ত্বক ফর্সা করার প্রাকৃতিক উপায়।

আমরা সকলেই আমাদের ত্বককে ফর্সা করে তুলতে চাই। নিজেকে যাতে অন্যের কাছে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সেজন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেন না সৌন্দর্য পিপাসু পুরুষ বা মহিলারা। নারী বা পুরুষ, একটি সুন্দর মুখের কদর কিন্তু সর্বত্রই। আর তাই নিজেকে সুন্দর দেখাতে কে না চায়।

সবারই আশা থাকে যে আমার ত্বক ফর্সা হবে। কিন্তু রোদে পুড়ে, শারীরিক অসুস্থতা, দীর্ঘসময় রান্নাঘরে কাজ করা, বাইরের ধুলাবালি ইত্যাদি নানান কারণে ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলছে। ত্বক হয়ে যাচ্ছে কালচে ও বিবর্ণ তাই তো দরকার পরে রং ফর্সাকারী ক্রিমের।

কিন্তু আসলে সত্যিই ফর্সাকারী ক্রিমে গায়ের রং ফর্সা হয়? সেটা কিন্তু আসলে হয়ে ওঠে না। সুতরাং ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে গিয়ে আমাদের ত্বক হয়ে উঠছে নিস্তেজ। তাই আমাদের এসব ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমে ভুলে গিয়ে প্রাকৃতিক উপায় গুলোর দিকে বেশি নজর দিতে হবে।

এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে যেগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। আজ তেমনি কিছু প্রাকৃতিক উপাদান সম্পর্কে লিখব-

বেসন, হলুদ ও লেবুর রস:

ত্বকের যত্নে বেসন খুবই উপকারী এবং লেবু ত্বককে পরিষ্কার করে। ৩ চামচ বেসন, ২ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ হলুদ গুঁড়া ও সামান্য গোলাপ জল নিয়ে খুব ভালো করে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। তারপর তা মুখে লাগান এবং শুকনো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে এবং এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকে কোনো দাগ হতে দেবে না।

দুধ, মধু, হলুদ ও লেবুর রস:

ত্বক ফর্সা করতে ও কোমল করতে দুধ খুবই কার্যকরী। আর দুধের সাথে যদি যোগ হয় লেবুর রস, মধু ও হলুদ তাহলে এই ফেস প্যাকটি হবে ত্বক ফর্সা করার সেরা ফেস প্যাক। ৩ চামচ দুধ, ২ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ মধু ও হলুদ গুঁড়া নিয়ে সব উপকরণ এক সাথে ভালো করে মেশান।

তারপর এই প্যাকটি মুখে লাগান। তারপর শুকিয়ে গেলে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মুখে সঙ্গে সঙ্গে একটা উজ্জ্বলতা দেখতে পাবেন।

পুদিনা পাতা:

পুদিনা পাতায় থাকা অ্যাসট্রিজেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। ১৫ থেকে ২০টি পুদিনা পাতা পেস্ট করে মুখে লাগান। তারপর পেস্টটি লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১০-১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে টান টান করবে।

চন্দন:

চন্দন আমাদের ত্বক ফর্সা করার সবথেকে কার্যকরী উপাদান। আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তবে চন্দনের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। আপনার ত্বকে যতটুকু পরিমানে লাগে ততটুকু নিবেন। আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই ফর্সা হবে।

এই প্যাক আপনার ত্বক শুধু উজ্জ্বলই করবে না আপনাকে দেখতেও অনেক ফ্রেশ লাগবে।

টমেটো ও মধু:

মুখে যদি রোদের থেকে হওয়া পোড়া দাগ থাকে বা মুখ অতিরিক্ত কালো হতে শুরু করে, তাহলে টমেটো ও মধুর প্যাক ব্যবহার করুন। টমেটো এই দাগ খুব ভালোভাবে হালকা করতে পারে। একটি টমেটো ও ৪ চামচ মধু দিয়ে ভালো করে মেশান। এই প্যাক মুখে মেখে রেখে দিন ২০ মিনিটের মতো। তারপর গরম পানিতে ধুয়ে নিন।

অ্যালোভেরার প্যাক:

অল্প করে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে মুখে লাগিয়ে কম করে ১৫-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। অ্যালোভেরা জেল ত্বককে ফর্সা করার পাশপাশি নানারকম স্কিন ডিজিজের প্রকোপ কমাতেও সাহায্য করে।

মধু, দইয়ের প্যাক:

পরিমাণ মতো দইয়ে অল্প করে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেই পেস্টটা কম করে ১৫ মিনিট মুখে মাসাজ করুন। তারপর মুখটা ধুয়ে নিন। মধু ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তোলে আর লেবুর রস এবং দইয়ে উপস্থিত ভিটামিন “সি” ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলবে।

ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে:

গোলাপজল ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনার যদি কিছুটা অসম ত্বক থাকে তবে এটি আপনার জন্য দুর্দান্ত কাজ করবে। গোলাপজল আপনার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে। এতে কিছু উপাদান রয়েছে যা ভিতর থেকে ত্বককে পরিষ্কার করে। ফলে স্কিন সুন্দর এবং তুলতুলে হয়ে ওঠে।

এক্ষেত্রে সমপরিমাণে গোলাপজল এবং কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রন রাতে শুতে যাওয়ার আগে মুখে লাগিয়ে ফেলুন। সারা রাত রেখে সকালে মুখটা ধুয়ে নিন।

লেবুর রস ও চিনি:

একটা লেবু থেকে রস বের করে তাতে ১ চামচ চিনি মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রনটি ততক্ষণ পর্যন্ত মুখে ঘষতে থাকুন, যতক্ষণ না চিনিটা ত্বকের সঙ্গে একেবারে মিশে যায়। যখন দেখবেন চিনিটা ত্বকের সঙ্গে একেবারে মিশে গেছে, তখন মুখটা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। ফর্সা ত্বক পেতে এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি দারুন কাজে আসে।

রেফারেন্স: