পাইলস বা অর্শ নিরাময়ে ঢেঁড়স ও পুঁইশাক কতটা কার্যকর? অপারেশনে কতটা মুক্তি মেলে?

মানুষের এই অল্পদিনের জীবনকাল সময়ে কতশত রোগের সাথে সাক্ষাৎ। কত রোগের সাথে যুদ্ধ করে যে বেঁচে থাকতে হয় তার ইয়াত্তা নেই। বিজ্ঞানের এতো উন্নতির পরেও মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।

খাদ্যাভাস, জীবনযাপনের ধরণ এক একজনের এক একরকম হওয়ায় আমরা এক একজন ভিন্ন ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। যেমনঃ একজন ব্যক্তি শাকসবজি খেতে পছন্দ করেন না। ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংস, খাসির মাংস তার প্রায় নিত্যদিনের সঙ্গী।

ঐ একই ব্যক্তি আবার পানিও কম খান। ব্যায়ামও করেন না। এমন একজন মানুষের যদি মলদ্বারে মাংস বৃদ্ধি পায় আর তা দিয়ে রক্ত পড়ে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ সে নিজেই Haemorrhoids বা পাইলস বা অর্শকে ডেকে নিয়ে এসেছে বা স্বাগত জানিয়েছে।

পাইলস বা অর্শ নিরাময়ে ঢেঁড়স ও পুঁইশাক কতটা কার্যকর?

পাইলস বা অর্শ নিরাময়ে ঢেঁড়স ও পুঁইশাক অনেকটাই কার্যকর। শাকসবজি খেলেন তো বেঁচে গেলেন। এটা শুধু কথার কথা না। মাছ মাংস খেতে খেতে যখন আমাদের অরুচি ধরে যাবে বা বেশি খাওয়ার ফলে আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ি তখন এই শাকসবজিতেই শরীরের সুস্থ্যতা ও শান্তি খুঁজে পায়।

আঁশ জাতীয় খাবার খেলে মল সহজে বেরিয়ে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বা অর্শের সমস্যা থাকে না। এছাড়া অতিরিক্ত মাছ মাংস না খেয়ে অর্থাৎ মাছ মাংসের থেকে খাবারে সবজি বা আঁশ জাতীয় খাবারের প্রাধান্য থাকলে মলদ্বারে মাংসবৃদ্ধি তথা পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

এবার প্রথমে ঢেঁড়স-এর কথায় আসা যাক। সবুজ এই সবজিটি শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়। যেমন সুস্বাদু তেমনি স্বাস্থ্যকর। কারণ ফাইবার বা আঁশ, আঁঠালো বা পিচ্ছিল পদার্থ ও ভক্ষণযোগ্য বীজ এই তিন অসাধারণ গুণে গুণান্বিত ঢেঁড়স পাইলস বা অর্শের রোগীদের জন্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ।

এছাড়া এটি ফাইবার, ফলিক অ্যাসিড(বি৯), প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন সি, বি৩, এবং কে, বিটা ক্যারোটিন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ।

Biologically ওকরা বা ঢেঁড়স বা ভেন্ডি হলো একটি ফল। কিন্তু সাধারণত রান্নায় একটি সবজি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ঢেড়শ কাঁচা খাওয়া যায়। আপনি কাঁচা বা সামান্য একটু সিদ্ধ করেও এটি খেতে পারেন।

পুঁইশাক আপনি কাঁচা খেতে না পারলেও সিদ্ধ বা রান্না করে খান। আঁঠালো বা পিচ্ছিল জলীয় অংশ, ফাইবার, ভক্ষণযোগ্য বীজ -অনেক গুনে গুণান্বিত পুঁইশাক আপনি অনেকভাবে রান্না করে খেতে পারেন।

অপারেশনে কতটা মুক্তি মেলে?

মলদ্বারে মাংসবৃদ্ধি বা রক্তনালী একত্রে হয়ে ফুলে যাওয়া এবং এটি কেটে অপসারণ করা। জায়গাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং আপনার সেলাইয়ের প্রয়োজন হতে পারে। এলাকাটি অত্যন্ত নরম ও কোমল এবং বেদনাদায়ক হতে পারে। সেরে উঠতে প্রায়শই প্রায় ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগে, তবে আপনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছেন বলে মনে হতে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

অস্ত্রোপচারের পরে কি পাইলস ফিরে আসতে পারে?

সার্জারি বা অপারেশনের পরে সাধারণত হেমোরয়েড বা পাইলস নিরাময় হয়। তবে হেমোরয়েড সার্জারির দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য এবং স্ট্রেনিং এড়াতে আপনার প্রতিদিনের খাবারের অভ্যাস কতটা ভালভাবে পরিবর্তন করতে পারবেন তার উপর।

পূর্বের বাজে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে না পারলে ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৫ জনের অর্শ্বরোগ অস্ত্রোপচারের পরে পুনরায় ফিরে আসে।