা দেয়।
এই রোগের সম্ভাব্য কারণ জানার জন্য এখনো গবেষণা চলছে। জেনেটিক কারণে এবং কিছু পরিবেশগত উপাদানের জন্য পার্কিনসন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করা হয়।
জিনের পরিবর্তনকে পারকিনসন রোগের কারণ বলে মনে করা হয়েছে, তবে এর নিশ্চয়তা পরিষ্কার নয়। পার্কিনসন সাধারণত 50 থেকে 60 বছরের মধ্যে দেখা যায়। যাদের মাথায় আঘাত লেগেছে তাদের পারকিনসন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে।
পারকিনসন রোগের লক্ষণ
নিচে পারকিনসন রোগের লক্ষণ দেওয়া হলো –
- মাথা, হাত,পা, এবং মুখের থুতনি কেঁপে ওঠা।
- শরীরের ভারসাম্য ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাওয়া।
- শরীরের মাংস পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া। ফলে শরীরের কোন অংশ নড়াচড়া করতে সমস্যা হয়।
- হাঁটাচলা ধীরগতির হয় ও জড়তা দেখা দেয়।
- গলার স্বরের পরিবর্তন হয়। যেমন- গলার স্বর ভারি ও ক্ষীণ হয়ে যায়।
- নিজের মধ্যে উদ্বেগ, বিষণ্ণতা ও অবসাদ দেখা দেয়।
- স্মৃতিশক্তি কমে যায়। ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যে এবং চামড়ার বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়।
- কখনো কখনো ঘুম বেশি হয় বা একেবারে ঘুম না হওয়া।
- গন্ধ পাওয়ার ক্ষমতা কমে যাওয়া
- অনিয়ন্ত্রিত মূত্র ত্যাগ হওয়া ও ভয়েস পরিবর্তন হওয়া।
- হাঁটার সময় আটকে যাওয়ার প্রবণতা
- পিছিয়ে পড়ার প্রবণতা।