ত্বকের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাস।

আমাদের জীবনের প্রতিদিনের অভ্যাস ত্বকের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। দেখা যায় আমরা নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিচ্ছি তারপরও তেমন একটা উপকার হচ্ছে না।

তাহলে হয়ত আমাদের মধ্যে কিছু খারাপ অভ্যাস রয়েছে যে অভ্যাসগুলি এর জন্য দায়ি হতে পারে।

কিছু ভুল অভ্যাস যেগুলো ত্বকের বেশ ক্ষতি করে। তাই এসব বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। ত্বকের ক্ষতি করে এমন কয়েকটি অভ্যাস নিচে তুলে ধরা হলো –

মেকআপ না তুলে ঘুমিয়ে পড়া:

এটি আমাদের ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। ক্ষতিকর জানা স্বত্তেও আমরা অনেকেই মেকআপ ঠিক মতো তুলিনা। এতে ব্রণ হতে পারে। তাই এ কাজটি না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

অপরিষ্কার মেকআপ ব্রাশ ব্যবহার করা:

ঠিক মতো মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার না করলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। ময়লা ব্রাশ ব্যবহারে ব্রণ, র‍্যাশ ইত্যাদি হয়ে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। প্রতি তিন সপ্তাহে একবার, শ্যাম্পু দিয়ে মেকআপ ব্রাশ ধুয়ে ফেলুন শুকিয়ে নিন।

ঘন ঘন মুখ ধোয়া:

অনেকে ঘন ঘন মুখ ধুতে থাকেন। বার বার মুখ ধোয়া ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে। এতে ত্বক প্রাকৃতিক তেল হারায় ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে। দিনে দুই থেকে তিনবারের বেশি মুখ ধোয়ার দরকার নাই।

ধূমপান:

ধূমপান শুধু স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না, এটি ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর। ধূমপান আমাদের চেহারাতে অল্প বয়সেই বয়সের ছাপ এনে দেয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তাদের চেহারায় তাড়াতাড়ি বয়সের ছাপ পড়ে।

খুব বেশি মদ্য পান করা:

প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্য পান করা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অ্যালকোহল রক্তের প্রবাহে ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্টের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা সময়ের সাথে ত্বক নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

প্রচুর পরিমাণে চিনি খাওয়া:

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে চিনি বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। বলিরেখা বার্ধক্যের প্রধান লক্ষণ। আমাদের শরীরে চিনি এবং প্রোটিন বিক্রিয়া করে অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড প্রোডাক্টস (AGEs) তৈরি হয়। ধারণা করা হয় AGEs ত্বকের বয়েসের ছাপ বাড়ায়।

রিফাইন্ড কার্বহাইড্রেড ফুড, মিষ্টিজাতীয় খাবার ও পানীয় ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ ২,৩০০ কিশোর-কিশোরীদের এক সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যারা ঘন ঘন চিনি খাই তাদের ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি ৩০% বেশি থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে তাজা ফল এবং শাকসবজি ত্বকের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব:

কম ঘুম হলে কর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যেতে শুরু করে।

ফলে একদিকে যেমন মন-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে কোলাজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে যার কারণে সৌন্দর্যও নষ্ট হতে থাকে।

জাঙ্ক ফুড খাওয়া:

ফাস্টফুড খেলে ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ত্বকের সতেজতা কমে যাওয়া। চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে মুখ শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে পড়ে।

এছাড়া অন্যান্য ত্বকের সমস্যার মধ্যে ব্রণ, এলার্জি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড যেমন বার্গার, পিজ্জা, পটেটো চিপস খাওয়ার ফলে ব্রণ হতে পারে।

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করা:

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করলে শরীরের পিএইচ লেভেল ঠিক থাকে না। শরীরে পানিশূন্যতার কারণে ব্রণ হয়, ত্বকের দাগ কমে না, বয়সের ছাপ বৃদ্ধি পায়।

ত্বকের তাই যেকোন সমস্যা দূর করে ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় করে তুলতে চাইলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।