দাঁতের কালচে দাগ দূর করার প্রাকৃতিক উপায়।
দাঁত আমাদের সৌন্দর্যের একটা অংশ। সুন্দর দাঁত মানেই সুন্দর হাসি। কিন্তু সেই দাঁতে যদি হলুদ দাগ থাকে তাহলে চেহারার সৌন্দর্যটাই ম্লান হয়ে যায়। নানা কারণে দাঁতে হলুদ দাগ দেখা দিতে পারে।
দাঁতের অযত্ন, তামাক সেবন, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, পান মশলা খাওয়া কিংবা অতিরিক্ত মাত্রায় চা বা কফি পান করার কারণে দাঁতের স্বাভাবিক শুভ্রতা চলে যেতে পারে।
যার ফলে অনেকেই লজ্জায় পড়েন প্রাণ খুলে কথা কিংবা হাসতে একটু শঙ্কা কাজ করে।
প্রতিদিন নিয়ম করে দাঁত ব্রাশ করার পরেও এহলেদে দাগ দূর করা যায় না। আসুন জেনে নিই দাঁত ঝকঝকে সাদা করার কিছু ঘরোয়া উপায়।
বেকিং সোডা:
দাঁতের দাগ দূর করতে বেকিং সোডা বেশ কার্যকরী। এক চা চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে একটি পাতিলেবুর অর্ধেকটার রস মেশান।
কিছুক্ষণ পরেই দেখবেন মিশ্রণটির আকার ঘন তরলের মতো হয়েছে। এবার এই তরল আঙুলে করে তুলে দাঁতের উপরে শুধু লাগিয়ে দিন, ঘষার প্রয়োজন নেই।
মিনিট তিনেক পরে কুলকুচি করে মুখ ধুয়ে ফেলুন, দাঁতের দাগ দূর হবে।
আপেল সিডার ভিনেগার:
দাঁতের দাগ দূর করতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার চেষ্টা করতে পারেন।
তারপর সতেজ শ্বাসের জন্য ও মাড়ির ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে কুলকুচা করতে পারেন।
লবণ ও বেকিং সোডা:
বেকিং সোডা বা সোডিয়াম বাইকার্বনেট দাঁত সাদাকারক হিসেবে বিবেচিত। এর সঙ্গে লবণ যোগ করে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ট্রুথ স্ক্রাব করতে পারেন, যা মুখে অ্যাসিড প্রশমিত করে এবং ব্যাকটেরিয়াও নির্মূল করে।
লেবুর খোসায় এক চিমটি লবণ দিয়ে তা দাঁতে ঘষুন, এতে দাঁতের দাগ দূর হয়ে যাবে। লেবুতে ভিটামিন “সি” রয়েছে এবং লবণ ময়লা পরিষ্কার করে।
হলুদের গুঁড়া:
দাঁত সাদাকারক হিসেবে হলুদ ব্যবহার করা যায়। হলুদ হচ্ছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে যার ফলে দাঁতের সমস্যা যেমন- মাড়ির রোগের চিকিৎসায় এটি কার্যকরী।
হলুদের সূক্ষ্ম গুঁড়া মৃদুভাবে দাঁতের দাগ দূর করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে দাঁতকে সাদা করে তুলে।
এক টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া আঙুল দিয়ে দাঁতে ঘষুন পরিষ্কার টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
পোড়া কাঠকয়লা:
আগে অনেকেই দাঁত পরিষ্কারের কাজে পোড়া কাঠকয়লা ব্যবহার করতেন। এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন আপনিও।
পোড়া কাঠকয়লা বা ঘুঁটের ছাই নিয়ে ভালো করে হাতে পিষে নিজের আঙ্গুলের সাহায্যে দাঁতে ঘষুন। দাঁত পরিষ্কার হবে।
অ্যালোভেরা এবং গ্লিসারিন:
এই টুথপেস্টটি তৈরি করতে আধা কাপ বেকিং সোডা, ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল, ৪ চামচ ভেজিটেবল গ্লিসারিন এবং ১ চামচ লেমন এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন।
এরপর এই মিশ্রণ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন।
গাজর:
দাঁতের দাগ দূর করতে সাহায্য করে গাজর। কারণ এতে উপস্থিত ফাইবার দাঁত পুরোপুরি পরিষ্কার করে দেয়।
এটি দাঁতের কোণার ময়লা দ্রুত দূর করতে সহায়তা করে। দাঁত পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত গাজর খাওয়ার অভ্যাস করুন।
তুলসী পাতা ও সরিষার তেল:
শুকনো তুলসী পাতা চূর্ণ করে পাউডারে বানিয়ে তাতে সরিষার তেলে মিশান। সতেজ তুলসী পাতাও ব্যবহার করতে পারেন।
সতেজ তুলসী পাতাকে পিষে পেস্ট বানান এবং টুথব্রাশের মাধ্যমে তা সরাসরি দাঁতে প্রয়োগ করুন।
বলা হয়ে থাকে যে, তুলসী পাতা মাড়িকে রক্ষা করে এবং সরিষা তেলের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আছে- যা মৌখিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
ঘরে তৈরিকৃত টুথপেস্ট:
দাঁত সাদাকারক টুথপেস্ট ঘরে নিজে নিজে তৈরি করতে পারেন। নারকেল তেলের সঙ্গে সোডার বাইকার্বনেট, অল্প পরিমাণে লেবুর রস এবং এক ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল এক সাথে মিশিয়ে তারপর ব্রাশ করুন।
এটি দাঁত পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রকৃতিগতভাবে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল হিসাবে কাজ করবে।
লবণ ও সরিষার তেল:
লবণের মধ্যে ২-৩ ফোঁটা সরিষার তেল মিশিয়েও দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন, এতে আপনার দাঁত ঝকঝক করবে।